নৌপথে যাওয়া ভিসাপ্রার্থীদের বিষয়ে কঠোর অস্ট্রেলিয়া
নৌপথে যারা বিভিন্ন সময়ে অস্ট্রেলিয়ায় প্রবেশ করেছে, তাদের ক্ষেত্রে কঠোর নীতি অবলম্বন করতে যাচ্ছে দেশটির সরকার। ওই শরণার্থীদের ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রে আজীবন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। ভিসা প্রদানের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাব এই সপ্তাহের শেষ দিকে সংসদে উত্থাপন করা হবে বলে বিবিসির খবরে বলা হয়েছে।
এমনকি যারা পর্যটক হিসেবে ভ্রমণ ও ব্যবসা করতে গিয়ে থেকে গেছে এবং কোনো অস্ট্রেলিয়ানকে বিয়ে করেছে, তাদের ক্ষেত্রেও এই নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে। মানব পাচারকারীদের জন্য এটাকে কঠোর সংকেত বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ম্যালকম টার্নবুল। তিনি জানিয়েছেন, যারা নৌপথে অস্ট্রেলিয়ায় প্রবেশ করবে, তাদের নাউরু ও পাপুয়া নিউগিনির মানস দ্বীপে পাঠানো হবে। এমনকি যদি প্রকৃত উদ্বাস্তু হয়, তারাও অস্ট্রেলিয়ায় স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি পাবে না। তারা চাইলে নিজ দেশে ফিরে যেতে পারে, নতুবা তাদের মানস, নাউরু বা তৃতীয় কোনো দেশে পুনর্বাসিত করা হবে।
২০১৩ সালের ১৯ জুলাই থেকে এ পর্যন্ত যাদের নাউরু ও মানসে পাঠানো হয়েছে, এমনকি যারা দেশে ফিরে গেছে এবং ভবিষ্যতে যারা আসবে, তাদের ক্ষেত্রে নতুন এই আইন কার্যকর হবে। তবে এ ক্ষেত্রে শিশুরা অব্যাহতি পাবে। এটাকে অস্ট্রেলিয়ার জনগণ তথা সরকার ও মানব পাচারকারী দস্যুদের মধ্যে একটি যুদ্ধ বলে উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী টার্নবুল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই অপরাধীদের ছোট করে দেখার কোনো কারণ নেই। কারণ, তারা কল্পনাতীত মাত্রার খারাপ প্রকৃতির লোক। এখানে তাদের শত শত কোটি টাকার ব্যবসা। কিন্তু তাদের এই অপরাধমূলক পরিকল্পনাকে আমাদের শক্ত হাতে দমন করতে হবে। যদি তারা ওই সব লোকে এ দেশে নিয়েও আসে, তবু তারা কিছুতেই অস্ট্রেলিয়ায় স্থায়ীভাবে বসবাস করতে পারবে না।’
আইনটি কার্যকর হলে মানস, নাউরু ও অস্ট্রেলিয়ায় চিকিৎসাধীন প্রায় তিন হাজার প্রাপ্তবয়স্ক উদ্বাস্তুকে সরাসরি প্রভাবিত করবে। এদিকে অস্ট্রেলিয়ার বিরোধী দল লেবার পার্টি আইনটি পাস না করার দাবি জানিয়েছে।
অস্ট্রেলিয়া উদ্বাস্তু ও শরণার্থীদের ক্ষেত্রে বারবার শক্ত নীতির জন্য বিভিন্ন সময়ে সমালোচিত হয়েছে। এই মাসের শুরুর দিকে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের এক প্রতিবেদনে নাউরুকে একটি উন্মুক্ত কারাগার হিসেবে উল্লেখ করা হয়। তবে ওই প্রতিবেদনকে একেবারে মিথ্যা বলে নাকচ করে দেন প্রধানমন্ত্রী টার্নবুল।