দম্পতির বিরুদ্ধে করোনা প্রণোদনা জালিয়াতির অভিযোগ

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকারের জারি করা লকডাউনে প্রায় জনমানবশূন্য সড়ক। গত ৫ ফেব্রুয়ারি জার্মানির বার্লিন শহরের একটি সড়কে
ফাইল ছবি: রয়টার্স

জার্মানির রাজধানী বার্লিনে এক দম্পতির বিরুদ্ধে করোনা প্রণোদনা পেতে জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। সরকারি কৌঁসুলি জানিয়েছেন, আবুল বারা নামের ওই ব্যক্তি ও তাঁর স্ত্রী মিথ্যা তথ্য দিয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে করোনার প্রণোদনা গ্রহণ করেছেন। এর মাধ্যমে তাঁরা রাষ্ট্রীয় তহবিলের ক্ষতি করেছেন।

আবুল বারা নামের ওই ব্যক্তি বার্লিন শহরের ভেডিং এলাকায় অবস্থিত আশ-সাহাবা মসজিদের ইমাম। ৪৭ বছর বয়সী এই ব্যক্তি ফিলিস্তিনের নাগরিক। তাঁর স্ত্রী জার্মানির নাগরিক। বার্লিনের সরকারি কৌঁসুলির কার্যালয় এই ‍দুজন এবং লেবাননের এক নাগরিকের বিরুদ্ধে টিয়ারগার্টেন আদালতে প্রতারণার অভিযোগ এনেছে।

সরকারি কৌঁসুলির বরাত দিয়ে বার্লিনের ‘ডের টাগেসস্পিগেল’ পত্রিকা জানিয়েছে, গত বছরের এপ্রিলে করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে জার্মান সরকার কঠোর লকডাউন দেয়। এতে বন্ধ হয়ে যায় দোকানপাট, ছোট-বড় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। এরপর লকডাউনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের জন্য প্রণোদনার ঘোষণা দেয় জার্মান সরকার। স্বল্প সময়ের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে প্রণোদনা দিতে সে সময় অনলাইনে আবেদন করার আহ্বান জানায় কর্তৃপক্ষ।

সরকারি কৌঁসুলির কার্যালয় জানিয়েছে, জরুরি ভিত্তিতে প্রণোদনা দেওয়ার ওই ঘোষণার পর আবুল বারা মসজিদসংলগ্ন তাঁর মুদি দোকানের জন্য প্রণোদনা পেতে আবেদন করেন। অথচ দোকানটি ২০১৯ সাল থেকেই বন্ধ। ওই দোকানের জন্য আবুল বারা মিথ্যা তথ্য দাখিল করে গত বছরের এপ্রিলেই ৯ হাজার ইউরো, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ৯ লাখ টাকা গ্রহণ করেন। তবে আবুল বারা প্রণোদনা জালিয়াতির অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। পাঁচ সন্তানের জনক আবুল বারার সংসার জার্মান সরকারের সামাজিক সাহায্য ভাতার ওপর নির্ভরশীল।

অন্য একটি অভিযোগে বার্লিনের সরকারি কৌঁসুলি আরও জানিয়েছেন, আবুল বারার জার্মান স্ত্রী সেরপিন তাঁর অনলাইন ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেখিয়ে আরও ৯ হাজার ইউরো গ্রহণ করেছেন। সেরপিন ২০১৬ সাল থেকে ওই অনলাইন ব্যবসা করছিলেন। তদন্তে দেখা গেছে, করোনার সময়ও ব্যবসাটি ভালো চলেছে এবং সে সময় সেরপিন তাঁর ব্যবসা থেকে ২৫ হাজার ইউরো আয় করেছেন। অভিযোগের জবাবে আবুল বারার স্ত্রী সেরপিন দাবি করেছেন, অনলাইন শপটি তাঁর মায়ের। তবে তদন্তকারীরা অনুসন্ধান করে জানতে পেরেছেন, সেরপিনের মা একজন নিরক্ষর বৃদ্ধা এবং ইন্টারনেটে কোনো রকম ব্যবসা চালাতে সক্ষম নন।

বার্লিনের সরকারি কৌঁসুলির কার্যালয় জানিয়েছে, আবুল বারা ও তাঁর স্ত্রী সেরপিনের বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য দিয়ে ১৮ হাজার ইউরো করোনা প্রণোদনা নেওয়ার অভিযোগে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হবে।