টিকার অপচয় বন্ধের নির্দেশ দিলেন মোদি

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি
ফাইল ছবি: রয়টার্স

টিকার অপচয় বন্ধ হওয়া অত্যন্ত জরুরি। সে জন্য স্থানীয়ভাবে যা প্রয়োজন জেলা শাসকদের তা করতে হবে। ভারতের ৮ রাজ্যের মোট ৪৬টি জেলার শাসকদের উদ্দেশ্যে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।  

নরেন্দ্র মোদি বলেন, করোনার টিকার জোগান প্রতিদিন বাড়ানো হচ্ছে। দ্রুত আরও বাড়ানোর সব রকম চেষ্টা সরকার করছে। কিন্তু জেলা শাসকদের টিকার অপচয়ও বন্ধ করতে হবে। সংক্রমণ রোধে কী কী করা দরকার সে বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী জেলা শাসকদের অভিমতও জানতে চান।

গত শুক্রবার জেলা শাসকদের সঙ্গে ওই বৈঠকের সময় কোনো কোনো রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীও উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক পরিচালনা করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। প্রসঙ্গত চলতি মাসে ভোট বিপর্যয়ের পর এই প্রথম দুই নেতার প্রকাশ্যে একত্রে আসা।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী এমন সময় বৈঠক করলেন যখন দেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রকোপ খানিক কমের দিকে। দৈনিক ৪ লাখের বেশি সংক্রমণের জায়গায় কদিন ধরে সংক্রমণের হার কমছে। গত ২৪ ঘণ্টায় তা আড়াই লাখের কিছুটা বেশি। কিন্তু লক্ষণীয়, সংক্রমণের হার কমলেও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে। ২৪ ঘণ্টায় দেশে মৃত্যু হয়েছে ৪ হাজার ৩২৯ জনের।

করোনাভাইরাসের প্রথম ঢেউ ভারতের বড় শহরে মোটামুটি আবদ্ধ ছিল। দ্বিতীয় ঢেউ ছোট ও মফস্বল শহরে ধাক্কা দিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের সাবধানবাণী, সম্ভাব্য তৃতীয় ঢেউ গ্রামে পৌঁছাবে। এলাহাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতিদের কণ্ঠেও শোনা গেছে তারই সুর।

এক মামলার শুনানি চলাকালীন উত্তর প্রদেশ হাইকোর্টের এলাহাবাদ বেঞ্চের দুই বিচারপতি গতকাল সোমবার মফস্বল ও গ্রামীণ এলাকার স্বাস্থ্য পরিষেবা ও কোভিড মোকাবিলার অবকাঠামো নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে যা বলেন, প্রচলিত কথ্য হিন্দিতে তাকে বলে ‘রাম ভরোসে’। অর্থাৎ, ‘ভগবান ভরসা’। সংবাদ সংস্থার খবর অনুযায়ী তাঁরা বলেন, এখনই নজর না দিলে গ্রামের মানুষদের ঘোর বিপদের মুখে পড়তে হবে।

উত্তর প্রদেশ ও বিহারের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত গঙ্গায় শয়ে শয়ে মানুষের মৃতদেহ উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। আশঙ্কা, কোভিডে মৃত মানুষদের দাহ বা দাফন না করে গঙ্গায় ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে। কোভিডের আঁচের রেশ উত্তর প্রদেশের পঞ্চায়েত ভোটেও পাওয়া গেছে। বিজেপিকে ছাপিয়ে বেশি আসন জিতেছে বিরোধী সমাজবাদী পার্টি। আগামী বছর ফেব্রুয়ারিতে এই রাজ্যে বিধানসভার ভোট। তার আগে তৃতীয় ঢেউয়ের হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন বিশেষজ্ঞরা। এই অবস্থাতেই জেলা শাসকদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক।

এই পরিস্থিতিতে কোভিডের সম্ভাব্য তৃতীয় ঢেউ নিয়ে বিজেপি-কংগ্রেস বিবাদ শুরু হয়ে গেছে। বিজেপি সভাপতি জে পি নাড্ড ও মুখপাত্র সম্বিত পাত্রের দাবি, দেশের বদনাম করতে কংগ্রেসের নেতৃত্ব কোভিডের তৃতীয় প্রজাতিকে ‘মোদি স্ট্রেইন’ বা ‘ইন্ডিয়া স্ট্রেইন’ নাম দিতে চাইছে। কুম্ভ মেলাকে বলা হচ্ছে ‘সুপার স্প্রেডার কুম্ভ’। এ জন্য তারা একটা টুলকিট তৈরি করেছে। কংগ্রেস এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, কোভিডের মোকাবিলায় ব্যর্থ বিজেপি এখন কংগ্রেসকে দোষের ভাগী করতে চাইছে এই ধরনের অপপ্রচারের মাধ্যমে। কংগ্রেসের পক্ষে বলা হয়েছে, বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে জালিয়াতি ও মিথ্যা খবর (ফেক নিউজ) প্রচারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হবে।