ব্রিটিশ রাজপ্রাসাদ মিথ্যাকে জিইয়ে রাখছে: মেগান

অপরাহ উইনফ্রের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে হ্যারি ও মেগান
ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া

প্রিন্স হ্যারির স্ত্রী মেগান মার্কেল অভিযোগ করেছেন, ব্রিটিশ রাজপ্রাসাদ বাকিংহাম প্যালেস তাঁর ও তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে মিথ্যা জিইয়ে রাখছে। তাঁরা তাঁদের কথা বলা থেকে নীরব থাকবেন না। খবর রয়টার্সের।

মার্কিন উপস্থাপক অপরাহ উইনফ্রেকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ডাচেস অব সাসেস্ক মেগান এ কথা বলেছেন। এ সাক্ষাৎকারের ওপর এক বিশেষ টেলিভিশন শো আগামী রোববার যুক্তরাষ্ট্রে সম্প্রচার হওয়ার কথা রয়েছে। স্বামী হ্যারিকে সঙ্গে নিয়ে দেওয়া এ সাক্ষাৎকারে তাঁরা কেন রাজকীয় দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছেন, সে বিষয়ে কথা বলেছেন তিনি।

এত কিছুর পর আমরা এখনো নীরব থাকব, তা কীভাবে তারা আশা করতে পারে, আমি জানি না। তা-ও যদি এমন হয়, দ্য ফার্ম (ব্রিটিশ রাজপরিবার) আমাদের নিয়ে অব্যাহতভাবে মিথ্যাচার করে যাচ্ছে।
মেগান মার্কেল

‘অপরাহ উইথ মেগান অ্যান্ড হ্যারি: আ সিবিএস প্রাইমটাইম স্পেশাল’ শিরোনামে বিশেষ ওই টিভি শো যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি যুক্তরাজ্যেও প্রচার করা হবে। তবে যুক্তরাজ্যে কখন প্রচারিত হবে, তা স্পষ্ট নয়।

সাক্ষাৎকারের চুম্বক অংশ গতকাল বুধবার গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এর কয়েক ঘণ্টা আগে বাকিংহাম প্যালেস টাইমস পত্রিকার এক প্রতিবেদন নিয়ে ‘খুবই উদ্বেগের’ কথা জানায়। ওই প্রতিবেদনে লেখা হয়, রাজপ্রাসাদে থাকাকালে মেগান দুই বছর আগে তাঁকে সহায়তার কাজে নিয়োজিত কর্মীদের ধমকাতেন।

তবে এক বিবৃতিতে রাজপ্রাসাদের কোনো কর্মীকে ধমকানোর অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছেন হ্যারি ও মেগান।

উইনফ্রে মেগানকে জিজ্ঞাসা করেন, ‘আজ আপনি আপনার সত্য কথাগুলো বলছেন। রাজপ্রাসাদ এসব শুনছে। প্রাসাদ সম্পর্কে আপনার অনুভূতি এখন কেমন?’

জবাবে মেগান বলেন, ‘এত কিছুর পর আমরা এখনো নীরব থাকব, তা কীভাবে তারা আশা করতে পারে, আমি জানি না। তা-ও যদি এমন হয়, দ্য ফার্ম (ব্রিটিশ রাজপরিবার) আমাদের নিয়ে অব্যাহতভাবে মিথ্যাচার করে যাচ্ছে।’ মেগান আরও বলেন, ‘আর এই মিথ্যাচার যদি এমন হয় যে এতে নানান কিছু হারানোর ঝুঁকি থাকে। আমি বলতে চাইছি, আমাদের এরই মধ্যে অনেক কিছু হারাতে হয়েছে।’

অপ্রকাশিত সূত্রের বরাতে টাইমস হ্যারি-মেগানকে নিয়ে প্রতিবেদন ছাপানোর আগে উইনফ্রের সঙ্গে এই দম্পতির সাক্ষাৎকার রেকর্ড করা হয়। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, ২০১৮ সালের অক্টোবরে হ্যারি ও মেগানের একজন সহকারী অভিযোগ তোলেন, মেগান তাঁর কিছু সহকর্মীর সঙ্গে এত খারাপ আচরণ করেন যে তাঁরা তাঁদের দায়িত্ব ছেড়ে দেন।

পত্রিকাটি বলেছে, অভিযোগ উত্থাপনকারী যেসব সহকারী রাজপ্রাসাদের কর্মীদের ছেড়ে চলে গেছেন, হ্যারি তাঁদের কাছে অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছিলেন। পরে বিষয়টি আর কখনো সামনে এগোয়নি।

রয়টার্স এ প্রতিবেদনের সত্যতা নিরপেক্ষ সূত্রে যাচাই করতে পারেনি।

তবে বাকিংহাম প্যালেস এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘ডিউক ও ডাচেস অব সাসেক্সের সাবেক কর্মীদের দাবি নিয়ে দ্য টাইমসে যে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে, তাতে আমরা স্পষ্টত খুবই উদ্বিগ্ন। কর্মক্ষেত্রে ধমকানি বা হয়রানির ঘটনা রাজপ্রাসাদ সহ্য করে না ও করবেও না।’ বাকিংহাম প্যালেসের হিউম্যান রিসোর্স বিভাগ ওই সব অভিযোগ খতিয়ে দেখবে এবং ওই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট কর্মীদের এ কাজে আমন্ত্রণ জানাবে।

ইতিপূর্বে মেগানের একজন মুখপাত্র বলেন, মেগান তাঁর চরিত্রের ওপর লেপা সাম্প্রতিকতম অভিযোগে দুঃখ পেয়েছেন।

এক বছর আগে হ্যারি ও তাঁর মার্কিন স্ত্রী মেগান রাজকাজ ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। রাজপরিবারের কারও সঙ্গে কোনো আলোচনা না করে তাঁদের নেওয়া এ সিদ্ধান্তে তোলপাড় সৃষ্টি হয় রাজপরিবারে। ওই সিদ্ধান্তে বিস্মিত হয়েছিলেন বিশ্ববাসী। এই দম্পতি জানিয়েছিলেন, তাঁরা স্বাবলম্বী হয়ে বাঁচতে চান।

সম্প্রতি হ্যারি ও মেগান জানিয়ে দেন, তাঁরা আর কখনো রাজদায়িত্বে ফিরছেন না। বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথও ডিউক অব সাসেক্স ও ডাচেস অব সাসেক্সকে তাঁদের রাজকীয় উপাধি এবং রাজপরিবার থেকে পাওয়া সুযোগ-সুবিধা ত্যাগ করার নির্দেশ দিয়েছেন।

রাজকীয় দায়িত্ব ছাড়ার পর গত বছর হ্যারি ও মেগান যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে চলে যান। এরপর থেকে এক নতুন জীবন শুরু করেছেন এ দম্পতি।