তালেবানের পক্ষে বক্তব্য রেখে আসামে গ্রেপ্তার ১৪

হাতকড়া
প্রতীকী ছবি

তালেবানের সমর্থনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করার অভিযোগে শনিবার ভারতের আসামে ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে রাজ্য পুলিশ। এর আগে তালেবানের প্রশংসা করে বক্তব্য দেওয়ায় ভারতে মুসলমান সম্প্রদায়ের নিজস্ব আইনের তত্ত্বাবধায়ক সংগঠন অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের সদস্যদের বিরুদ্ধে উত্তর প্রদেশে মামলা হয়। পশ্চিমবঙ্গের কিছু এলাকায় তালেবানের সমর্থন থাকলেও, এখন পর্যন্ত কেউ গ্রেপ্তার হননি বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।

রাজ্য পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আসামের ১১টি জেলা থেকে ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে গ্রেপ্তারকৃতদের পরিচয় জানানো হয়নি। পুলিশ বলছে গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা তালেবানের পক্ষে বা ভারতের বিপক্ষে বক্তব্য দিয়েছে। তাঁদের মধ্যে কয়েক জন মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীও রয়েছে।

আসাম পুলিশের উপপরিদর্শক জেনারেল ভায়োলেট বড়ুয়া সামাজিক মাধ্যমে বলেন, তালেবানের সমর্থনে সামাজিক মাধ্যমে মন্তব্যের জন্য জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে আসাম পুলিশ কড়া ব্যবস্থা নিচ্ছে। যারা এই ধরনের মন্তব্য করেছে তাঁদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি (ক্রিমিনাল) মামলা দায়ের করা হচ্ছে। এ বিষয়ে কিছু চোখে পড়লে পুলিশকে জানানোর জন্য আহ্বান করেন তিনি।

পশ্চিমবঙ্গের পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বেশ কিছু জায়গায় অল্পবয়স্কদের মধ্যে উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা গিয়েছে। তবে এখনো পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। দক্ষিণ ভারতের কেরালাতেও বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে, কারণ বিজেপি নেতা রাম মাধব এক বৈঠকে বলেছেন ১৯২১ সালে উত্তর ও মধ্য কেরালাতে হওয়া মালাবার বা মাপিলা বিদ্রোহে হিন্দুদের হত্যা করা হয়েছিল। এই ঘটনাকে তিনি ভারতবর্ষের ‘তালেবানি মনোভাব’ বলে চিহ্নিত করেন। হিন্দু সম্প্রদায়ের জমিদার শ্রেণিকে হত্যা করা হলেও, সেই বিদ্রোহ মূলত ব্রিটিশ শাসকের বিরুদ্ধে ছিল বলে কেরালার বিভিন্ন সংগঠন জানিয়েছে। তাদের বক্তব্য, সেই সময় হিন্দু জমিদার শ্রেণি ব্রিটিশ শাসকের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিল।

এ দিকে সম্প্রতি উত্তর প্রদেশের সমাজবাদী দলের সাংসদ সাজ্জাদ নোমানীর বিরুদ্ধে দেশদ্রোহ, বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা ও ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে মামলা করেছে ওই রাজ্যের পুলিশ প্রশাসন। অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের প্রধান মুখপাত্র সাজ্জাদ নোমানী কয়েক দিন আগে তালেবানকে তাদের জয়ের জন্য অভিনন্দন জানিয়ে একটি ভিডিও-বার্তা দিয়েছিলেন। পরে অবশ্য তিনি বলেছেন, তাঁর বক্তব্যকে বিকৃত করা হয়েছে। মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড বলছে, নোমানীর বক্তব্যের সঙ্গে তাঁদের কোনো সম্পর্ক নেই। মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের সচিব মাওলানা উমরাইন মাহাফুজ রহমানিও একই বক্তব্য রেখেছিলেন এবং বোর্ড সেই বক্তব্যকেও ব্যক্তিগত বলে জানিয়েছে।

ভারত-শাসিত কাশ্মীরেও আফগানিস্তানে তালেবানের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বেশ উচ্ছ্বাস দেখিয়েছেন মানুষ। ভারতের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও আফগানিস্তানের ঘটনায় আলোড়ন সৃষ্টি করেছে এবং এই ঘটনার পক্ষে-বিপক্ষে নানা মতামত লক্ষ্য করা যাচ্ছে।