ত্রিপুরার রাজনীতি কি নতুন মোড় নিচ্ছে

ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব সরকারকে সরিয়ে দেওয়ার গুঞ্জন উঠেছে
ফাইল ছবি: এএনআই

ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবের ক্ষমতা কি ফুরিয়ে আসছে? এই প্রশ্ন এখন ত্রিপুরার রাজনৈতিক মহলে ঘুরপাক খাচ্ছে। একই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে ত্রিপুরার সাধারণ জনগণের মনে—তবে কি বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব মুখ্যমন্ত্রীকে সরিয়ে দেবে?

এর আগে রাজনৈতিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে কর্ণাটক ও হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীকে সরিয়ে দিয়েছিল বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। সম্প্রতি বিভিন্ন বেফাঁস মন্তব্য করে রাজ্যজুড়ে সমালোচিত হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। এবার ত্রিপুরার সুধীসমাজ ও দলের একাংশের নেতারাও বিপ্লবকে সরিয়ে রাজ্যে নতুন মুখ্যমন্ত্রী বসানোর দাবি তুলেছেন।

মাঠের রাজনীতিতেও সম্প্রতি বেকায়দায় পড়েছেন বিপ্লব দেব। গত সোমবার ত্রিপুরা সফরে এসে বিপ্লব দেবকে হটানোর ডাক দেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ও পশ্চিমবঙ্গের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবারের সফরে ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায় গিয়ে রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনে জয়ের ডংকা বাজিয়ে এসেছেন অভিষেক। শুধু তা-ই নয়, ত্রিপুরার বেশ কজন বিজেপি নেতাকে দলে ভিড়িয়ে এনেছেন তিনি। এরপরেই শোনা যায় বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব দলকে চাঙা রাখতে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লবকে সরিয়ে বিজেপির অন্য কোনো বিধায়ককে ওই পদে বসাতে পারেন।

কিন্তু বিপ্লবকে সরিয়ে কে মুখ্যমন্ত্রীর পদে আসবেন, তা নিয়েও রয়েছে বিতর্ক। বিজেপির রাজ্য শাখার একাংশের নেতারা মনে করছেন, এই পদে বর্তমান উপমুখ্যমন্ত্রী ও ত্রিপুরার রাজপরিবারের সদস্য জিষ্ণু দেববর্মণকে আনা হতে পারে। এখন পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী পদের জন্য জিষ্ণু দেববর্মণেরই পাল্লা ভারী রয়েছে। এদিকে মুখ্যমন্ত্রী পদের জন্য বিজেপির বর্তমান রাজ্য সভাপতি মানিক সাহা এবং সাবেক মন্ত্রী সুদীপ রায় বর্মণের নামও রয়েছে।

ত্রিপুরায় সর্বশেষ বিধানসভা নির্বাচন হয়েছিল ২০১৮ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি। ওই নির্বাচনে বিজেপি ৩৬টি আসন পেয়ে সরকার গঠন করলে বিপ্লব কুমার দেব মুখ্যমন্ত্রী হন। সিপিএম ১৬টি এবং আঞ্চলিক দল আইপিএফটি পেয়েছিল ৭টি আসন।

এদিকে ২০২৩ সালের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনকে ঘিরে ভারতের ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের সমীক্ষা সংস্থা আইপ্যাক ত্রিপুরায় সমীক্ষা চালাচ্ছে। সমীক্ষার প্রাথমিক তথ্যে সংস্থাটি বলছে, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি ত্রিপুরার জনগণের কিছুটা সমর্থন থাকলেও এখনো বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে বিপ্লব দেবের বিকল্প তৈরি হয়নি।

তবে আইপ্যাক এটাও বলছে, বিজেপির বিকল্প হিসেবে ত্রিপুরাবাসী বামফ্রন্টকে এখন আর পছন্দ করছেন না। একসময় কংগ্রেসের দুর্গ বলে পরিচিত ত্রিপুরা পরবর্তী সময়ে বামফ্রন্টের ঘাঁটিতে পরিণত হয়। এরপর বিজেপি ক্ষমতায় আসার আগে টানা ২০ বছর ত্রিপুরা শাসন করে বামফ্রন্ট।