জার্মানিতে মাস্ক কিনতে দুই এমপির কমিশন, রাজনীতিতে তোলপাড়

প্রতীকী ছবি

জার্মানির ক্ষমতাসীন জোট সরকারের শরিক দলগুলোর দুজন সাংসদ করোনার মাস্ক ক্রয়ে কমিশন নিয়েছেন। এ ঘটনায় দেশটির রাজনীতিতে সমালোচনার ঝড় বইছে।

তিনটি দলের সমন্বয়ে গঠিত জার্মানির ক্ষমতাসীন জোটের ক্রিশ্চিয়ান গণতান্ত্রিক দল ও ক্রিশ্চিয়ান গণতান্ত্রিক ইউনিয়ন দলের দুই সাংসদের বিরুদ্ধে মাস্ক কেনায় ওই কমিশন নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সরকারের অপর শরিক সামাজিক গণতান্ত্রিক দল। কমিশন নেওয়ার ঘটনায় দুই সাংসদের পদত্যাগ দাবি করেছেন তাঁদের নিজেদের দল ও অন্যান্য দলের নেতারা।

জার্মানির পার্লামেন্ট বা বুন্ডেশটাগের অভিযুক্ত দুই সাংসদ হলেন ব্যাভেরিয়া রাজ্যের ক্রিশ্চিয়ান গণতান্ত্রিক ইউনিয়ন দলের গিহর্গ নুসলাইন ও বাডেন ভুটেনবার্গ রাজ্যের ক্রিশ্চিয়ান গণতান্ত্রিক ইউনিয়ন দলের নিকোলাস লইবেল। মাস্ক কেনায় কমিশন গ্রহণের বিষয়ে জার্মানির সরকারি কৌঁসুলিদের পক্ষ থেকে ওই অভিযোগ ওঠে। পরে পার্লামেন্ট উভয় সাংসদের সংসদীয় সুরক্ষা স্থগিত করে।

গত বছর করোনা মহামারির শুরুর দিকে জার্মানিতে করোনাপ্রতিরোধী মাস্ক ও পরবর্তী সময়ে এফএফপি–টু মাস্কের সংকট দেখা দিলে এই দুই সাংসদ স্বপ্রণোদিত হয়ে মাস্ক ক্রয়–বাণিজ্যে যুক্ত হন। গিহর্গ নুসলাইন ও নিকোলাস লইবেলের সংসদীয় সুরক্ষা স্থগিত হওয়ার পর পুলিশ ব্যাভেরিয়া রাজ্যের মিউনিখে গিহর্গ নুসলাইনের দপ্তরসহ একাধিক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে তল্লাশি চালিয়েছে।

জার্মানির ডের স্পিগেল পত্রিকাটি মিউনিখের সরকারি কৌঁসুলির বরাত দিয়ে জানিয়েছে, সাংসদ গিহর্গ নুসলাইন ২০২০ সালে ব্যাভেরিয়া রাজ্যের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে করোনাপ্রতিরোধী মাস্ক সরবরাহে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করতে সহায়তা করেন। এই সহায়তার বিনিময়ে তিনি ৬ লাখ ৬০ হাজার ইউরো বা ৬ কোটি ৬০ লাখ টাকা ঘুষ গ্রহণ করেন।

অপর সাংসদ নিকোলাস লইবেল তাঁর প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এফএফপি–টু মাস্ক সংগ্রহ করেন। দুই মাস আগে জার্মানিতে এই বিশেষ ধরনের মাস্ক পরিধান বাধ্যতামূলক বলে ঘোষণা করা হয়। এই মাস্ক সংগ্রহ ও সরবরাহে লইবেলের প্রতিষ্ঠান ২ লাখ ৫০ হাজার ইউরো বা ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা কমিশন গ্রহণ করে।

গত বছর করোনা মহামারির শুরুর দিকে জার্মানিতে করোনাপ্রতিরোধী মাস্ক ও পরবর্তী সময়ে এফএফপি–টু মাস্কের সংকট দেখা দিলে এই দুই সাংসদ স্বপ্রণোদিত হয়ে মাস্ক ক্রয়–বাণিজ্যে যুক্ত হন। গিহর্গ নুসলাইন ও নিকোলাস লইবেলের সংসদীয় সুরক্ষা স্থগিত হওয়ার পর পুলিশ ব্যাভেরিয়া রাজ্যের মিউনিখে গিহর্গ নুসলাইনের দপ্তরসহ একাধিক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে তল্লাশি চালিয়েছে।

অভিযুক্ত হওয়ার পর পার্লামেন্টারি কমিটির সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন এ দুই সাংসদ। আগামী সেপ্টেম্বর চলতি পার্লামেন্টের মেয়াদ পর্যন্ত তাঁরা সাংসদ হিসেবে থাকলেও আগামী অক্টোবর মাসে অনুষ্ঠিতব্য ২০তম নতুন পার্লামেন্টের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন না বলে ঘোষণা দিয়েছেন তাঁরা। তবে প্রভাব খাটিয়ে কমিশন–বাণিজ্যে যুক্ত হওয়ায় তাঁদের কী ধরনের শাস্তি হবে, তা পরে জানা যাবে।

ওদিকে চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল ক্রিশ্চিয়ান গণতান্ত্রিক ইউনিয়ন দলটির সাধারণ সম্পাদক পাউল জিমায়েকে বলেছেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে বড় এই সংকটকালে মাস্কের বিনিময়ে সংসদ সদস্যদের কমিশন গ্রহণের ঘটনা অত্যন্ত লজ্জাজনক।