জার্মানিতে বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪২

বন্যায় উদ্ধার কাজ করছেন স্থানীয় উদ্ধারকারী দল।
ছবি: এএফপি

জার্মানির পশ্চিমাঞ্চলে ভারী বর্ষণের ফলে সৃষ্ট বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪২ জনে দাঁড়িয়েছে। এ ঘটনায় নিখোঁজ রয়েছেন আরও অনেকে। বন্যায় ধসে পড়েছে বেশ কয়েকটি বাড়ি। স্থানীয় সময় গতকাল বুধবার রাতে জার্মানির একাধিক প্রদেশের বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টি ও বন্যার ঘটনা ঘটে। খবর রয়টার্স ও আল-জাজিরার।

নর্থ রাইন ওয়েস্টপেলিয়া ও রাইনল্যান্ড-পালাটিনেট প্রদেশে বন্যায় ১৮ জনের মৃত্যুর পাশাপাশি বহু মানুষ নিখোঁজ হয়েছে। নদীর পানি তীর উপচে লোকালয়ে প্রবেশের পর বাড়িঘরের ভেতর আটকা পড়ায় অনেকেই ছাদে আশ্রয় নিয়েছে। রাইনল্যান্ড-পালাটিনেট প্রদেশ ৫০ থেকে ৭০ জন নিখোঁজ রয়েছেন।

স্থানীয় পুলিশের এক মুখপাত্র জানান, অনেক মানুষ অবস্থান নিয়েছে বাড়ির ছাদে। তবে সেখানে মোট কতজন অবস্থান করছে, তা এখনো পরিষ্কার নয়। অনেক এলাকায় ফায়ার সার্ভিস ও উদ্ধারকারী দলের সদস্যদের পাঠানো হয়েছে। উদ্ধারকাজ এখনো চলছে, শেষ হলে প্রকৃত অবস্থা জানা যাবে।

এদিকে বন্যার কারণে রাইন নদীতে নৌ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বাধা পড়েছে স্থানীয় রেল, সড়ক ও নৌ যোগাযোগব্যবস্থায়। ভারী বৃষ্টির কারণে অনেক এলাকায় প্রবেশ করা যাচ্ছে না। জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে প্রদেশের ভুলকানাইফেল জেলায়।

গতকাল ডাউন শহরের জেলা প্রশাসক জুলিয়া গিয়েজেকিং জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘পরিস্থিতি খুবই খারাপ। অনেক রাস্তা বন্যার পানিতে ঢাকা পড়েছে। গ্রামগুলোতে প্রবেশ করা যাচ্ছে না।’

স্থানীয় সময় আজ বৃহস্পতিবার সকালে জার্মান আবহাওয়া বিভাগের এক পূর্বাভাসে বলা হয়, আজ সারা দিন দক্ষিণ-পশ্চিম জার্মানিতে ভারী ঝড়বৃষ্টির আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ অঞ্চলের এলাকাগুলোতে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত টানা বৃষ্টি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এর আগে ২০০২ সালে জার্মানিতে বন্যায় ২১ জন নিহত হয়েছিলেন। সে সময় মধ্য ইউরোপে বন্যায় প্রাণহানি হয়েছিল শতাধিক মানুষের।

চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ‘এমন বিপর্যয়ে আমি হতবাক। বন্যায় অনেক মানুষ বিপাকে পড়েছেন। নিহত ও নিখোঁজ পরিবারের সদস্যদের প্রতি আমার সমবেদনা রইল।’

এদিকে ইউরোপের বেলজিয়াম ও নেদারল্যান্ডসেও আবহাওয়ার একই অবস্থা বিরাজ করছে। এই দুই দেশেও ভারী বর্ষণে বন্যা সৃষ্টি হয়েছে। বেলজিয়ামে প্রায় এক হাজার বাড়ির বাসিন্দাদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।