জার্মানিতে লকডাউনের মেয়াদ বাড়ল

জার্মানিতে টিকা নিতে টিকাদান কেন্দ্রগুলোতে ভিড় বাড়ছে
ছবি: এএফপি

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও মৃত্যুহার বাড়তে থাকায় জার্মানিতে চলমান লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। সংক্রমণ কমাতে গত ১৬ ডিসেম্বর থেকে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত কঠোর লকডাউন জারি করেছিল জার্মানি। কিন্তু গত তিন সপ্তাহ সংক্রমণ না কমায় লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানোর নতুন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, লকডাউনের মেয়াদ বাড়ছে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত।

এ নিয়ে আজ মঙ্গলবার জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা ম্যার্কেল ১৬ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে অনলাইন বৈঠক করেছেন। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, লকডাউনে আরও কঠোর বিধি জারি করা হবে।

এডিটোরিয়াল নেটওয়ার্ক জার্মানি (আরএনডি) জানিয়েছে, বর্তমানে জার্মানিতে যে লকডাউন চলছে, তাতে সংক্রমণ কমার ক্ষেত্রে তেমন প্রভাব পড়ছে না। বড়দিনের আগে জার্মানিতে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ৫ হাজার ৭৪৪ জন করোনা রোগী ছিল। এখন রোগী সংখ্যা আরও ৫০০ জন বেড়েছে। দেশটিতে করোনায় মৃত্যুহারও বেড়েছে।

জার্মানির বিশেষজ্ঞরা কঠোর লকডাউনের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে বলেছেন, চলমান লকডাউন আরও কঠোর ও দীর্ঘ সময়ের জন্য জারি না করা হলে পরিস্থিতি আয়ত্তের বাইরে চলে যেতে পারে।

ওয়ার্ল্ড মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান ফ্রাঙ্ক উলরিখ মন্টগোমেরি ‘রাইনিশ পোস্ট’ পত্রিকাকে বলেছেন, ‘জানুয়ারি মাসের শেষ পর্যন্ত লকডাউন জারি করেও সংক্রমণ রোধ করা যাবে কি না, তা বলার সময় এখনো আসেনি।’

জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল
ছবি: রয়টার্স

বার্লিনের মেডিকেল অফিসার প্যাট্রিক লার্সচেড জার্মান প্রেস এজেন্সিকে বলেছেন, ‘আমাদের মধ্যে এখনো অনেকেই করোনা সংক্রমিত ব্যক্তি রয়েছে। লকডাউন বসন্তকাল পর্যন্ত জারি রাখার মতো ঘটনা ঘটতে পারে।’

জার্মানিতে নতুন লকডাউন বিধি অনুযায়ী, খাদ্যপণ্যের সুপারমার্কেট, বই ও ওষুধের দোকান, চিকিৎসকদের চেম্বার ছাড়া সবকিছু বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। জরুরি কাজ ছাড়া জনগণকে ঘরে থাকতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। যেসব অঞ্চলে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি, সেখানে রাত ১২টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয়েছে।

নতুন বিধি বিষয়ে জার্মানির ডর স্পিগেল পত্রিকা বলছে, যেসব জেলায় প্রতি ১ লাখে গড়ে ২০০ জন সংক্রমিত হয়েছেন, সেখানে নিজ এলাকার ১৫ বর্গ কিলোমিটারের বাইরে ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

জার্মানির চ্যান্সেলর ও ১৬ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা লকডাউনের সব বিধি মানতে জনগণকে আহ্বান জানান। এ ছাড়া জরুরি প্রয়োজন ছাড়া পরস্পরের সঙ্গে সাক্ষাৎ না করারও অনুরোধ করেছেন।

সোমবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় জার্মানিতে ১৩ হাজার ৭৫৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ সময় মারা গেছেন ৩৫৬ জন। এ নিয়ে দেশটিতে করোনায় সংক্রমিত হয়ে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৫ হাজার ৫১৮।