নজর কাড়তে উত্তর প্রদেশে বিমানবন্দর করছেন মোদি

নরেন্দ্র মোদি

ভারতের রাজধানী দিল্লির অদূরে উত্তর প্রদেশের নয়ডায় আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কৃষক মন জেতার চেষ্টা চালিয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার এই অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, এই বিমানবন্দর চালু হলে সবচেয়ে বেশি লাভবান হবে পশ্চিম উত্তর প্রদেশের কৃষক সমাজ। তাঁরা তাঁদের উৎপাদিত ফল, সবজিসহ সব ধরনের ফসল দেশ-বিদেশে সরাসরি রপ্তানি করতে পারবেন। কৃষক ছাড়াও উপকৃত হবেন আলীগড়, মিরাট, মথুরা, আগ্রা, বিজনৌর, বেরোলি, মোরাদাবাদের মতো শহরের মানুষজন।

দেড় বছর ধরে চলা কৃষক আন্দোলন পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরাখন্ড, রাজস্থান ছাড়া প্রবল প্রভাব ফেলেছে উত্তর প্রদেশের পশ্চিমাঞ্চলে। এই কারণে সামনের বছরের গোড়ায় উত্তর প্রদেশের বিধানসভা নির্বাচন শাসক বিজেপির কপালে চিন্তার গভীর ভাঁজ ফেলেছে। পরিস্থিতির সামাল দিতে প্রধানমন্ত্রী সচেষ্ট। ক্ষতির সামাল দিতে কিছুদিন আগে বিতর্কিত তিন কৃষি আইন প্রত্যাহারের কথা ঘোষণা করেছেন। এখন চেষ্টা চালাচ্ছেন আন্দোলনরত কৃষকদের মন জেতার।

দিল্লির নিকটবর্তী নয়ডার জেওয়ারে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে তাই তিনি টেনে আনলেন কৃষকদের সুবিধার প্রসঙ্গ। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই বিমানবন্দরের জন্য কর্মসংস্থান হবে লক্ষাধিক মানুষের। সুফল পাবেন পশ্চিম-উত্তর প্রদেশের মানুষজন।

প্রধানমন্ত্রী যেমন কৃষকদের মন জিততে মরিয়া, কৃষককুল তেমন তাঁদের দাবি আদায়ে চাপ বাড়িয়ে চলেছেন। আজ শুক্রবার কৃষকদের দিল্লি অবরোধের এক বছর পূর্ণ হচ্ছে। এই উপলক্ষে সংযুক্ত কিষান মোর্চা দিল্লির তিন সীমান্তে কৃষকদের উপস্থিতি বাড়ানোর কর্মসূচি নিয়েছে। ২৬ নভেম্বর সিংঘু, টিকরি ও গাজিপুর সীমান্তে জমায়েতের জন্য পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরাখন্ড, রাজস্থান ও উত্তর প্রদেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ট্রাক্টরে কৃষকেরা দিল্লি আসতে শুরু করেছেন। মোর্চা নেতাদের ধারণা, তিন সীমান্তে লক্ষাধিক কৃষকের সমাবেশ ঘটবে। পরের দিন ২৭ নভেম্বর মোর্চা নেতৃত্ব বৈঠক করে আন্দোলনের পরবর্তী পদক্ষেপ নেবেন।

মোর্চা নেতা হান্নান মোল্লা গতকাল প্রথম আলোকে জানান, তাঁদের পরবর্তী পদক্ষেপ নির্ভর করছে প্রধানমন্ত্রীর ওপর। তিনি বলেন, মোর্চার পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তাতে কৃষকদের দাবিগুলো জানানো হয়েছে। বলা হয়েছে কৃষকদের সঙ্গে এই নিয়ে আলোচনায় বসতে। শুক্রবারের মধ্যে সেই চিঠির জবাব এলে একরকম। সরকার আলোচনা করতে রাজি হলে একরকম, না হলে অন্য রকম। সে ক্ষেত্রে সংসদীয় অধিবেশন চলাকালে মোর্চা আন্দোলনের গতি-প্রকৃতি ঠিক করবে। শনিবার সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আজ শুক্রবার দিল্লির তিন সীমান্তে জমায়েত ছাড়াও প্রতিটি রাজ্যের রাজধানীতে কৃষকেরা সমাবেশ করবেন।