জামিন হলো না পশ্চিমবঙ্গের চার নেতার

কলকাতা হাইকোর্ট
প্রথম আলো ফাইল ছবি

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে চাঞ্চল্যকর নারদা দুর্নীতি মামলায় গ্রেপ্তার চার নেতার জামিন হলো না। আজ সোমবার কলকাতা হাইকোর্টে প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দালের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে ওই চারজনের জামিন বাতিল আদেশের পুনর্বিবেচনার শুনানি হয়। আগামী বুধবার এই বেঞ্চে আবারও শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। ওই দিন পর্যন্ত চার নেতাকে গৃহবন্দী থাকার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

পশ্চিমবঙ্গের ওই চার নেতা হলেন—তৃণমূল কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা, সাবেক মন্ত্রী ও বিধায়ক সুব্রত মুখোপাধ্যায়, তৃণমূল নেতা, কলকাতা পৌর করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও বর্তমান মুখ্য প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম, সাবেক মন্ত্রী ও নবনির্বাচিত তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র এবং কলকাতা পৌর করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও বর্তমান বিজেপি নেতা শোভন চট্টোপাধ্যায়। ১৭ মে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারের পর ১৭ মে রাতেই জামিন পান ওই চার নেতা। কিন্তু পরে ওই রাতেই সিবিআই জামিন বাতিলের আবেদন করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে কলকাতা হাইকোর্ট জামিন বাতিল করেন। এ ছাড়া দলের নেতাদের মুক্তি দাবিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিবিআই কার্যালয়ে গিয়েছিলেন এবং নিজেও গ্রেপ্তার হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু মমতার এই ধরনায় কোনো সুফল মেলেনি।

এরপর গত শুক্রবার প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল ও বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বেঞ্চে ওই চার নেতার জামিন শুনানি হয়। কিন্তু ওই শুনানিতে তাঁরা দুজন ভিন্ন ভিন্ন মত দেন। এর ফলে তাঁদের জামিন ঝুলে যায়।

এই মামলায় আসামিপক্ষের আইনজীবী ছিলেন অভিষেক মনু সিংভি ও সিদ্ধার্থ লুথরা এবং সিবিআইয়ের পক্ষে সলিসিটার জেনারেল তুষার মেহতা। আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি গত শুক্রবার আদালতকে বলেন, জামিন আবেদন নিষ্পত্তি করতে অবিলম্বে বৃহত্তর বেঞ্চ গঠন করা হোক। অন্যথায় তৃতীয় বিচারপতির কাছে পাঠানো হোক মামলাটি।

এরপরই আদালত নতুন বেঞ্চ গঠনের সিদ্ধান্ত নেন। এ ছাড়া আদালত বলেন, এই চার নেতা তাঁদের নিজ নিজ বাড়িতে গৃহবন্দী থাকবেন। এ সময় তাঁরা চিকিৎসা থেকে অন্য সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাবেন। তবে তাঁদের থাকতে হবে সিবিআইয়ের নিয়ন্ত্রণে।
আদালত বলেন, এ সময় চার নেতা বাইরে বের হতে পারবেন না। কথা বলতে পারবেন ফোনে ও ভার্চ্যুয়ালি। নির্দেশও দিতে পারবেন দপ্তরের বিভিন্ন কাজের।

এদিকে আদালতের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দালের নেতৃত্বে নতুন বেঞ্চে স্থান পান বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায়, বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন ও বিচারপতি সৌমেন সেন। এই বেঞ্চেই আজ শুনানি হয়।

২০১৬ সালের মার্চে রাজ্য বিধানসভার নির্বাচনের প্রাক্কালে ১৩ তৃণমূল নেতা-মন্ত্রীর ঘুষ নেওয়ার এক কেলেঙ্কারি ফাঁস হয়। এরপর কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে ২০১৭ সালে মার্চে এই নারদা কেলেঙ্কারি মামলার তদন্তের ভার দেওয়া হয় ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা সিবিআইর হাতে। সেই মামলায় আসামি করা হয় পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন চার মন্ত্রীসহ সাংসদ, বিধায়ক ও অন্য তৃণমূল নেতাদের।