রাশিয়ার বিরুদ্ধে এটি বাণিজ্য যুদ্ধের ঘোষণা

দিমিত্রি মেদভেদেভ
দিমিত্রি মেদভেদেভ

রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভেদেভ বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা নতুন নিষেধাজ্ঞা আসলে মস্কোর বিরুদ্ধে ‘পূর্ণ মাত্রার বাণিজ্য যুদ্ধ’ বা অর্থনৈতিক যুদ্ধ ঘোষণা করার মতো। তিনি মনে করেন, এ বিলে সই করতে বাধ্য করে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে একরকম অপমান করেছে মার্কিন কংগ্রেস। কারণ, ব্যক্তিগতভাবে ট্রাম্প এর বিরোধিতা করেছিলেন।

রাশিয়ার ওপর নতুন অবরোধ আরোপ করা নিয়ে মার্কিন কংগ্রেসে সম্প্রতি পাস হওয়া বিলে গত বুধবার সই করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফলে এটি এখন আইনে পরিণত হয়েছে। এরপর এই নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানালেন রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী।

এএফপি জানায়, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গতকাল বৃহস্পতিবার টুইটারে এক বার্তায় বলেছেন, রাশিয়ার সঙ্গে তাঁর দেশের সম্পর্ক ‘অত্যন্ত বিপজ্জনকভাবে’ তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। এর জন্য মার্কিন কংগ্রেসকেই দায়ী করেন তিনি।

গত বছর অনুষ্ঠিত যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কথিত হস্তক্ষেপের অভিযোগ ও ক্রিমিয়া অধিগ্রহণ করে নেওয়ায় রাশিয়াকে শায়েস্তা করতেই নিষেধাজ্ঞার বিলটি পাস করা হয়েছে।

ওয়াশিংটন নিষেধাজ্ঞা আইনের আওতায় অবরোধ আরোপের ক্ষেত্রে এখন রাশিয়ার জ্বালানি খাতকে লক্ষ্যবস্তু বানাতে পারবে। অর্থাৎ যেসব কোম্পানি রাশিয়ার পাইপলাইন স্থাপনের সঙ্গে সম্পৃক্ত, সেগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা যাবে। সেই সঙ্গে কয়েকজন রুশ অস্ত্র রপ্তানিকারকের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া যাবে।

রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভেদেভ বুধবার ফেসবুক পেজে লেখেন, ‘নতুন মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক উন্নয়নের সব সম্ভাবনা অবরোধের প্যাকেজ শেষ করে দিয়েছে।’ তাঁর মতে, যুগ যুগ ধরে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থাকবে। ট্রাম্পকে অদক্ষ খেলোয়াড় বলে এ সময় উল্লেখ করেন মেদভেদেভ।

বিলটি গত শুক্রবার হোয়াইট হাউসে পৌঁছালেও বুধবার তাতে সই করেন ট্রাম্প। বিলে সই করতে ট্রাম্প সময় নেওয়ায় মনে করা হচ্ছিল যে ট্রাম্প তাতে ভেটো দিতে পারেন কিংবা নিষেধাজ্ঞা স্থগিত রাখতে উদ্যোগ নিতে পারেন।

মস্কোর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, রাশিয়ার ওপর অবরোধ আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র বৈশ্বিক স্থিতিশীলতাকেই হুমকির মুখে ফেলে দিল। নিষেধাজ্ঞার নতুন আইনকে ‘বিপজ্জনক’ ও ‘অদূরদর্শী’ নীতি হিসেবেও আখ্যা দেওয়া হয়।

অন্যদিকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন বলেছেন, কংগ্রসের সিদ্ধান্তে রুশ নিষেধাজ্ঞার বিলটি পাস করার ফলে মস্কোর সঙ্গে সম্পর্ক উষ্ণ করা আরও কঠিন হয়ে গেল।

রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায় গতকাল জানায়, দুই দেশের সম্পর্ক নিয়ে আগামী সপ্তাহে ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলায় এক বৈঠকে টিলারসনের সঙ্গে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের আলোচনা হবে।