প্রায় ২ কোটি টাকায় বিক্রি হলো রোলেক্সের সেই ঘড়িটি

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সুইজারল্যান্ডের রোলেক্স থেকে ঘড়িটি অর্ডার করেছিলেন ইমেসন
ছবি: এএফপি

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে ১৯৪৪ সালের ২৪ মার্চ রাতে নাৎসি স্তালাগ লাফট থ্রি যুদ্ধবন্দী শিবির থেকে পালিয়ে যায় পশ্চিমা মিত্রবাহিনীর একদল সেনা। এ ঘটনা অবলম্বনে ১৯৬৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ‘গ্রেট এসকেইপ’ নামে একটি চলচ্চিত্রও তৈরি হয়। এবার সেই সেনা দলেরই একজনের ব্যবহৃত একটি রোলেক্স ঘড়ি নিলামে বিক্রি হয়েছে। খবর এএফপির।

স্থানীয় সময় গতকাল বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে ১ লাখ ৮৯ হাজার ডলার মূল্যে (বাংলাদেশি মুদ্রায় ১ কোটি ৭৭ লাখ টাকা) ঘড়িটি বিক্রি হয়।

ঘড়িটির মালিক ছিলেন ব্রিটিশ নাগরিক জেরাল্ড ইমেসন। মিত্রপক্ষের বিভিন্ন দেশের সেনাদের পাশাপাশি এ ব্রিটিশ সেনাও জার্মানির যুদ্ধ শিবিরে বন্দী ছিলেন। ১৯৪৪ সালের ২৪ মার্চ শিবির থেকে পালানোর সময় তাঁর হাতে একটি রোলেক্স ঘড়ি ছিল। সে ঘড়িটিই গতকাল নিলামে তুলেছিল ব্রিটিশ নিলাম কোম্পানি ক্রিস্টি।

ঘড়িটির দাম চার লাখ ডলার পর্যন্ত উঠবে বলে আশা করেছিল ক্রিস্টি। তবে শেষ পর্যন্ত এটি ২ লাখ ডলারের কিছু কম দামে বিক্রি হয়েছে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সুইজারল্যান্ডের রোলেক্স থেকে ঘড়িটি অর্ডার করেছিলেন ইমেসন। রেডক্রসের মাধ্যমে ঘড়িটি বন্দী শিবিরে পৌঁছানো হয়েছিল। বর্তমান পোলিশ শহর জাগানের কাছে ওই বন্দী শিবিরের অবস্থান ছিল।

ইমেসনের ব্যবহৃত ওই স্টিলের ঘড়িটির ডায়াল কালো রঙের। ক্রিস্টি কর্তৃপক্ষ বলছে, এ ঘড়িটি থাকায় বন্দীরা কত সময়ে হামাগুড়ি দিয়ে সুড়ঙ্গের মধ্য দিয়ে যেতে পারবেন এবং শিবিরের রক্ষীদের টহলের সময় কত, তা নির্ধারণ করতে পেরেছিলেন ইমেসন।

ক্রিস্টির তথ্য অনুযায়ী, ১৯৪৪ সালের ২৪ মার্চ ২০০ বন্দী পালানোর পরিকল্পনা করেছিলেন। প্রাথমিকভাবে ৭২ জন পালাতে পেরেছিলেন। ইমেসন তাঁদের মধ্যে ছিলেন না। তিনজন ছাড়া বাকি সবাই আটক হন এবং ৫০ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।

১৯৪৫ সালে যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর আরেকটি বন্দী শিবির থেকে ইমেসনকে মুক্ত করা হয়। ২০০৩ সালে মৃত্যুর আগপর্যন্ত ঘড়িটি পরতেন ইমেসন। তখন তাঁর বয়স ছিল ৮৫ বছর।

ঘড়িটি প্রথম নিলামে তোলা হয় ২০১৩ সালে। ব্রিটিশ বিমানবাহিনীর একটি হুইসেল এবং জরুরি দ্য গোল্ডফিশ ক্লাবের একটি সদস্য কার্ডসহ বিভিন্ন জিনিসের সঙ্গে ঘড়িটি বিক্রি হয়।