মারিউপোলে যুদ্ধ শেষের ইঙ্গিত ইউক্রেনের

রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে থাকা দক্ষিণাঞ্চলীয় বন্দরনগরী মারিউপোলে যুদ্ধ শেষের ইঙ্গিত দিয়েছে ইউক্রেন। এক বিবৃতিতে মারিউপোলে ‘যুদ্ধ অভিযান’ সম্পন্ন করার ঘোষণা দিয়েছে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী। এমন সময় এ ঘোষণা এল, যখন রাশিয়ার সঙ্গে সমঝোতার মাধ্যমে মারিউপোলের অবরুদ্ধ আজভস্তাল থেকে ইউক্রেনীয় সেনাদের সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। খবর সিএনএনের।

ইউক্রেনের জেনারেল স্টাফ অব আর্মড ফোর্সেস নতুন এক বিবৃতিতে বলেছে, মারিউপোল গ্যারিসন তাদের যুদ্ধ অভিযান সম্পন্ন করেছে। এতে আরও বলা হয়, আজভস্তালে অবস্থানরত ইউনিটগুলোর কমান্ডারদের তাদের সেনাদের জীবন রক্ষার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম মিলিটারি কমান্ড।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘মারিউপোলের প্রতিরোধযোদ্ধারা আমাদের সময়ের নায়ক। ইতিহাস তাদের চিরদিন স্মরণ করবে। তাদের মধ্যে আছে স্পেশাল আজভ ইউনিট, ইউক্রেনের ন্যাশনাল গার্ডের ১২তম ব্রিগেড, ৩৬তম সেপারেট ব্রিগেড অব মেরিন, সীমান্তরক্ষী বাহিনী, পুলিশ, স্বেচ্ছাসেবক এবং মারিউপোলের আঞ্চলিক বাহিনী।’

এতে আরও বলা হয়, ‘মারিউপোলের চারপাশে থাকা শত্রুদের মূল বাহিনীগুলোর ওপর নজর রেখে আমাদের প্রস্তুতি গ্রহণ ও প্রতিরক্ষা লাইন তৈরির সুযোগ হয়েছিল, যেখানে আগ্রাসন ঠেকিয়ে দিতে আমাদের সেনারা আজ সদাপ্রস্তুত।’

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘গোটা ইউক্রেন ও পুরো বিশ্বের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ হলো মারিউপোলের প্রতিরোধযোদ্ধাদের জীবন রক্ষা করা। যেভাবে আস্থার সঙ্গে আপনারা রাষ্ট্রকে রক্ষা করছেন, ঠিক একইভাবে আপনাদের জন্য আমরা সব ফ্রন্টে লড়াই করব।’

এর আগে এক ভিডিও বার্তায় ইউক্রেনের উপপ্রতিরক্ষামন্ত্রী হান্না মালিয়ার নিশ্চিত করেছেন, আজভস্তাল ইস্পাত কারখানায় এখনো কিছু প্রতিরোধযোদ্ধা অবস্থান করছেন।

এদিকে রাশিয়ার সঙ্গে সমঝোতার মাধ্যমে অবরুদ্ধ ইস্পাত কারখানা থেকে ২৬৪ ইউক্রেনীয় সেনাকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ইউক্রেন। দুই মাসের বেশি সময় ধরে তাঁরা সেখানে আটকে ছিলেন।

হান্না মালিয়ার জানান, গুরুতর আহত ৫৩ সেনাকে রুশসমর্থিত বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রিত নভোয়াজোভস্ক শহরে নেওয়া হয়েছে। বাকি ২১১ সেনাকে মানবিক করিডর ব্যবহার করে বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রিত আরেক শহর ওলেনিভকায় নেওয়া হয়।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় ইউক্রেনীয় সেনাদের বহনকারী ১২টি বাস দক্ষিণাঞ্চলীয় এই বন্দরনগরীর বিশাল শিল্পাঞ্চল ছেড়ে চলে গেছে। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমগুলো ভিডিও ফুটেজ প্রচার করে জানায়, আহত ইউক্রেনীয় সেনাদের আজভস্তাল থেকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

রাশিয়া বলেছে, আহত সেনাদের ইস্পাত কারখানা থেকে সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে একটি সমঝোতা হয়েছে। হান্না মালিয়ার জানান, আটক রুশ সেনাদের হস্তান্তরের বিনিময়ে এই সেনাদের ফিরিয়ে আনা হবে।

ইউক্রেনের ন্যাটোয় যোগ দেওয়ার পদক্ষেপ নিজেদের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে নিয়ে ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রাশিয়া। তবে পশ্চিমা অস্ত্রসহায়তা পেয়ে ইউক্রেনীয় বাহিনী তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তুললে উত্তর দিক থেকে সেনা সরিয়ে পূর্ব ও দক্ষিণাঞ্চলে অভিযান জোরদার করে রুশ বাহিনী।