চোরকে খেতে দিলেন তিনি

প্রতীকী ছবি

চুরির উদ্দেশ্যে গভীর রাতে ঘরে ঢুকেছে ‘চোর’। নিজের ঘরে সেই চোরকে আপ্যায়ন করলেন অশীতিপর নারী। গত ২৬ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের মেইন অঙ্গরাজ্যের ব্রান্সউইকে এ ঘটনা ঘটে।

ওই নারীর নাম মারজোরি পারকিনস। বয়স ৮৭। তিনি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। তিনি একাই ওই ঘরে থাকেন।

পারকিনস বলেন, ঘটনার দিন রাত দুইটার দিকে হঠাৎ তাঁর ঘুম ভেঙে যায়। তিনি দেখেন, তাঁর খাটের ওপর এক কিশোর, বয়স আনুমানিক ১৭ বছর। সে তাঁর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়তে উদ্যত।

পারকিনস বলেন, এ অবস্থা দেখে তিনি সাহস হারাননি। বরং লাফ দিয়ে খাট থেকে নেমে জুতো পরে ওই কিশোরকে সজোর লাথি মারেন। একপর্যায়ে ওই কিশোরও তাঁর ওপর চড়াও হয়। সে দেয়ালের সঙ্গে তাঁকে চেপে ধরে। তখন তিনি হাতের কাছে থাকা একটা চেয়ার দিয়ে কিশোরকে আঘাত করেন। আবার কিশোরের ঘুষিতে তাঁর কপাল ফেটে যায়। এভাবে ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে ওই কিশোর ক্লান্ত হয়ে খাবার খুঁজতে থাকে।

পারকিনস বলেন, একপর্যায়ে তিনি লক্ষ করলেন, ছেলেটি ভয়ানক ক্ষুধার্ত। তিনি তাকে আশ্বস্ত করে খাবার খেতে দিলেন। তাকে মাখনমিশ্রিত বাদাম ও মধু দিয়ে তৈরি বিস্কুট খেতে দেন। তিনি তাকে বাদাম ও বিস্কুটভর্তি আস্ত দুটো পাত্র দিয়ে দেন। তাকে দুটো কমলাও খেতে দেন তিনি।

ওই কিশোরের খাবার খাওয়ার ফাঁকে পারকিনস যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯১১-এ কল করেন। তবে পুলিশ আসার আগেই ওই কিশোর চলে যায়। তবে সে জুতা, শার্ট, একটি ছুরি ও মদমিশ্রিত একবোতল পানি ফেলে যায়। পরে পুলিশ প্রশিক্ষিত কুকুরের সাহায্যে নিকটবর্তী একটি জায়গা থেকে ওই কিশোরকে খুঁজে বের করে এবং তাকে গ্রেপ্তার করে। পুলিশ তার বিরুদ্ধে চুরি, অপ্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায় মদ্যপান, হেনস্তা ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগ এনেছে। তবে পুলিশ ওই কিশোরের নাম ও বয়স প্রকাশ করেনি।

পারকিনস বলেন, তিনি ওই বাড়িতে ৪২ বছর ধরে থাকছেন। তাঁর ধারণা, অনেক বছর আগে আঙিনা পরিষ্কার করার সময় তিনি একবার এই কিশোরকে দেখেছিলেন, তখন তার বয়স হয়তো বছর সাতেক ছিল। ঘটনার দিন জানালা ভেঙে সে ঘরে ঢুকেছে।

পারকিনস মনে করেন, এই কিশোরের সাহায্য প্রয়োজন। তাঁর আশা, আইনের আওতায় আসার মধ্য দিয়ে সে সঠিক পথ পাবে, তার একটি কাজের ব্যবস্থা হবে।