জার্মানিতে আগামী বছরের মাঝামাঝি করোনার টিকা

করোনার টিকা নিয়ে কাজ করছেন গবেষকেরা
ছবি: রয়টার্স

জার্মান সরকার আশা করছে, আগামী বছরের শুরুর দিকে দেশটির মোট জনসংখ্যার কিছু অংশের জন্য একটি কোভিড-১৯ টিকা তারা হাতে পাবে। তিনটি প্রতিষ্ঠানকে সম্ভাব্য টিকা গবেষণা করার জন্য সরকার কর্তৃক ভর্তুকি দেওয়ার ঘোষণাও এসেছে।

জার্মানির স্বাস্থ্যমন্ত্রী জেন্স স্প্যান ও গবেষণামন্ত্রী আনজা কার্লিজেক গতকাল মঙ্গলবার বার্লিনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেছেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

জার্মানির স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও গবেষণামন্ত্রী আশা প্রকাশ করে বলেছেন, আগামী বছরে টিকা প্রস্তুত হয়ে যাবে। তিনটি প্রতিষ্ঠান সরকারি ভর্তুকি পাচ্ছে। তবে মন্ত্রীদ্বয় সতর্ক করেছেন, কোনো ঝুঁকিপূর্ণ সংক্ষিপ্ত পথ বেছে নেওয়া যাবে না। দেশটির অধিকাংশ মানুষের কাছে আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়ের আগে টিকা পৌঁছাবে না।

আমরা নিরাপদ ও কার্যকর টিকা চাই। এ জন্য সবার প্রথম হতে হবে—এমন কথা নেই
জেন্স স্প্যান, স্বাস্থ্যমন্ত্রী, জার্মানি

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জেন্স স্প্যান বলেন, ‘আমরা নিরাপদ ও কার্যকর টিকা চাই। এ জন্য সবার প্রথম হতে হবে—এমন কথা নেই।’

গবেষণামন্ত্রী আনজা কার্লিজেক বলেন, ‘এ মুহূর্তে আমাদের কাছে নিরাপত্তাই সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’

জার্মানির পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়, দেশটি টিকা গবেষণার জন্য যে ৮৯ কোটি মার্কিন ডলার বিশেষ গবেষণা তহবিল রেখেছে, তা মূলত বায়োএনটেক, কিউরভ্যাক ও আইডিটি বায়োলজিকা নামের তিনটি প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করা হবে। এর মধ্যে বায়োএনটেক পাবে সাড়ে ৩৭ কোটি মার্কিন ডলার, কিউরভ্যাক পাবে ২৫ কোটি ২০ লাখ ডলার। বাকি অর্থায়নের জন্য আইডিটির সঙ্গে আলোচনা চলছে।

আরও পড়ুন

বায়োএনটেকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইউগুর শাহিন এক বিবৃতিতে বলেছেন, কোভিড-১৯ টিকার উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং প্রসারণ ত্বরান্বিত করার জন্য এ ভর্তুকি একটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান।

বায়োএনটেক ও কিউরভ্যাক মেসেঞ্জার আরএনএ বা এমআরএনএ–ভিত্তিক টিকা তৈরিতে কাজ করছে। এ পদ্ধতিতে এমআরএনএ ব্যবহার করে মানুষের কোষে প্রয়োজনীয় প্রোটিন উৎপাদনের তথ্য পৌঁছে দেওয়া হয়, যাতে তা সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়তে পারে। এমআরএনএ টিকা দ্রুত তৈরি করা ও তা উৎপাদন করা যায়।

জার্মান জৈবপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান বায়োএনটেক নিউইয়র্কের ওষুধ উৎপাদনকারী ফাইজার ইনকরপোরেশনের সঙ্গে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে ভ্যাকসিন তৈরিতে কাজ করছে। প্রতিষ্ঠান দুটি এ বছরের শেষ নাগাদ প্রতীক্ষিত ভ্যাকসিন বিস্তৃত আকারে সরবরাহের জন্য নিয়ন্ত্রকদের অনুমোদন পাওয়ার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী।

ওয়ালস্ট্রিট জার্নালকে এমনটাই বলেছেন বায়োএনটেকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইউগুর শাহিন। ওয়ালস্ট্রিট জার্নালও এখন বলছে, এ বছরের মধ্যেই ভ্যাকসিন বাজারে আনার ব্যাপারে বিজ্ঞানীরা যে লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিলেন, তা অর্জনযোগ্য বলে মনে হচ্ছে।