যুক্তরাজ্যে ঢুকলেই কোয়ারেন্টিন

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, সে দেশে আসা নাগরিকদের কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে।
এএফপি ফাইল ছবি

যুক্তরাজ্যে আসা নাগরিকদের কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে। আগামী সপ্তাহ থেকে করোনা নেগেটিভ সনদও দেখাতে হবে। দেশটিতে হাসপাতালে করোনায় সংক্রমিত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার এ কথা বলেছেন। এএফপির খবরে জানা যায়, আগামী সোমবার থেকে এ নিয়ম কার্যকর হবে।

ব্রাজিল থেকে করোনাভাইরাসের নতুন ধরনের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় গতকাল দক্ষিণ আমেরিকা ও পর্তুগাল থেকে আসা ব্যক্তিদের যুক্তরাজ্যে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

শীর্ষ চিকিৎসা ও বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, দেশে ঢুকলে করোনা নেগেটিভ সনদ দেখাতে হবে। যাত্রার ৭২ ঘণ্টা আগে করোনা পরীক্ষার এই সনদ নিতে হবে। তিনি আরও বলেন, যুক্তরাজ্যে আসার পর ১০ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে। কোনো কারণেই নিজের বাড়ি ছেড়ে অন্য কোথাও যাওয়া যাবে না। তবে কোয়ারেন্টিন থেকে আগে বের হতে যাত্রীরা পাঁচ দিন পরে আরেকটি করোনা পরীক্ষা করাতে পারেন।

অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর থেকে আসা যাত্রীরা যুক্তরাজ্যে সহজেই ঢুকতে পারতেন। এসব ক্ষেত্রে কোয়ারেন্টিন বা করোনা পরীক্ষা সনদের প্রয়োজন ছিল না। এসব দেশে করোনার সংক্রমণ কম থাকায় যুক্তরাজ্যে এই ব্যবস্থা ছিল।

যুক্তরাজ্যের পরিবহনমন্ত্রী গ্রান্ট স্যাপস টুইটে জানান, কোন কোন দেশে করোনার নতুন ধরনের সংক্রমণ ছড়িয়েছে, তা বের করা জটিল ব্যাপার। এ কারণে যুক্তরাজ্যে প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। ভ্রমণরতদের করোনা পরীক্ষার সনদ দেখানোর নিয়ম অন্য দেশগুলোর তুলনায় যুক্তরাজ্যে বেশ দেরিতে শুরু হলো।
এক সপ্তাহ আগে যুক্তরাজ্য ঘোষণা দেয় ইংল্যান্ড ও স্কটল্যান্ডে পর্যটকেরা এলে যাওয়ার আগে করোনা পরীক্ষার সনদ দেখাতে হবে। এই ঘোষণাই আগামী সোমবার থেকে কার্যকর হবে।

সরকারি হিসাবে যুক্তরাজ্যে করোনায় সংক্রমিত হয়ে মৃত্যুর হার গত সপ্তাহে এক-তৃতীয়াংশ বেড়েছে। দেশটিতে করোনায় সংক্রমিত হয়ে এ পর্যন্ত ৮৭ হাজার ২৯৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে এই হার সর্বোচ্চ।

স্থানীয় সময় গতকাল যুক্তরাজ্যে আরও ১ হাজার ২৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে। ওই দিন দেশটিতে আরও ৫৫ হাজার ৭৬১ জন করোনায় সংক্রমিত হন। এ পর্যন্ত যুক্তরাজ্যে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৩০ লাখের বেশি মানুষ। তবে গত সপ্তাহে করোনায় সংক্রমিত হওয়ার হার ১৪ শতাংশ কমেছে।

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন লকডাউন মেনে চলতে দেশের মানুষকে আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এখন ঢিলেঢালাভাবে চলার সময় না। সবাইকে ঘরে থাকতে হবে। কাজ, সন্তানদের প্রয়োজনে ও শরীরচর্চা ছাড়া মানুষকে ঘরে থাকতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সরকারি কর্মকর্তারা মনে করছেন, কঠোর নিয়মকানুনের কারণে করোনার সংক্রমণ কমেছে।

যুক্তরাজ্যে আগামী মাসের মাঝামাঝির মধ্যে ৩০ লাখের বেশি টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। প্রাপ্তবয়স্ক সবাইকে শরৎকালের মধ্যে টিকা দেওয়া হবে। গতকাল এক ভিডিওতে জনসন বলেন, ‘করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমরা জয়ী হব।’