জার্মানিতে বন্যায় মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ১৪১

জার্মানিতে বন্যায় ডুবে গেছে রেললাইনসহ ও অনেক গাড়ি
ছবি : এএফপি

জার্মানির পশ্চিমাঞ্চলে ধ্বংসাত্মক বন্যার পর কয়েকটি জায়গার পানি ধীরে ধীরে কমছে। তবে মৃত্যুর সংখ্যা এখনো বাড়ছে। পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে উপদ্রুত অঞ্চলে ভয়ংকর রকমের ক্ষয়ক্ষতি আরও দৃষ্টিগোচর হচ্ছে। বন্যাজনিত বিপর্যয় শেষ হতে আরও দীর্ঘ সময় লাগবে বলে জানানো হয়েছে। জার্মানি সরকারের তথ্য অনুযায়ী, এই পর্যন্ত ১৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই সংখ্যা আরও বাড়বে বলে জানানো হয়েছে।

জার্মানির দুর্গত রাজ্য দুটিতে মৃত মানুষদের স্মরণে সব সরকারি স্থাপনায় জার্মানির জাতীয় পতাকা আজ রোববার পর্যন্ত অর্ধনমিত রাখা হবে।

জার্মানির তিন প্রতিবেশী দেশ নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম ও সুইজারল্যান্ডেও ভারী বৃষ্টিপাতের পরে নদীগুলোর পানির স্তর ব্যাপক আকারে বেড়েছে। নেদারল্যান্ডসে বন্যার কারণে মাস্ট্রিচট শহরের কাছে একটি বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। দক্ষিণ বেলজিয়ামে ঝড় ও বন্যায় কমপক্ষে ২৪ জন মারা গেছে।

জার্মানির দুর্যোগ প্রতিরোধ ও সমন্বয়সংক্রান্ত মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নর্থ রাইন ভেস্টফ্যালিয়া রাজ্যের ২৩টি জেলা বন্যায় দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রাইনল্যান্ড-ফ্যালৎস রাজ্যের শুল্ড ও অহরওয়েলার জেলাটি বিপর্যয়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখানকার ৭০০ বাসিন্দা এখন অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্রে রয়েছে। এই এলাকার আইফেল ও ট্রিয়ার-সারবর্গ জেলায়ও যথেষ্ট ক্ষতি হয়েছে। গতকাল সকালে হেইনসবার্গ জেলার রুর বাঁধ ভেঙে গেলে ওই এলাকার একটি গ্রাম থেকে ৭০০ বাসিন্দাকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়।

যুক্তরাষ্ট্র সফররত জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল জার্মানিতে ফিরেই উপদ্রুত অঞ্চলে সাহায্য ও সহযোগিতার জন্য দুই রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন বলে চ্যান্সেলরের মুখপাত্র স্টেফান সিবার্ট জানিয়েছেন। গতকাল জার্মানির রাষ্ট্রপতি ফ্রাঙ্ক ভাল্টার স্টাইনমায়ার উপদ্রুত এলাকাগুলো দেখতে যাওয়ার কথা ছিল।

বন্যাজনিত কারণে শুক্রবার কোলোন শহরের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ইরফট্যাডট-ব্লেসেমে বিশাল এলাকাজুড়ে বড় ধরনের ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে। ভূমিধসে সেখানে বড় এলাকাজুড়ে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ভূমিধসে কয়েকটি বাড়ি ও একটি ঐতিহাসিক দুর্গের কিছু অংশ ধসে পড়েছে। উদ্ধারকর্মীরা নৌকায় করে ওই এলাকা থেকে ৫০ জনকে উদ্ধার করছেন।

জার্মানির পশ্চিমাঞ্চলে উপদ্রুত এলাকাগুলোতে গত শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রায় এক লাখ মানুষ বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় রয়েছে। বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বলেছে, বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করতে আরও সময় লাগবে। এ ছাড়া কিছু কিছু এলাকায় পানি ও গ্যাস সরবরাহে বিপত্তি দেখা দিয়েছে।

জার্মানির বিভিন্ন রাজ্য থেকে উপদ্রুত দুই রাজ্যে সহযোগিতার জন্য উদ্ধারকর্মীরা পৌঁছেছেন। শুধু নর্থ রাইন ভেস্টফ্যালিয়া রাজ্যের উপদ্রুত অঞ্চলে ১৯ হাজার উদ্ধারকর্মী কাজ করছেন। জার্মানি সেনাবাহিনীর এক হাজার সেনা এই দুর্যোগ মোকাবিলায় সহায়তা করছেন।