সিডনিতে অভিবাসনবিরোধী সমাবেশ ঘিরে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা

অস্ট্রেলিয়ার সিডনিফাইল ছবি: রয়টার্স

অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে আগামী রোববার অভিবাসনবিরোধী একটি সমাবেশ ডাকা হয়েছে। এ নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার বহু সাংস্কৃতিক সমাজে তৈরি হয়েছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা।

‘মার্চ ফর অস্ট্রেলিয়া’ নামের এই সমাবেশের আয়োজকেরা ‘অস্ট্রেলীয় ঐতিহ্য’ রক্ষার কথা বলছেন। তবে ফাঁস হওয়া এক অডিওতে আয়োজকদের ‘বর্ণবাদী’ ও ‘নব্যনাৎসি’ মনোভাবের আলামত মিলেছে।

অস্ট্রেলিয়া সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা পরিকল্পিত এই সমাবেশের পক্ষে নয়। অস্ট্রেলিয়ার চেতনার পরিপন্থী এই সমাবেশকে তারা সমর্থন করে না।

সমাবেশের অন্যতম আয়োজক নিজেকে ‘বেক ফ্রিডম’ নামে পরিচয় দিচ্ছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ অন্যত্র ফাঁস হওয়া অডিওতে তাঁকে বলতে শোনা যায়, শ্বেতাঙ্গ অস্ট্রেলিয়ার কথা বললে নাৎসি হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার ভয় থাকে। তাই এর পরিবর্তে ‘অস্ট্রেলীয় ঐতিহ্য’ শব্দটি ব্যবহার করা উচিত। ‘অস্ট্রেলীয় ঐতিহ্য’ মানেই শ্বেতাঙ্গদের ঐতিহ্য, ইউরোপীয় ঐতিহ্য।

এই কথোপকথন প্রকাশ্যে আসার পর সমালোচনার ঝড় বইছে। এই ‘বর্ণবাদী’ সমাবেশের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী টনি বার্ক ও বহু সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী অ্যান আলি।

গতকাল বৃহস্পতিবার এই মন্ত্রী একটি যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন। এতে তাঁরা বলেন, যারা অস্ট্রেলিয়ার সমাজে বিভেদ তৈরি করতে চায়, সামাজিক সম্প্রীতি নষ্ট করতে চায়, তাদের জন্য এ দেশে কোনো স্থান নেই। তাঁরা যাঁরা আধুনিক অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে, তাঁরা এই সমাবেশের বিরুদ্ধে দাঁড়াচ্ছেন। এই ধরনের সমাবেশের চেয়ে অস্ট্রেলিয়ার চেতনার পরিপন্থী আর কিছু হতে পারে না।

সমাবেশের প্রচারপত্রে অভিবাসীদের নিয়ে ভিত্তিহীন ও উসকানিমূলক তথ্য ছড়ানো হয়েছে। এতে বিশেষভাবে ভারতীয় সম্প্রদায়কে নিশানা করা হয়েছে। লেখা হয়েছে, গত পাঁচ বছরে যত ভারতীয় অস্ট্রেলিয়ায় এসেছেন, তা গত ১০০ বছরে আসা গ্রিক ও ইতালীয়দের চেয়েও বেশি।

এ ধরনের বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন অভিবাসী সম্প্রদায়ের নেতারা। অভিবাসী সম্প্রদায়ের মধ্যে, বিশেষ করে ভারতীয়দের মধ্যে এ ধরনের বক্তব্য বর্ণবাদী হামলার আশঙ্কা তৈরি করেছে।

অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যের রাজধানী সিডনি। নিউ সাউথ ওয়েলস পুলিশ জানিয়েছে, তারা সমাবেশের দিন কড়া নজরদারি রাখবে। যেকোনো ধরনের বেআইনি বা বিপজ্জনক আচরণ কঠোরভাবে দমন করবে।

তবে এমন একটি বর্ণবাদী সমাবেশের অনুমতি দেওয়ায় খোদ পুলিশের ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে।