‘অনুগতদের’ হাতে অস্ত্র তুলে দিতে যাচ্ছে জান্তা

‘রাষ্ট্রের প্রতি অনুগত’ বেসামরিক নাগরিকদের আগ্নেয়াস্ত্র রাখার লাইসেন্সের জন্য আবেদনের সুযোগ দিতে যাচ্ছে সামরিক সরকার।

মিন অং হ্লাইং

‘রাষ্ট্রের প্রতি অনুগত’ বেসামরিক নাগরিকদের আগ্নেয়াস্ত্র রাখার লাইসেন্সের জন্য আবেদনের সুযোগ দিতে যাচ্ছে মিয়ানমারের সামরিক সরকার। একাধিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন ও অসমর্থিত সরকারি নথিতে এ কথা বলা হয়েছে।

ফাঁস হওয়া এমন একটি নথি পর্যালোচনা করে দেখেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও অন্যান্য সংবাদমাধ্যম। নথিটির উৎস স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলে ধারণা করা হচ্ছে। যাঁরা বন্দুকের লাইসেন্স চাইছেন, এই নথিতে তাঁদের জন্য মানদণ্ড নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, বেসামরিক নাগরিকদের বন্দুক রাখার সুযোগ করে দেওয়ার কারণে জান্তা-সমর্থিত গোষ্ঠীগুলো শক্তিশালী হবে। এটি কেবলই সহিংসতা বাড়িয়ে দেবে। প্রায় প্রতিদিনই সামরিক বাহিনী ও সশস্ত্র প্রতিরোধ সংগঠনগুলোর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। পুরো দেশেই এ ধরনের সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়েছে।

নথিতে উল্লেখ করা বন্দুকের লাইসেন্সের শর্তগুলোর একটি হলো বয়স কমপক্ষে ১৮ বছর হতে হবে। বন্দুক রাখার পক্ষে নিরাপত্তাজনিত স্পষ্ট প্রয়োজনীয়তা দেখাতে হবে। পাশাপাশি রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্যের শর্ত পূরণ করতে হবে।

নথিতে বিদ্রোহবিরোধী সংগঠনগুলোর সদস্যদের, সরকারিভাবে গঠিত মিলিশিয়া এবং সামরিক বাহিনী থেকে অবসরপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের জন্য পিস্তল, রাইফেল ও সাবমেশিনগান বহনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে, যতক্ষণ না তাঁদের জন্য এ ধরনের অনুমতি রয়েছে।

অবশ্য ১৫ পৃষ্ঠার নথিটির সত্যতা তাৎক্ষণিক যাচাই করতে পারেনি রয়টার্স। এ ধরনের আইন কবে থেকে কার্যকর হবে, সেটাও স্পষ্ট নয়। এ বিষয়ে জানতে সামরিক বাহিনীর মুখপাত্রের সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু ফোনটি ধরা হয়নি।

২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারিতে দেশটির সামরিক বাহিনীর কমান্ডার ইন চিফ মিন অং হ্লাইং এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশটির অং সান সু চির নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতায় আসে। সু চিকে আটক করা হয় এবং তাঁর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগে মামলা করে এবং কয়েটি মামলায় তাঁর বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড হয়েছে।

সামরিক জান্তা মিন অং হ্লাইংয়ের প্রশাসনের বিরুদ্ধে দেশটিতে সশস্ত্র প্রতিরোধ অব্যাহত রয়েছে। গঠিত হয়েছে জান্তাবিরোধী ছায়া সরকার ও বিদ্রোহী বাহিনী। অভ্যুত্থানের পর থেকে জান্তাবিরোধী বিক্ষোভে ও সেনাবাহিনীর হামলায় দেশটিতে এ পর্যন্ত প্রায় ১৯ হাজার লোক নিহত হয়েছেন।