দার্জিলিং চা হুমকির মুখে

দার্জিলিং চায়ের খ্যাতি দুনিয়াজুড়ে। কিন্তু ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দার্জিলিং পাহাড়ে অস্থিরতা শুরু হয়েছে গত জুন থেকে। ফলে এই বহুমূল্য চায়ের উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। ব্যবসায়ীদের আশঙ্কা, দার্জিলিং চায়ের মজুত অচিরেই ফুরাবে।

হিমালয়ের পাদদেশে দার্জিলিংয়ের ৮৭টি বাগানে এমনও কিছু চা-গাছের ঝোপ আছে, যেগুলো ১৫০ বছরের পুরোনো। স্কটিশ শল্যচিকিৎসক আর্থার ক্যাম্পবেল ১৮৪১ সালে ওই এলাকায় চায়ের চাষ শুরু করেছিলেন। তবে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয় ১৮৫০-এর দশকে। এখন সেখানে উৎপাদিত চায়ের মধ্যে বিশ্বের ‘সবচেয়ে দামি’ চাও আছে, যার দাম কখনো কখনো প্রতি কেজি ১৮০০ মার্কিন ডলার পর্যন্ত পৌঁছায়। মূলত যুক্তরাজ্য, ইউরোপ এবং জাপানে এই দার্জিলিং চায়ের রপ্তানি বেশি।

স্থানীয় নেপালি ভাষাভাষী গোর্খা জনগোষ্ঠী পৃথক রাজ্যের দাবিতে সহিংস আন্দোলন শুরু করলে দার্জিলিং এলাকায় চলতি জুন-আগস্ট মৌসুমে চা-পাতা তোলার কাজ বন্ধ আছে। শ্রমিকদের বেশির ভাগই গোর্খা সম্প্রদায়ের মানুষ। ফলে দার্জিলিংয়ে এবার চা উৎপাদন প্রায় ৯০ শতাংশ কমে গেছে। অন্যান্য বছর এই সময় সেখান থেকে ৮০ লাখ কেজি চা রপ্তানি হয়ে থাকে। চলমান পরিস্থিতিতে স্থানীয় চা শিল্পের যে ক্ষতি হয়েছে, তা পুষিয়ে নিতে বছর কয়েক লাগতে পারে। এমনিতে এবার দার্জিলিং চায়ের দাম অনেক বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। অশান্তি চলতে থাকলে ব্যবসায়ীরা চার কোটি ডলার লোকসানের আশঙ্কা করছেন। এই মুহূর্তে শ্রমিকেরা কাজে ফিরলেও চা উৎপাদনপ্রক্রিয়া পুরোদমে শুরু করতে মাস কয়েক লেগে যাবে। তবে সংকট নিরসনের কোনো ইঙ্গিত আপাতত পাওয়া যাচ্ছে না।

দার্জিলিং টি অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান পরামর্শক সন্দীপ মুখার্জি বিবিসিকে বলেন, ‘আমরা এত খারাপ সময় কখনো পার করিনি। নতুন চায়ের সরবরাহ নেই, ভবিষ্যতের অনেক ফরমাশ বাতিল হয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে দার্জিলিং চা আর পাওয়া যাবে না।’