জনগণ তাঁকে চায় কি না, মাঠে সভা করে জানবেন ত্রিপুরার মুখমন্ত্রী
ভারতের উত্তর–পূর্বাঞ্চলীয় ত্রিপুরার বিজেপি দলীয় সরকারে টানাপোড়েন শুরু হয়েছে। মুখমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব শাসন ক্ষমতায় ৩ বছর অতিক্রম করার আগেই দলীয় নেতাদের একাংশের বিদ্রোহের মুখে পড়েছেন। বিপ্লবের ইস্তফার দাবি উঠেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিপ্লব দেব বলেছেন, রাজ্যের মানুষ চাইলে তিনি পদ ছেড়ে দেবেন।
বাঙালি সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজ্য ত্রিপুরায় একটানা ২০ বছর ক্ষমতায় থাকার পর বাম ফ্রন্ট সরকাররে পতন হয় ২০১৮ সালে। এরপর মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন ত্রিপুরার বিজেপি নেতা বিপ্লব কুমার দেব।
মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লবের বিরুদ্ধে বিতর্কিত ও বিভ্রান্তিমূলক মন্তব্যের অভিযোগ উঠতে থাকে ক্ষমতায় বসার পর থেকে। স্বজনপ্রীতিরও অভিযোগ ওঠে। ওঠে দুর্নীতির অভিযোগও।
এসব কারণে ত্রিপুরা রাজ্য বিজেপির একাংশ কার্যত ‘বিদ্রোহ’ ঘোষণা করে বিপ্লবের বিরুদ্ধে। অন্যদিকে বিপ্লবের প্রধান প্রতিপক্ষ সুদীপকেও গত জুন মাসে বিপ্লব সরিয়ে দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পদ থেকে। ফলে বিপ্লব বিরোধিরা আরও বেশি করে শক্তি সঞ্চার করে। দাবি তোলে, ‘বিপ্লব হটাও, বিজেপি বাঁচাও’।
এদিকে ত্রিপুরার দায়িত্বে থাকা বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক বিনোদ সোনকার রাজধানী আগরতলার একটি গেস্টহাউসে গত রোববার বৈঠকে বসেন ত্রিপুরার অন্তর্কলহ রোধের জন্য। কিন্তু সেখানেও বিপ্লবের বিরোধিরা দাবি তোলে তাঁকে সরানোর এবং বিজেপিকে বাঁচানোর। গত বছরের অক্টোবরেও বিপ্লব বিরোধিরা দিল্লিতে গিয়ে তাঁকে সরানোর দাবি তুলেছিল কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে। এবার সেই দাবি আরও জোরদার হয়।
এসব ঘটনার পর মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব গতকাল মঙ্গলবার জানিয়ে দেন, তিনি এবার ত্রিপুরাবাসীর জনাদেশ নেবেন। এই লক্ষ্যে ১৩ ডিসেম্বর বেলা ২টায় রাজধানী আগরতলার বিবেকানন্দ ময়দানে এক সভার আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে তিনি ত্রিপুরাবাসীকে উপস্থিত থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন। সেই সভায় তিনি ত্রিপুরাবাসীর জনাদেশ চাইবেন। মতামত নেবেন। তাঁকে তাঁরা চান কি না? না চাইলে তিনি ত্রিপুরাবাসীর মতকে অগ্রাধিকার দিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে তা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর পদে ইস্তফা দেবেন।