কোন দেশের করোনা বেশি বিপজ্জনক

করোনার নতুন ধরণ নিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছেন যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক (বাঁয়ে) ও দক্ষিণ আফ্রিকার স্বাস্থ্যমন্ত্রী জোয়েলিনি মেখিজে
ছবি: রয়টার্স

যুক্তরাজ্য, দক্ষিণ আফ্রিকাসহ বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশে করোনাভাইরাসের নতুন ধরন (স্ট্রেইন) শনাক্ত হয়েছে। চলমান মহামারির মধ্যে ভাইরাসের নতুন এই ধরন মোকাবিলায় বিশ্ব যখন ব্যতিব্যস্ত, তখন কোন দেশের করোনাভাইরাসের ধরন বেশি বিপজ্জনক— সেটা নিয়ে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দিয়েছেন যুক্তরাজ্য ও দক্ষিণ আফ্রিকার স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে শুরুতে যুক্তরাজ্যে নতুন ধরন শনাক্ত হওয়ার খবর আসে। পরে দক্ষিণ আফ্রিকাসহ আরও কয়েকটি দেশে এমন ধরন শনাক্ত হওয়ার কথা জানা যায়। নতুন ধরন শনাক্ত হওয়ার পর যুক্তরাজ্যের সঙ্গে অনেক দেশ বিমান চলাচল বন্ধ করে দেয়।

দক্ষিণ আফ্রিকায় নতুন ধরন শনাক্ত হওয়ার পর গত বুধবার ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাজ্য। একই সঙ্গে ব্রিটিশ স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক বলেন, দক্ষিণ আফ্রিকায় শনাক্ত হওয়ার করোনাভাইরাসের নতুন ধরনটি যুক্তরাজ্যে শনান্ত ভাইরাসটির চেয়ে বেশি বিপজ্জনক। মূলত ব্রিটিশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যে খেপেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার স্বাস্থ্যমন্ত্রী জোয়েলিনি মেখিজে।

ব্রিটিশ স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকার করোনার ধরনটি যুক্তরাজ্যের ধরনের চেয়ে বেশি উদ্বেগের। কারণ, এটি আরও বেশি সংক্রমণ ছড়াবে, ধরন পরিবর্তন করবে বলে মনে হয়।’ মূলত ব্রিটিশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর এ বক্তব্যেই খেপেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
গতকাল বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে দক্ষিণ আফ্রিকার স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, দক্ষিণ আফ্রিকায় করোনার নতুন ধরনটি যুক্তরাজ্যে ছড়ানো করোনার নতুন ধরনের চেয়ে বেশি সংক্রমণ ছড়াবে—যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রীর এই কথার কোনো প্রমাণ নেই। এমন প্রমাণও নেই যে এটা যুক্তরাজ্য কিংবা অন্যান্য দেশে শনাক্ত হওয়া ধরনের চেয়ে মারাত্মক রোগ সৃষ্টি করে কিংবা মৃত্যুর হার বাড়িয়ে তোলে।

মেখিজে বলেন, ‘যুক্তরাজ্যের মন্ত্রীর কথায় এমন ধারণা হয় যে সে দেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে মূল ভূমিকা রেখেছে দক্ষিণ আফ্রিকায় শনাক্ত হওয়া করোনার ধরনটি। এটা সত্য নয়।’

মেখিজে যুক্তরাজ্যের ভাইরাসের ধরনটির সঙ্গে তুলনা করে বলেন, ‘যুক্তরাজ্যের ভাইরাসটির মতোই দক্ষিণ আফ্রিকার ভাইরাসের রূপান্তর ঘটেছে। গত সেপ্টেম্বরে তা দক্ষিণ–পূর্ব অঞ্চলের কেন্ট কাউন্টিতে শনাক্ত হয়েছিল। দক্ষিণ আফ্রিকার ভাইরাসের ধরনটির খোঁজ পাওয়ার প্রায় এক মাস আগে সেখানে তা পাওয়া যায়।’ দক্ষিণ আফ্রিকার স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ভ্রমণে যুক্তরাজ্যের নিষেধাজ্ঞা জারি দুর্ভাগ্যজনক সিদ্ধান্ত।

আফ্রিকা মহাদেশের মধ্যে করোনাভাইরাসে সবচেয়ে বেশি ভুগছে দক্ষিণ আফ্রিকা। সেখানে করোনা শনাক্ত প্রায় ১০ লাখের কাছাকাছি। আর মারা গেছেন ২৬ হাজারের বেশি মানুষ।