ব্যবহারের জন্য কিছু টিকা এ বছরেই: যুক্তরাজ্য

স্যার প্যাট্রিক ভ্যালান্স, যুক্তরাজ্যের প্রধান বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা
ছবি: রয়টার্স

যুক্তরাজ্যে বছর শেষ হওয়ার আগেই করোনাভাইরাসের অল্প কিছু টিকা পাওয়া যেতে পারে। যুক্তরাজ্য সরকারের প্রধান বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা স্যার প্যাট্রিক ভ্যালান্স বলেছেন, কার্যকর কোভিড টিকার কয়েকটি ডোজ বছর শেষের আগে ব্যবহারের জন্য পাওয়া যেতে পারে। তবে আগামী বছরের প্রথম ছয় মাসের মধ্যে এ ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি ঘটবে। আজ মঙ্গলবার দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্যাট্রিক ভ্যালান্স বলেছেন, টিকা পাওয়ার দিক থেকে যুক্তরাজ্য ভালো অবস্থানে রয়েছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে টিকার ফরমাশও দিয়ে রাখা হয়েছে। বিশ্বে যে কয়েকটি টিকা প্রযুক্তি নিয়ে কাজ চলছে, তার সব কটিতেই যুক্তরাজ্যের টিকা পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে কোন টিকা কবে আসবে, তা তিনি বলতে পারছেন না।

ভ্যালান্স আরও বলেন, ‘টিকা তৈরিতে ব্যাপক অগ্রগতি হয়েছে। অনেক টিকার ক্ষেত্রে প্রতিরোধী প্রতিক্রিয়া পাওয়ার খবর জেনেছি, যাতে টিকাটি সুরক্ষা দিতে পারবে বলে মনে হয়। অনেক টিকা পরীক্ষার চূড়ান্ত ধাপে রয়েছে। এগুলো নিরাপদ ও কার্যকর হিসেবে প্রমাণের অপেক্ষায়।’

কোন টিকা কাজ করবে, আমরা এখনো তা জানি না। তবে আমরা সঠিক পথে আছি, তার পক্ষে প্রমাণ বাড়ছে। এ বছর শেষ হওয়ার আগেই কিছু টিকা পেয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
স্যার প্যাট্রিক ভ্যালান্স, প্রধান বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা,যুক্তরাজ্য

যুক্তরাজ্য সরকারের প্রধান বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা আরও বলেছেন, ‘কোন টিকা কাজ করবে, আমরা এখনো তা জানি না। তবে আমরা সঠিক পথে আছি, তার পক্ষে প্রমাণ বাড়ছে। এ বছর শেষ হওয়ার আগেই কিছু টিকা পেয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এমনকি নির্দিষ্ট গ্রুপের অল্প কিছু মানুষকে টিকা দেওয়া হতে পারে। আগামী বছরের প্রথমার্ধে টিকা সহজলভ্য হতে দেখা যাবে। নিশ্চিত না হলেও আমরা সঠিক পথে যাচ্ছি।’

যুক্তরাজ্যে প্রথমে টিকা পাবেন স্বাস্থ্যসেবা ও সমাজসেবায় যুক্ত কর্মীরা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শও তা–ই। এরপর ঝুঁকিতে থাকা বয়স্ক মানুষকে এ টিকা দেওয়া হবে।
কোন টিকা সবার আগে আসবে, তার ওপর ভিত্তি করে বিতরণের বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে। যদি কোনো টিকা প্রতিরোধী (অ্যাডজুভ্যান্ট) সক্ষমতাযুক্ত বুস্টারসহ আসে, তবে তা বয়স্ক লোকদের জন্য উপযোগী হবে।

যুক্তরাজ্য সরকার আগাম ছয়টি টিকার ফরমাশ দিয়ে রেখেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে পরিচিত হচ্ছে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকাটি। টিকাটি পরীক্ষার তৃতীয় বা চূড়ান্ত ধাপে রয়েছে। বিশ্বের অনেক দেশ টিকাটির আগাম ফরমাশ দিয়ে রেখেছে।

একটি নিরীহ শিম্পাঞ্জি ভাইরাস থেকে নেওয়া অ্যাডেনোভেক্টর টিকা হিসেবে অক্সফোর্ডের টিকাটি অন্য টিকার চেয়ে এগিয়ে রয়েছে। তবে সম্প্রতি যুক্তরাজ্যে পরীক্ষা চলাকালে একজন স্বেচ্ছাসেবী অসুস্থ হয়ে পড়লে টিকাটির পরীক্ষা সাময়িক বন্ধ হয়ে যায়।

যুক্তরাজ্য, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ব্রাজিলে আবার পরীক্ষা শুরু হলেও যুক্তরাষ্ট্রে তা স্থগিত রয়েছে। দেশটির ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা টিকাটি নিয়ে উদ্বেগে রয়েছে। কারণ, টিকাটি সম্পর্কে যথেষ্ট তথ্য দেওয়া হয়নি। যুক্তরাজ্যের কাছ থেকে কোষের নমুনার অপেক্ষায় আছে তারা।

কাগজে–কলমে যুক্তরাজ্য ৩৪ কোটি টিকার ফরমাশ দিয়েছে। এর বাইরে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কোভ্যাক্স উদ্যোগেও যুক্ত হয়েছে। কোভ্যাক্স উদ্যোগের মাধ্যমে টিকা নিয়ে গবেষণা, ক্রয় ও নতুন কোনো টিকা পাওয়া গেলে তা বিশ্বের উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে সমবণ্টনের বিষয়টিতে নিশ্চয়তা দেওয়া হয়।