অক্সফোর্ডের গবেষকেরা বলেছেন, অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দেওয়ার পর ফাইজারের টিকা দিলে তা ফাইজারের দুটি ডোজের মতোই সক্ষমতা দেখায়। কোভিডের টিকার প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ পৃথক হলেও তা শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধক্ষমতা দেখাতে পারে।
সাম্প্রতিক এক গবেষণায় তা দেখা গেছে। এ গবেষণা বিশ্বজুড়ে টিকাদান কর্মসূচি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে সহায়তা করবে। দ্য গার্ডিয়ান-এর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা বিভিন্ন ধরনের টিকার মিশ্র ও মিলকরণ পদ্ধতির প্রভাব পর্যালোচনা করেন। তাঁরা বিভিন্ন ব্যক্তির ওপর একই ধরনের টিকা, যেমন অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা বা ফাইজার-বায়োএনটেকের মিশ্র টিকা প্রয়োগ করে পর্যালোচনা করেন।
তাঁরা টিকা গ্রহণ করা ব্যক্তিদের শরীরের অ্যান্টিবডি তৈরির মাত্রার পার্থক্য দেখতে পান। গবেষণায় দেখা গেছে, দুই ডোজের ফাইজারের টিকা সবচেয়ে বেশি অ্যান্টিবডি তৈরি করে। অক্সফোর্ডের এক ডোজ টিকার পর ফাইজারের বুস্টার ডোজে প্রায় সমান অ্যান্টিবডি তৈরি করে। তবে অন্যান্য মিশ্র ডোজ ততটা কার্যকর হয়নি।
অক্সফোর্ডের গবেষকদের এই গবেষণার নাম ‘কম-কভ’। এ গবেষণা মূলত সরবরাহ-স্বল্পতার কারণে মিশ্র টিকার কার্যকারিতা দেখতে করা হয়।
যাঁরা আগে ফাইজারের টিকা নিয়েছেন কিন্তু পরে অক্সফোর্ডের বুস্টার ডোজ পেয়েছেন, তাঁদের অ্যান্টিবডি দুই ডোজ ফাইজারের টিকার অ্যান্টিবডির চেয়ে সাত গুণ কম দেখা গেছে। তবে ফাইজারের টিকার পর অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকায় যে অ্যান্টিবডি পাওয়া গেছে, তা দুই ডোজ অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার চেয়ে পাঁচ গুণ বেশি।
অক্সফোর্ডের পেডিয়াট্রিকস এবং ভ্যাকসিনোলজির সহযোগী অধ্যাপক ম্যাথু স্নেপ বলেন, ‘অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার বুস্টার ডোজের চেয়ে যদি ফাইজারের আরএনএ টিকার বুস্টার ডোজ নেওয়া যায়, তবে বাড়তি প্রতিরোধী সক্ষমতা পাওয়া যাবে।’
স্নেপ আরও বলেন, যুক্তরাজ্যের সরকার আগামী শরতে বুস্টার হিসেবে ভিন্ন টিকার ডোজ দেওয়া যায় কি না, তা বিবেচনা করছে। এ ক্ষেত্রে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার সঙ্গে ফাইজারের বুস্টার কার্যকর কৌশল হতে পারে। আমরা গবেষণায় দেখেছি, আরএনএ টিকায় গেলে অ্যান্টিবডির বিবেচনায় কিছু সুবিধা পাওয়া যাবে।
অক্সফোর্ডের গবেষকদের এই গবেষণার নাম ‘কম-কভ’। এ গবেষণা মূলত সরবরাহ-স্বল্পতার কারণে মিশ্র টিকার কার্যকারিতা দেখতে করা হয়।
গবেষণাসংক্রান্ত নিবন্ধটি ল্যানসেট সাময়িকীতে প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছে।
গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, ফাইজার ও অক্সফোর্ডের মিশ্র টিকা অক্সফোর্ডের দুই ডোজ টিকার তুলনায় শক্তিশালী সুরক্ষা দিতে পারে।
গবেষকেরা বলেন, তাঁরা ৪৬৩ ব্যক্তিকে ভিন্ন ধরনের টিকার ডোজ চার সপ্তাহ পর দেন। এর এক মাস পর তাঁদের প্রতিরোধী সক্ষমতা পরীক্ষা করেন। এ গবেষণার আরও বিস্তারিত তথ্য আগামী মাসে প্রকাশ করা হতে পারে। ওই সময় ১২ সপ্তাহ পর টিকার ডোজ দেওয়ার পর অ্যান্টিবডি পরীক্ষা করার ফল জানা যাবে। যুক্তরাজ্যে অধিকাংশ টিকার ডোজ ৮ থেকে ১২ সপ্তাহ ব্যবধানে দেওয়া হয়েছে।