পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় হাতাহাতি
পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার রামপুরহাটে ১০ জনকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনা নিয়ে আলোচনার দাবিতে রাজ্য বিধানসভায় মারপিটের ঘটনা ঘটল। আজ সোমবার এ দাবিতে ক্ষমতাসীন তৃণমূল ও বিরোধী দল বিজেপির মধ্যে এ মারপিটের ঘটনা ঘটে। এতে নাক ফেটে যায় তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদারের। তাঁকে পিজি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আজ ছিল বিধানসভার বাজেট অধিবেশনের শেষ দিন। বিরোধী দলের নেতা বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীর ভাষণ দেওয়ার কথা ছিল আজ। অধিবেশন শুরু হলে শুভেন্দু অধিকারী তাঁদের আলোচনার জন্য দুই ঘণ্টা সময় চেয়ে দাবি করেন, আজ রামপুরহাট হত্যাকাণ্ড ও রাজ্যে আইনশৃঙ্খলার অবনতির প্রসঙ্গে আলোচনার সুযোগ দিতে হবে। এই হত্যাকাণ্ডের পর মুখ্যমন্ত্রী কোনো বিবৃতি দেননি। তৃণমূল মুখ খোলেনি বিধানসভায়। তাই তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর বিবৃতির পাশাপাশি রামপুরহাট–কাণ্ড নিয়ে আলোচনার দাবি তোলেন।
কিন্তু বিধানসভা স্পিকার সেই দাবি খারিজ করে দিলে প্রতিবাদ করেন বিজেপির বিধায়কেরা। তাঁরা ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। একপর্যায়ে তাঁরা স্পিকারের চেয়ারের দিকে এগিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে গেলে শুরু হয় তৃণমূল–বিজেপির বিধায়কদের মধ্যে কথা–কাটাকাটি, হাতাহাতি এবং শেষ পর্যায়ে মারামারি। একপর্যায়ে উভয় দলের বিধায়কেরা একে অপরের ওপর চড়াও হয়। শুরু হয় মারপিট। বিজেপি বলেছে, বিধানসভার বিজেপির দলীয় মুখ্য সচেতক মনোজ টিগ্গারের জামা ছিঁড়ে দেওয়া হয়। কিলঘুষি মারা হয়,আহত করা হয়েছে। পরে অবশ্য বিজেপির বিধায়কেরা বিধানসভার অধিবেশন থেকে ওয়াকআউট করেন।
এ ঘটনায় আহত অসিত মজুমদার দাবি করেছেন, তাঁকে বিজেপির বিধায়ক ও বিধানসভার বিরোধী দলের নেতা শুভেন্দু অধিকারী ঘুষি মেরে আহত করেছেন।
অন্যদিকে বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেছেন, তাঁর দলের আট বিধায়ককে মেরেছেন তৃণমূল বিধায়কেরা। তিনি আরও দাবি করেছেন, তাঁদের বিধায়ক সুশীল বর্মণ, লক্ষণ বাড়ই, চন্দা বাউরি, তাপসী মণ্ডলকে বেদম মেরেছে তৃণমূলের বিধায়কেরা। আহত বিধায়কদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে।
এ সময় তৃণমূল বিধায়ক ও কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বিধানসভায় এই ন্যক্কারজনক ঘটনার জন্য বিজেপিকে দায়ী করে বিজেপির এই মারপিটের সঙ্গে যুক্ত বিধায়কদের অবিলম্বে বহিষ্কারের দাবি তোলেন। পরে বিধানসভার স্পিকার বিরোধী দলের নেতা শুভেন্দু অধিকারী, বিজেপির দলের মুখ্য সচেতক মনোজ টিগ্গা, বিধায়ক শংকর ঘোষ, নরহরি মাহাত ও দীপক বর্মণকে বিধানসভার অধিবেশন থেকে বহিষ্কার বা সাসপেন্ড করেন।