পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভার ভোটে এক হয়ে লড়বে সিপিএম–কংগ্রেস

সিপিএম ও কংগ্রেস

পশ্চিমবঙ্গে আগামী বছর অনুষ্ঠেয় বিধানসভার নির্বাচনে এক হয়ে লড়বে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্ক্সবাদী) বা সিপিএম ও কংগ্রেস। সিপিএমের দুই দিনের বৈঠকের গতকাল শনিবার এ কথা জানানো হয়। ভার্চ্যুয়াল বৈঠকের পর সিপিএমের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সীতারা ইয়েচুরি বলেছেন, ‘বিজেপি এবং তৃণমূলকে মোকাবিলা করার জন্য আমরা কংগ্রেসের সঙ্গে নির্বাচনী জোট করেছি।’

সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির এখন সদস্যসংখ্যা ৯৫। আর পলিটব্যুরোর সদস্যসংখ্যা ১৭। কেন্দ্রীয় কমিটির এই বৈঠকে উপস্থিত ৮ জন সদস্য কংগ্রেসের সঙ্গে জোট গড়ার প্রস্তাবে সায় দেননি। কেন্দ্রীয় কমিটির অধিকাংশ সদস্যের সমর্থনে প্রস্তাবটি পাস হয়।

আগামী বছর এপ্রিল-মে মাসে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য বিধানসভার নির্বাচন হওয়ার কথা। এই একই সময় আসাম, কেরালা, তামিলনাড়ু ও পদুচেরি বিধানসভারও নির্বাচন হওয়ার কথা। তবে সিপিএম বলেছে, কংগ্রেসের সঙ্গে তাদের জোট হচ্ছে আসাম, তামিলনাড়ু, পদুচেরি ও পশ্চিমবঙ্গে। কেরালায় কংগ্রেসের সঙ্গে জোট হচ্ছে না। সেখানে এই দুই দল আলাদাভাবে একে অপরের বিরুদ্ধে লড়বে। এ প্রসঙ্গে সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি বলেছেন, রাজ্যভিত্তিক পরিস্থিতি আলাদা। এক রাজ্যের সঙ্গে অন্য রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এক নয়। তাই কেরালা কংগ্রেসের সঙ্গে জোট হয়নি। সেখানে উভয় দলের সম্মতিতেই আলাদাভাবে লড়বে এই দুই দল।

প্রসঙ্গক্রমে ইয়েচুরি এ কথাও বলেছেন, জ্যোতি বসুর আমলেও বাংলায় সিপিএম-কংগ্রেস লড়াই হয়েছে। তবে সেদিনের পরিস্থিতি আর আজকের পরিস্থিতি এক নয়, আলাদা। তাই কেবল কেরালায় জোট হয়নি। আলাদাভাবে লড়াই হবে সেখানে।
সিপিএম চায়, পশ্চিমবঙ্গে তাদের করা এ জোটে শামিল হোক ভারতের গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ শক্তি।

পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেস তাদের দ্বিতীয় মেয়াদ পার করছে। তৃণমূলের বিরুদ্ধে বড় প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড়িয়ে গেছে বিজেপি। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি এই রাজ্যের ৪২টি আসনের মধ্যে ১৮টিতে জয়ী হয়। শুধু তা-ই নয়, বিধানসভাভিত্তিক ফলাফলে বিজেপি ২৯৪ আসনের মধ্যে ১২১টিতে এগিয়ে ছিল। এই নির্বাচনের ফলাফলের পর বিজেপি ২০২১ সালে ক্ষমতায় যাওয়ার লক্ষ্য নিয়ে রাজ্যব্যাপী প্রচারাভিযান শুরু করেছে। এই সময়ে সিপিএম ও কংগ্রেসের জোট হওয়ার ফলে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে একটি ভিন্ন ধারার সৃষ্টি হলো।