আফগানিস্তানে কট্টরবাদ রুখতে হবে : মোদি

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি
ফাইল ছবি

মধ্য এশিয়ার শান্তি ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বিপদ ক্রমবর্ধমান উগ্রপন্থা ও মৌলবাদ। আফগানিস্তানের সাম্প্রতিক ঘটনাবলি এই চ্যালেঞ্জকে বাড়িয়ে তুলেছে। তাজিকিস্তানের রাজধানী দুশানবেয় সাংহাই কো–অপারেশন অর্গানাইজেশনের (এসসিও) পূর্ণাঙ্গ বার্ষিক সম্মেলনে ভাষণ দেওয়ার সময় গতকাল শুক্রবার এ কথা বলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

চীন ও পাকিস্তানের উপস্থিতিতে কট্টরপন্থা সম্পর্কে এই অভিমত জানিয়ে মোদি বলেন, শান্তি, সুস্থিতি ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় হুমকি দূর করতে এসসিওকে বাড়তি উদ্যোগ নিতে হবে।

এসসিও সম্মেলনে যোগ দিতে গেছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। নিজের জন্মদিনে নয়াদিল্লি থেকে প্রধানমন্ত্রী মোদি ভার্চ্যুয়ালি ভাষণ দেন। তিনি বলেন, ‘উগ্রবাদ ও মৌলবাদের বিরুদ্ধে লড়াই শুধু আঞ্চলিক শান্তি স্থাপন ও পারস্পরিক বিশ্বাস অর্জনের জন্যই জরুরি নয়, আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের স্বার্থেও তা প্রয়োজন। উন্নত দেশগুলোর সঙ্গে পাল্লা দিতে আমাদের অঞ্চলকেও নতুন প্রযুক্তি আহরণ করতে হবে। সেই কারণে পরবর্তী প্রজন্মকে বিজ্ঞান ও আধুনিক যুক্তিপূর্ণ চিন্তাধারার অংশীদার হতে হবে।’

আজ আফগানিস্তানে কী হচ্ছে, আমরা সবাই দেখতে পাচ্ছি। সেখানে আবার শান্তি ফিরিয়ে আনতে হবে। সে জন্য আমাদের সবাইকে একজোট হয়ে কাজ করতে হবে।’
নরেন্দ্র মোদি, ভারতের প্রধানমন্ত্রী

তিনি আরও বলেন, ‘আজ আফগানিস্তানে কী হচ্ছে, আমরা সবাই দেখতে পাচ্ছি। সেখানে আবার শান্তি ফিরিয়ে আনতে হবে। সে জন্য আমাদের সবাইকে একজোট হয়ে কাজ করতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী মানুষের সঙ্গে মানুষের যোগাযোগ ও সংযোগ বৃদ্ধির ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, উগ্রবাদ বা মৌলবাদ রুখতে সংযোগ জরুরি। যোগাযোগ জরুরি। কিন্তু তা কখনো একপক্ষীয় হতে পারে না। দ্বিপক্ষীয় আলোচনা, সহযোগিতা ও স্বচ্ছতাকে সামনে রেখেই তা সম্ভব। এই প্রসঙ্গে পাকিস্তানের মধ্য দিয়ে চীনের অর্থনৈতিক করিডরের উল্লেখ না করে মোদি বলেন, সব দেশের ভৌগোলিক অখণ্ডতাকে সম্মান ও মর্যাদা দেওয়া প্রয়োজন। তিনি বলেন, কট্টরবাদের মোকাবিলায় সর্বগ্রাহ্য যোগাযোগকে ব্যবহার করতে হবে। চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর ভারতের অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্ব নষ্ট করেছে বলে নয়াদিল্লি অভিযোগ করে আসছে।

মধ্য এশিয়ার শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির উল্লেখ করে মোদি বলেন, ‘ইতিহাস পর্যালোচনা করলে আমরা দেখব, এই বিস্তীর্ণ অঞ্চল প্রগতিশীল সংস্কৃতি, মূল্যবোধ ও মধ্যপন্থার এক দুর্গ ছিল। বহু শতক আগে এখানেই সুফিবাদ বিস্তার লাভ করেছিল।

আঞ্চলিক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের দিকে তাকালেই তা আমরা দেখতে পাব। সেই ঐতিহ্যের ওপর দাঁড়িয়েই এসসিওকে উগ্রপন্থা ও কট্টরবাদের বিরুদ্ধে এক গ্রহণযোগ্য অবস্থান নিতে হবে।’ তিনি বলেন, ভারত ও এসসিওর সব সদস্যদেশের ইসলামিক সংস্থার মধ্যেই সেই মধ্যপন্থী, সহনশীল ও সহিষ্ণুতার পরিচয় রয়েছে, তা জোরদার করতে সদস্যদেশগুলোর যোগাযোগ বৃদ্ধি ঘটাতে হবে। এসসিওর নতুন সদস্য হয়েছে ইরান। মোদি সে দেশকে স্বাগত জানান। এ ছাড়া স্বাগত জানান নতুন তিন ‘ডায়ালগ পার্টনার’ সৌদি আরব, মিসর ও কাতারকে।