হিটলার আমলের ট্যাংক লুকিয়ে রাখায় মামলা

উদ্ধার করা ট্যাংক। কিল, শ্লেসভিগ-হলস্টেইন, উত্তর জার্মানির
ছবি: সংগৃহীত

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের নানা যুদ্ধাস্ত্র ও সরঞ্জাম দিয়ে একটি ছোটখাটো নাৎসি জাদুঘর বানিয়েছিলেন ক্লাউস ডিয়েটার নামের এক ব্যক্তি। সেই জাদুঘরে ছিল যুদ্ধে ব্যবহৃত প্যান্থার ট্যাংক থেকে শুরু করে নানা যুদ্ধাস্ত্র ও অ্যাডলফ হিটলারের সময়ের নানা দলিল। ট্যাংক, টর্পেডোসহ নানা যুদ্ধসামগ্রী সংগ্রহের অভিযোগে ওই ব্যক্তির বিচার শুরু হয়েছে।

উত্তর জার্মানির শ্লেসভিগ-হলস্টেইন রাজ্যের হাইকেনডর্ফ নামের স্থানে একটি বিশাল ভিলা বাড়িতে বসবাস করতেন কোটিপতি ক্লাউস ডিয়েটার। বিগত ৫০ বছরে তিনি তাঁর ব্যক্তিগত জাদুঘরের জন্য সংগ্রহ করেছেন দ্বিতীয় যুদ্ধে ব্যবহৃত যুদ্ধের নানা সরঞ্জাম। তাঁর সংগ্রহে ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্যান্থার ট্যাংক, বিমানবিধ্বংসী কামান ও সাবমেরিন বিধ্বংসী টর্পেডো, একটি মর্টার গ্রেনেড লাঞ্চার, মেশিনগান, অ্যাসল্ট রাইফেলস এবং রকেট রাইফেলস, আধা এবং সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় পিস্তল এবং এক হাজারের বেশি গোলাবারুদ। এ ছাড়া একটি ধাতব বাক্সে ছিল প্রচুর পরিমাণে নাইট্রোসেলুলোজ বিস্ফোরক পাউডার।

এসব যুদ্ধাস্ত্র রাখার দায়ে গত সপ্তাহে ক্লাউস ডিয়েটারের বিচার শুরু হয়েছে উত্তর জার্মানির শ্লেসভিগ-হলস্টেইন রাজ্যের রাজধানী কিল শহরে। আদালতে সরকারি কৌঁসুলি বলেছেন, ক্লাউস-ডিয়েটার যুদ্ধাস্ত্র নিয়ন্ত্রণ এবং অস্ত্র-সম্পর্কিত আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন।

পেশায় ব্যবসায়ী ক্লাউস-ডিয়েটার দীর্ঘদিন থেকেই গোপনে পুরোনো শিল্পকর্ম ও যুদ্ধাস্ত্র ও নাৎসি হিটলারের সময়ের নানা দলিল সংগ্রহ ও ক্রয়-বিক্রয়ের ব্যবসায় জড়িত ছিলেন। তবে তাঁর সংগ্রহে যুদ্ধের নানা ভারী অস্ত্রসহ প্যান্থার ট্যাংক ছিল, তা কেউ ধারণা করতে পারেনি। কয়েক বছর আগে বার্লিনের শিল্পকর্ম বিষয়ে পারদর্শী পুলিশের বিশেষ দল ক্লাউস-ডিয়েটারের বিশাল ভিলা বাড়িতে প্রবেশ করে তাজ্জব বনে যায়। বাড়িটির ভূগর্ভস্থ ঘর ও গাড়ি রাখার গ্যারেজে তিনি রেখেছিলেন হিটলারের আবক্ষ মূর্তি, বড় আকারের সোনার ইম্পিরিয়াল ইগল। নাৎসি বাহিনীর বিভিন্ন শাখার ইউনিফর্ম এবং পুরোপুরি সচল একটি প্যান্থার ট্যাংকও রয়েছে সেখানে। জার্মানির আইনে নিষিদ্ধ এসব সামগ্রী উদ্ধারে পুলিশ ও সেনাদলের ২০ ঘণ্টা সময় লেগেছিল।

৮০ বছর বয়সী কোটিপতি ক্লাউস ডিয়েটারের আইনজীবী বলেছেন, তাঁর মক্কেলের পুরোনো এই সংগ্রহের ব্যবসা দীর্ঘদিনের। তবে যুদ্ধাস্ত্র, ট্যাংক বা নাৎসি হিটলারের সময়ের দলিল সামগ্রী যে নিষিদ্ধ, তা বুঝে উঠতে পারেননি তিনি। আগামী মাসের শেষের দিকে কিল শহরের আদালত এ মামলার রায় দেবেন।