ভারত করোনার টিকা রপ্তানি করবে অক্টোবর থেকে

ভারত আবার করোনার টিকা রপ্তানি শুরু করতে যাচ্ছে। আগামী মাসেই শুরু হবে টিকা রপ্তানি। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডবীয় আজ সোমবার দিল্লিতে নিজের মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা জানিয়েছেন।

চলতি বছরের এপ্রিল মাসে ভারতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ তীব্র হয়ে ওঠে। তখনই ভারত টিকা রপ্তানি বন্ধ করে দেয়। দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের দেশগুলোকে টিকা দেওয়ার জন্য বৈশ্বিক জোট ‘কোভ্যাক্স’ প্রকল্পসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী টিকা সরবরাহ এবং ‘ভ্যাকসিন মৈত্রী’র অধীনে বিভিন্ন দেশকে টিকা উপহার, সব ধরনের রপ্তানিই বন্ধ হয়ে যায়। সরকার তখন জানিয়েছিল, দেশের চাহিদা মেটার পর রপ্তানি শুরু করা হবে।

বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের পুনের সেরাম ইনস্টিটিউটের ‘কোভিশিল্ড’ রপ্তানি নিয়ে চুক্তি হয়েছিল। কিছু টিকা সরবরাহের পর তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বাংলাদেশকে বেশ অসুবিধার মধ্যে পড়তে হয়। বিশেষ করে অসুবিধায় পড়েন যাঁরা কোভিশিল্ডের প্রথম টিকা নেওয়ার পর দ্বিতীয় ডোজের জন্য অপেক্ষায় ছিলেন। বাংলাদেশকে সেই সময় ১৫-১৬ লাখ কোভিশিল্ডের জন্য বহুবার দরবার করতে হয়েছিল।

ভারতের টিকা রপ্তানি আবার শুরু করার সিদ্ধান্ত সেই সময় নেওয়া হলো, যখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যুক্তরাষ্ট্র সফরের জন্য প্রস্তুত। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে মোদি চলতি সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র যাচ্ছেন। সেখানে তিনি চারদেশীয় জোট ‘কোয়াড’-এর শীর্ষ সম্মেলনেও যোগ দেবেন। সেখানে করোনাভাইরাসের টিকা নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা। জাতিসংঘের আসরেও বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে মোদির দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হবে। এসব বৈঠকে টিকা প্রসঙ্গ উঠার আগেই মন্ত্রী রপ্তানি শুরুর কথা জানালেন বলে মনে করা হচ্ছে।

ভারত চলতি বছরের মধ্যেই দেশের প্রায় ৯৫ কোটি প্রাপ্তবয়স্ককে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে। এর মধ্যে ৬১ শতাংশ নাগরিক অন্তত একটি ডোজ নিয়েছেন। ১৭ সেপ্টেম্বর ছিল প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন। সেই দিন আড়াই কোটির বেশি মানুষকে টিকা দেওয়া হয়। মন্ত্রী জানান, অক্টোবরের মধ্যে ৩০ কোটির বেশি টিকা ভারত উৎপাদন করবে। জানুয়ারি মাসের মধ্যে উৎপাদিত হবে ১০০ কোটি টিকা। এপ্রিল মাসে রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়ার আগে ভারত ৯৩টি দেশে মোট সাড়ে ৬ কোটি ডোজ কোভিশিল্ড ও কোভ্যাক্সিন টিকা রপ্তানি করেছিল।