সুইডেন–ফিনল্যান্ডের ন্যাটোতে যোগদানে এরদোয়ানের আপত্তি

তুরস্কের প্রসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান।
ছবি: এএফপি

ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযান শুরুর পর সুইডেন ও ফিনল্যান্ডের নিরাপত্তা-সংক্রান্ত হিসাব-নিকাশ অনেকটাই বদলে গেছে। দীর্ঘদিনের নিরপেক্ষতার নীতি বদলে ফেলে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোতে যোগ দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে দেশ দুটি। যুক্তরাজ্যসহ ন্যাটোর অনেক সদস্য দেশ এতে সবুজ সংকেত দিয়েছে। তবে ইউরোপের দেশ দুটির ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার উদ্যোগে আপত্তি জানিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান।

মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল–জাজিরা গতকাল শুক্রবার এক প্রতিবেদনে জানায়, সুইডেন ও ফিনল্যান্ডের ন্যাটোতে যোগদানের পরিকল্পনা সমর্থন করছে না তুরস্ক। দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান একথা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। শুক্রবার ইস্তাম্বুলে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘স্ক্যান্ডিনেভিয়ান অঞ্চল সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর অতিথিশালা। এ পরিস্থিতিতে আমরা তাঁদের ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার পরিকল্পনা সমর্থন করতে পারিনা।’ তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি এরদোয়ান।

কিছুদিন আগেও ফিনল্যান্ড ও সুইডেনের সাধারণ মানুষের মধ্যে ন্যাটো জোটে যোগ দেওয়া নিয়ে আগ্রহ ছিল না। চলতি বছরের জানুয়ারিতে ফিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী সানা মারিন জানিয়েছিলেন, বর্তমান সরকারের আমলে ন্যাটোতে যোগদানের আবেদন করতে চায় না তাঁর দেশ। তবে ইউক্রেনে রুশ হামলা শুরর পর দুটি দেশের অধিকাংশ মানুষই ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার পক্ষে মতামত দিয়েছেন। বদলে গেছে সানা মারিনের অবস্থান। এখন দেশ দুটি ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার বিষয়টি নিজ নিজ পার্লামেন্টে তুলতে চায়।

আরও পড়ুন

ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরুর আগে ফিনল্যান্ডের ৫৩ শতাংশ ও সুইডেনের ৪১ শতাংশ মানুষ ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার পক্ষে ছিল বলে জরিপে দেখা যায়। তবে সাম্প্রতিক জরিপে দেখা গেছে, সুইডেনে ন্যাটোতে যোগদানের পক্ষে জনমত ৫০ শতাংশের বেশি হয়েছে। আর ফিনল্যান্ডে এই হার এখন ৬৮।

ন্যাটোতে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ না দিলেও অনেক আগে থেকেই জোটটির সঙ্গে কাজ করছে ফিনল্যান্ড ও সুইডেনের সেনাবাহিনী। আফগানিস্তানের ন্যাটোর নেতৃত্বাধীন অভিযানে অংশ নিয়েছিলেন দেশ দুটির সেনাসদস্যরা। দুই দেশই সামরিক সরঞ্জাম ও প্রশিক্ষণের বিষয়ে ২০১৫ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন

উল্লেখ্য, ইউক্রেনকে ন্যাটো জোটে যোগ দেওয়া থেকে বিরত রাখতেই দেশটির ওপর রাশিয়া হামলা চালায় বলে মনে করেন বিশ্লেষকদের অনেকেই। ইউক্রেনে হামলা চালানোর নির্দেশ দেওয়ার আগে রুশ প্রেসিডেন্ট অভিযোগ করেছিলেন, ন্যাটো সদস্য বাড়ানোর চেষ্টা করছে, যা রাশিয়ার নিরাপত্তার জন্য হুমকি। এ পরিস্থিতিতে সুইডেন–ফিনল্যান্ডের ন্যাটোতে যোগদান স্পষ্টতই মস্কোকে হতাশ করবে।

আরও পড়ুন