কোভিডে বিধিনিষেধের প্রতিবাদে ইতালিতে বিক্ষোভ

বিক্ষোভের সময় ভাঙচুর করা হয় পোশাকের দোকানপাট। তুরিন, ইতালিছবি: রয়টার্স

কোভিড–১৯ মহামারির দ্বিতীয় ঢেউ সামাল দিতে ইতালি নতুন করে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। কিন্তু এর বিরোধিতা করে গতকাল সোমবার দেশটির কয়েকটি শহরে বিক্ষোভের ঘটনা ঘটেছে। খবর বিবিসির।

নতুন করে করোনার বিস্তারের লাগাম টেনে ধরতে সম্প্রতি ইউরোপের এই দেশের সরকার রেস্টুরেন্ট, বার, ব্যায়ামাগার ও সিনেমা হল স্থানীয় সময় বিকেল ছয়টায় বন্ধ করতে নির্দেশ দেওয়ার পরপরই এই বিশৃঙ্খল অবস্থার সৃষ্টি হয়। নতুন বিধিনিষেধের আওতায় মধ্যরাত পর্যন্ত গ্রাহকেরা খাবারের দোকান থেকে খাবার কিনে নিয়ে যেতে পারবেন। তবে ছয়টার পর দোকানে বসে খেতে পারবেন না। পাশাপাশি খেলোয়াড়দের একজনের সঙ্গে আরেকজনের স্পর্শ লাগতে পারে এমন খেলার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। নতুন এসব বিধিনিষেধ ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে।

তুরিনের রাস্তায় কোভিডের কারণে আরোপিত নতুন বিধিনিষেধের প্রতিবাদে বিক্ষোভ
ছবি: রয়টার্স

মিলানের রাজধানী লোম্বার্ডি, তুরিনের পাইডমন্টসহ বেশ কয়েকটি অঞ্চলে রাত্রীকালীন কারফিউ জারি করা হয়েছে। পুলিশ মিলান থেকে ২৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।

বিবিসির খবর অনুযায়ী গত সোমবার উত্তরাঞ্চলীয় শহর তুরিনে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গেলে সেখানে পুলিশের ওপর পেট্রলবোমা নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। তুরিনে একটি মূল সড়ক অবরোধ করেন ট্যাক্সিচালকেরা। আর নাপলস শহরে হাজারো মানুষ জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন। অন্যদিকে মিলানে বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করতে দাঙ্গা পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে। লোম্বার্ডি অঞ্চলের ক্রিমোনাতে রেস্টুরেন্টের মালিকেরা কড়াই ও অন্যান্য পাত্র পিটিয়ে প্রতিবাদ জানান। করোনার প্রথম ঢেউয়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল লোম্বার্ডি।

এসব শহরের পাশাপাশি রোম, জেনোয়া, পালেরমো, ট্রিইস্তে শহরসহ প্রায় ১২টি শহরে বিক্ষোভের ঘটনা ঘটে।
দেশটির ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা বলছেন, এখনো তাঁরা প্রথম দফা লকডাউনের কারণে যে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন, তা কাটিয়ে উঠতে পারছেন না। এর মধ্যে নতুন বিধিনিষেধ তাঁদের দেউলিয়া করে দেবে।

তুরিনের রাস্তায় বিক্ষোভ
ছবি: রয়টার্স

এদিকে বিধিনিষেধ আরোপের পরপরই তুরিনে গুচির মতো বিলাসবহুল কয়েকটি স্টোর থেকে লুটপাটের ঘটনা ঘটে। তুরিনে বিক্ষোভকারারী আগুন ধরিয়ে ও আতশ ফাটালে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে। মিলানে বিক্ষোভ থেকে স্বাধীনতা, স্বাধীনতা বলে স্লোগান দেওয়া হয়।

দেশটির সরকার নাগরিকদের খুব প্রয়োজন না হলে নিজ শহরের বাইরে না যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। এমনকি পারলে গণপরিবহনও এড়িয়ে চলতে বলছে।
দেশটির প্রধানমন্ত্রী জুসেপ্পে কন্তে গত রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘এই মাসে আমাদের একটি কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যেতে হবে। কিছু করার নেই। দাঁত চেপে বিধিনিষেধ মেনে নিতে হবে। ডিসেম্বরে আমরা আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পারব।’