কংগ্রেসে যোগ দিচ্ছেন কানহাইয়া কুমার
দলবদলের রাজনীতিতে নাম লেখাতে যাচ্ছেন ভারতের বামপন্থী রাজনীতির তরুণ আইকন কানহাইয়া কুমার। কমিউনিস্ট পার্টি ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দিতে যাচ্ছেন তিনি। চলতি সপ্তাহে তাঁর দলত্যাগের সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাতে শনিবার এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী ২ অক্টোবর কানহাইয়া কুমারের কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার কথা ছিল। তবে পরিকল্পনা বদলেছে। আগামী মঙ্গলবারই ভগত সিংয়ের জন্মবার্ষিকীতে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে কংগ্রেসে যোগ দিতে পারেন। এ সময় কানহাইয়া কুমারের সঙ্গে গুজরাটের এমএলএ এবং জনপ্রিয় দলিত নেতা জিগনেশ মেভানিরও কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে।
আগামী বছরের কয়েকটি রাজ্য নির্বাচন ও ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে তরুণদের দলে নেওয়ার চেষ্টা করছে কংগ্রেস। এর মধ্য দিয়ে দলটি ভাবমূর্তি ফেরানোর পাশাপাশি ভারতীয় রাজনীতিতে ক্রম ক্ষীয়মাণ প্রভাব জোরদারের চেষ্টা করছে। কংগ্রেসের পক্ষ থেকে তরুণ আইকনদের দলে আনার চেষ্টায় এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় নাম কানহাইয়া কুমার।
বামপন্থী আদর্শে বিশ্বাসী কানহাইয়া কুমারের বাড়ি বিহারে। রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় জেলে গিয়ে তিনি আলোচনায় আসেন ২০১৬ সালে। ওই সময় কানহাইয়া কুমার নয়াদিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের (জেএনইউ) ছাত্র সংসদের নির্বাচিত সভাপতি ছিলেন।
২০১৬ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি ছিল কাশ্মীরের স্বাধীনতাকামী নেতা আফজাল গুরুর ফাঁসি কার্যকরের চতুর্থ বার্ষিকীর। ভারতীয় পার্লামেন্টে হামলার ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন আফজাল। ওই দিন জেএনইউ ক্যাম্পাসে প্রতিবাদ সভা আয়োজন করা হয়েছিল। সেই সভা থেকে রাষ্ট্রদ্রোহ স্লোগানের অভিযোগ ওঠে। সেই সভার নেতৃত্বে ছিলেন তৎকালীন ছাত্র সংসদের সভাপতি কানহাইয়া কুমার। তাঁর সঙ্গে ছিলেন ছাত্রনেতা উমর খালিদ ও অনির্বাণ ভট্টাচার্য।
পরে এই ৩ সাবেক ছাত্রনেতাসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে মামলার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে পুলিশ। আটক করা হয় কানহাইয়া কুমারকে। তিন সপ্তাহ তিহার জেলে থেকে অন্তর্বর্তী জামিন পেয়ে বেরিয়ে আসেন তিনি। এ ঘটনা ভারতজুড়ে কানহাইয়া কুমারকে তরুণ আইকনে পরিণত করে। ওই সময় ভারতে ‘আজাদি’র স্লোগানের পুনর্জন্ম ঘটে কানহাইয়া কুমারের গলায়।
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিহারের একটি আসন থেকে কানহাইয়া কুমার ভোটে দাঁড়ান। তবে বিজেপির হাই প্রোফাইল প্রার্থী গিরিরাজ সিংয়ের কাছে পরাজিত হন। জয়ী হতে না পারলেও সুবক্তা হিসেবে জাতীয় রাজনীতির মাঠে নিজের অবস্থান আরও পোক্ত করেন কানহাইয়া কুমার। একই সঙ্গে নির্বাচন করতে গিয়ে ৭০ লাখ রুপি গণচাঁদা তুলে আবারও আলোচনার জন্ম দেন তিনি।