কংগ্রেস নেতা ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী সালমান খুরশিদের বাড়িতে দুর্বৃত্তদের আগুন

সালমান খুরশিদ।
ছবি: এএনআই

ভারতের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও জ্যেষ্ঠ কংগ্রেস নেতা সালমান খুরশিদের নৈনিতালের বাড়িতে ভাঙচুর ও আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। ভাঙচুর ও আগুন দেওয়ার পর দুর্বৃত্তরা সেখানে একটি কলিং কার্ড রেখে যান।

সম্প্রতি প্রকাশিত তাঁর নতুন একটি বইয়ে ‘উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের’ ইসলামি জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে তুলনা নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়। এর মধ্যেই এমন ঘটনা ঘটল।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, সালমান খুরশিদের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে শেয়ার করা ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, তাঁর নৈনিতালের বাড়িতে আগুনের দীর্ঘ শিখা, পোড়া দরজা এবং ভাঙচুর করা জানালা। দুজন ব্যক্তি আগুন নেভানোর চেষ্টা করছেন।

নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে কয়েকটি ভিডিও ক্লিপ শেয়ার করেন কংগ্রেসের এই নেতা। ফেসবুকে এক পোস্টে তিনি বলেন, ‘বন্ধুদের জন্য এই দরজাগুলো খোলা রাখার আশা করেছিলাম, যারা এই কলিং কার্ডটি রেখে গেছে। এটা বলা কি এখনো ভুল হবে যে, এটি হিন্দুত্ব হতে পারে না? বিতর্কটা তাহলে এমন। লজ্জা, বলাটাও যথেষ্ট নয়।এখনো আশা করি যে, আমরা একদিন একক স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ হতে পারব এবং একটা বিষয়ে মতানৈক্য করার ব্যাপারেও আমরা একমত হব।’

ছবি: এএনআই

এ দিকে এ ঘটনায় স্থানীয় থানায় একটি মামলা হয়েছে বলে জানায় পুলিশ। কুমায়োন পুলিশের ডিআইজি নিলেশ আনন্দ বার্তা সংস্থা এএনআইকে জানান, এ ঘটনায় ২১ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। রাকেশ কপিল নামে ওই অঞ্চলের স্থানীয় একজন হিন্দুত্ববাদী অধিকারকর্মী ও তাঁর আরও বিশজন সহযোগীকে খোঁজা হচ্ছে বলেও তিনি জানান। এ ঘটনায় পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, গত সপ্তাহে প্রকাশিত হয়েছে অযোধ্যা নিয়ে সালমান খুরশিদের নতুন বই ‘সানরাইজ ওভার অযোধ্যা: নেশন হুড ইন আওয়ার টাইম’।

বইটিতে হিন্দুত্ববাদীর সঙ্গে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) ও বোকো হারামের মতো উগ্র ইসলামি গোষ্ঠীগুলোর তুলনা টেনে তীব্র বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন তিনি। ভারতের শাসক দল বিজেপি প্রকাশ্যেই অভিযোগ করেছিল সালমান খুরশিদ ভারতের হিন্দুদের ধর্মীয় অনুভূতিকে আঘাত করেছেন এবং ‘সাম্প্রদায়িকতার রাজনীতি’ করছেন।

সালমান খুরশিদের এমন মন্তব্যকে টেনে বিজেপি বলছে, কংগ্রেস এখন মুসলমানদের ভোট পেতে ধর্মীয় রাজনীতি শুরু করেছে।

নিজ দলের নেতার সমালোচনার মুখেও পড়েন সালমান খুরশিদ। কংগ্রেস নেতা নবী আজাদ বলেন, ‘আমাদের রাজনৈতিক আদর্শ হয়তো হিন্দুত্ববাদীকে সমর্থন বা বিশ্বাস করে না। তবে আইএস-এর সঙ্গে তুলনা করাটা ঠিক হয়নি বরং অতিরঞ্জিত হয়েছে বিষয়টি।’

এনডিটিভির তথ্যমতে, এই ইস্যুতে সালমান খুরশিদের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে ইতিমধ্যে।