পশ্চিমবঙ্গে আঘাত হানতে পারে ইয়াস

ওডিশার পাশাপাশি ঘূর্ণিঝড় ইয়াস পশ্চিমবঙ্গে আঘাত হানতে পারে। ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় তাই আগে থেকেই প্রস্তুতি নিচ্ছে রাজ্য সরকার।

অধিকাংশ আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল বলছে, ভারত ও বাংলাদেশের সুন্দরবন অংশের ওপর দিয়ে স্থলভাগে প্রবেশ করবে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস

ঘূর্ণিঝড় ইয়াস অভিমুখ পরিবর্তন করে এবার পশ্চিমবঙ্গের দিকে ধেয়ে আসছে। আঘাত হানতে পারে ভারতের আরেকটি সমুদ্র উপকূলবর্তী রাজ্য ওডিশায়। বাংলাদেশেও আঘাত হানতে পারে এই ঘূর্ণিঝড়। কলকাতার আলীপুর আবহাওয়া দপ্তর সেই ইঙ্গিতই দিয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় পশ্চিমবঙ্গ সরকার সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। সতর্কতা জারি করেছে রাজ্যের গোটা সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকায়। গতকাল বিকেল থেকে পশ্চিমবঙ্গের দিঘা, মন্দারমণি, বকখালি, তাজপুর এলাকায় মাইকে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সমুদ্রতীরের বাসিন্দাদের বিশেষ করে নিম্নাঞ্চলে বসবাসকারী মানুষকে ইতিমধ্যে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ইয়াস আঘাত হানার আগে যেন তারা নিরাপদ স্থান বা সাইক্লোন সেন্টারে আশ্রয় নেয়। রাজ্য সরকারও ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় পর্যাপ্ত পরিমাণ খাদ্য মজুত রেখেছে। ঘূর্ণিঝড়ে ভেঙে যাওয়া গাছপালা যাতে দ্রুত কেটে সরিয়ে ফেলা যায়, সে জন্য বিশেষ টিম তৈরি করা হয়েছে। অন্যদিকে কলকাতাসহ রাজ্যের বিদ্যুৎ বিতরণ কর্তৃপক্ষ এই ঝড় মোকাবিলায় পর্যাপ্ত ব্যবস্থাও গ্রহণ করেছে।

আবহাওয়া দপ্তর বলছে, গতকাল শনিবারই বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ তৈরি হয়েছে। আজ রোববার তা গভীর নিম্নচাপে পরিণত হচ্ছে। কাল সোমবার সেই নিম্নচাপ তৈরি হবে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে। পশ্চিমবঙ্গ এবং এর দুই পাশে থাকা ওডিশা ও বাংলাদেশে আঘাত হানতে পারে ইয়াস।

আবহাওয়া দপ্তর জানায়, ইয়াসের প্রভাবে কাল সন্ধ্যা থেকেই ওডিশা ও পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। এর সর্বোচ্চ গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার। আর আগামী মঙ্গলবার সমুদ্র উপকূলবর্তী জেলাগুলোতে প্রথমে হালকা ও মাঝারি এবং পরে ভারী বৃষ্টি হতে পারে।

আর সন্ধ্যায় উপকূলীয় এলাকায় ঘণ্টায় ৫০ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। সর্বোচ্চ গতিবেগ হতে পারে ৭০ কিলোমিটার। বুধবার শুরু হতে পারে প্রবল বৃষ্টিপাত। সেদিন ঝড়ের গতিবেগ হতে পারে ৯০ থেকে ১০০ কিলোমিটার। আর বেলা গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে সেই ঝড়ের বেগ বেড়ে দাঁড়াতে পারে ১৫৫ থেকে ১৬৫ কিলোমিটার পর্যন্ত।

ইতিমধ্যে বলা হয়েছে, গতবারের ঘূর্ণিঝড় আম্পানের চেয়ে এবার এই ইয়াস আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। তাই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী আগেভাগেই পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। বলেছেন, ঘূর্ণিঝড় পর্যবেক্ষণ ও নানা প্রস্তুতি সরেজমিনে দেখতে তিনি ঘূর্ণিঝড়ের আগেই সারা রাত রাজ্য সচিবালয় নবান্নে অবস্থান করবেন।