তিমি–ডলফিন বিলুপ্তির শঙ্কায় বিজ্ঞানীরা

অস্ট্রেলিয়ায় তাসমানিয়ার উপকূলে আটকে পড়া তিমি উদ্ধার এক নারী।
রয়টার্সের ফাইল ছবি

বিলুপ্তির হাত থেকে তিমি, ডলফিন ও পোরপোসকে (ডলফিন সদৃশ সামুদ্রিক প্রাণী) রক্ষায় বৈশ্বিক পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিশ্বের সাড়ে তিন শতাধিক বিজ্ঞানী। ৪০টি দেশের এসব বিজ্ঞানী শনিবার এক চিঠি লিখে এই আহ্বান জানান।

যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো, দক্ষিণ আফ্রিকা, ব্রাজিলসহ বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীরা চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন। চিঠিতে বিজ্ঞানীরা বলেছেন, ‘প্রাণিজগতের অর্ধেকের বেশি প্রজাতি সংরক্ষণের ক্ষেত্রে উদ্বেগের সঙ্গে বিলুপ্তির শঙ্কা দেখা দিয়েছে। সমুদ্রে অতিরিক্ত দূষণ ও সমুদ্রসম্পদ অতিরিক্ত শোষণের কারণে আমাদের জীবদ্দশাতেই অনেক প্রাণীর বিলুপ্তি ঘোষণা করতে হবে। এমনকি বড় তিমিগুলোও নিরাপদে নেই।’

ওই চিঠিতে স্বাক্ষরের বিষয়টি সমন্বয় করেছেন যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব ব্রিস্টলের ভিজিটিং রিসার্চ ফেলো ও হিউম্যান সোসাইটি ইন্টারন্যাশনালের জ্যেষ্ঠ সামুদ্রিক বিজ্ঞানী মার্ক সিমন্ডস। তিনি বিবিসিকে বলেন, তিমিরা খুবই বিপদে রয়েছে। এদের বাঁচাতে হলে পরিবেশ নিয়ন্ত্রণকারী ব্যক্তি, বিজ্ঞানী, রাজনীতিক ও জনগণকে শক্তিশালী পদক্ষেপ নিতে হবে।

বিলুপ্তির হাত থেকে তিমি, ডলফিন ও পোরপোসকে (ডলফিন সদৃশ সামুদ্রিক প্রাণী) রক্ষায় বৈশ্বিক পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিশ্বের সাড়ে তিন শতাধিক বিজ্ঞানী। ৪০টি দেশের এসব বিজ্ঞানী শনিবার এক চিঠি লিখে এই আহ্বান জানান।

উনিশ শতকের সত্তর ও আশির দশকে ‘তিমি রক্ষা করো’ নামের আন্দোলন খুবই জনপ্রিয় হয়েছিল। এই আন্দোলন বাণিজ্যিকভাবে তিমি শিকার অবসানে ভূমিকা রাখে। বিশ্বের অনেকাংশে কমে আসা তিমিকে সংঘবদ্ধ শিকার থেকে রক্ষা করার সুযোগ যখন তৈরি হয়েছে, তখনই মানুষের তৈরি নানা হুমকির মুখে পড়েছে প্রাণীটি। এসব হুমকির মধ্যে রয়েছে প্লাস্টিক দূষণ, আশ্রয়স্থল বিনাশ, শিকার, জলবায়ু পরিবর্তন, জাহাজের সঙ্গে সংঘর্ষ ইত্যাদি। এখন পর্যন্ত সামুদ্রিক প্রাণীদের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকির কারণ হচ্ছে মাছ ধরার যন্ত্রপাতি ও জাল। অসতর্কতার কারণে অসংখ্য সামুদ্রিক প্রাণী এসব জাল ও যন্ত্রে ধরা পড়ছে। এই কারণে এক বছরে তিন লাখ তিমি, ডলফিন ও পোরপোসের মৃত্যু হয়েছে।

একই সঙ্গে বিজ্ঞানীরা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, ‘একটি বিশাল সংখ্যার সামুদ্রিক প্রাণী হারিয়ে ফেলার খুব কাছাকাছি চলে গেছি আমরা। আমরা এখনই যদি পদক্ষেপ না নিই, তাহলে আগামী প্রজন্ম আমাদের এই কাজকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করবে।’

বিজ্ঞানীরা নর্থ আটলান্টিক রাইট হোয়াইল প্রজাতির তিমি ও ভ্যাকুইটা প্রজাতির পোরপোস বিলুপ্তির বিষয়ে সবচেয়ে বড় আশঙ্কার কথা বলেছেন। এই প্রজাতির মাত্র কয়েক শ তিমি বিশ্বে অবশিষ্ট রয়েছে। এই দুটি সামুদ্রিক প্রজাতি বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিজ্ঞানীরা।