নুনাভাটে করোনা নেই

কানাডার অনেক অঞ্চলে কোভিড-১৯ সংক্রমণের সংখ্যা বাড়ছে। কিন্তু দেশটির উত্তরাঞ্চলের নুনাভাটে করোনা নেই
ছবি: এএফপি

কানাডার অনেক অঞ্চলে করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণের সংখ্যা বাড়ছে। কিন্তু দেশটির উত্তরাঞ্চলের নুনাভাটে করোনা নেই। উত্তর আমেরিকার এই অঞ্চলটিকেই এখনো পর্যন্ত করোনামুক্ত বলে অভিহিত করা যাচ্ছে।

বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, গত মার্চে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নতুন করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। তখন নানা দেশে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। নুনাভাটেও একই পদক্ষেপ নিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। ন্যূনতম ঝুঁকিও নেওয়া হয়নি। কানাডার অন্যান্য অঞ্চলে যে ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল, সেগুলোর চেয়েও কঠোর ছিল নুনাভাটের নিয়মনকানুন। অধিবাসীদের ক্ষেত্রে যে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল, তাতে ছিল বেশ কড়াকড়ি। এ ছাড়া যারা অধিবাসী নন, তাদের নুনাভাটে ঢোকা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।

অবশ্য নুনাভাটের কিছু অধিবাসী কানাডার দক্ষিণাঞ্চল থেকে নিজেদের অঞ্চলে ফিরেছিলেন। তবে সে ক্ষেত্রে প্রথমেই তাদের দুই সপ্তাহ আইসোলেশনে থাকতে হতো। এ ক্ষেত্রে সরকারিভাবেই ব্যয় নির্বাহ করা হতো। উইনিপেগ, ইয়েলোনাইফসহ বিভিন্ন এলাকার হোটেলে তৈরি করা হয়েছিল আইসোলেশন হাব।

আইসোলেশনের জন্য নির্ধারিত এসব স্থানে নিরাপত্তা কর্মীদের কড়া পাহারা ছিল। সেখানে থাকা ব্যক্তিদের নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা হতো। নুনাভাটে এ পর্যন্ত ৭ হাজারের কিছু বেশি ব্যক্তিকে আইসোলেশন হাবে রাখা হয়েছে। তারা সবাই পরবর্তীতে সুস্থ দেহে বাড়ি ফিরে গেছে।

তবে এসব করোনার নিয়ন্ত্রণের কাজে নানা সমস্যাও হয়েছে। অনেক সময় দেখা গেছে, আইসোলেশনে থাকা কোনো ব্যক্তি পালিয়ে গেছে। আবার কোনো সময় বাইরে থেকে আসা নির্দিষ্ট ব্যক্তি আইসোলেশনে থাকতে রাজি হননি। আবার আইসোলেশন হাবে সরবরাহ করা খাবার নিয়েও কারও কারও অভিযোগ ছিল। তবে এসব পদক্ষেপের ফলেই এখনো পর্যন্ত নুনাভাটে করোনার সংক্রমণ শূন্য। অথচ ইউরোপের অন্যান্য দেশের মতো কানাডাতেও ফের করোনার সংক্রমণ বাড়ছে।

নুনাভাটে প্রায় ৩৬ হাজার মানুষের বসবাস। এই অঞ্চলের চারদিকে আছে আর্কটিক সাগর। নুনাভাটে প্রায় ২৫টি সম্প্রদায় বাস করে। এর আয়তন প্রায় ২০ লাখ বর্গকিলোমিটার। আকারে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের দ্বিগুণ এই নুনাভাট।
নুনাভাটের প্রধান জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তা মাইকেল প্যাটারসন বলেন, অন্যান্য অঞ্চলের মতো এখানকার মানুষেরাও কোভিড-১৯ এর ঝুঁকিতে ছিল। কিন্তু সময়োচিত পদক্ষেপের কারণে তা রোধ করা গেছে।