বাজপেয়ী ও মোদির বিজেপির মধ্যে কোনো মিল নেই

ভারতের রাজনীতিতে শীর্ষস্থানীয় নেতা-নেত্রীদের পরামর্শদাতারা সব সময়ই নানা পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকেন। তাঁদের ক্ষমতা সীমাহীন, প্রভাব অকল্পনীয়। ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এবং ভাষণ-রচনাকার মুম্বাই নিবাসী সুধীন্দ্র কুলকার্নি তাদেরই একজন। উপপ্রধানমন্ত্রী লালকৃষ্ণ আদভানির রাজনৈতিক কৌশলী হিসেবেও তিনি কাজ করেছেন। সুধীন্দ্র কুলকার্নিকে ভারতের রাজনীতির এক বিচক্ষণ পর্যবেক্ষক এবং ভাষ্যকার বলে মনে করা হয়। সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে মুম্বাইয়ে সুশীল সমাজের বৈঠকের ব্যবস্থা করেছিলেন কুলকার্নি। আসন্ন পাঁচ রাজ্যের নির্বাচন, বিজেপি-বিরোধী দলগুলোর কাছাকাছি আসার সম্ভাবনাসহ নানা বিষয়ে সুধীন্দ্র কুলকার্নি কথা বলেছেন। টেলিফোনে তাঁর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন প্রথম আলোর কলকাতা সংবাদদাতা শুভজিৎ বাগচী।

সুধীন্দ্র কুলকার্নি

প্রশ্ন :

প্রথম আলো: সম্প্রতি আপনাকে দেখা গেল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে মুম্বাইয়ে, সুশীল সমাজের সঙ্গে বৈঠকে। আপনার কী ভূমিকা ছিল?

সুধীন্দ্র কুলকার্নি: আমি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নই। যদিও প্রচারমাধ্যমে বলা হয়েছে আমি তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছি। এটা ঠিক নয়। তবে যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী বাজপেয়ীর মন্ত্রিসভায় ছিলেন, সেই সময় থেকেই আমি তাঁর গুণমুগ্ধ। আমি মনে করি, ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে যে বিজেপিবিরোধী জোট তৈরি হবে, তাতে মমতার বড় ভূমিকা থাকবে। সম্প্রতি তিনি যখন মুম্বাইয়ে আসেন, তখন আমি, কবি জাভেদ আখতার এবং আইনজীবী মজিদ মেমন মিলে মুম্বাইয়ের সুশীল সমাজের সঙ্গে তাঁর একটা বৈঠকের ব্যবস্থা করি।

প্রশ্ন :

প্রথম আলো: একটি বিজেপিবিরোধী জোট কি আপনি কল্পনা করতে পারছেন?

সুধীন্দ্র কুলকার্নি: এখনো নয়। তবে ২০২২ এবং ২০২৩ সালে নানা ধরনের রাজনৈতিক ঘটনা ঘটবে, যার প্রভাবে বিরোধী দলগুলো কাছাকাছি আসবে। সে ক্ষেত্রে মমতারও একটা বড় ভূমিকা থাকবে।

প্রশ্ন :

প্রথম আলো: কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ যে তিনি কংগ্রেসকে ভাঙতে চেষ্টা করছেন। তা যদি হয়, তবে বিরোধী দলগুলো একজোট হওয়ার দিকে কীভাবে এগোবে?

সুধীন্দ্র কুলকার্নি: বাস্তব হলো, বিজেপিকে এককভাবে চ্যালেঞ্জ কংগ্রেস করতে পারবে না। আবার একই সঙ্গে এটাও সত্য, কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে বিজেপিকে চাপে ফেলা সম্ভব নয়। যেকোনো বিজেপিবিরোধী জোটে কংগ্রেসের একটা বড় ভূমিকা থাকবেই।

প্রশ্ন :

প্রথম আলো: ২০২২-২৩ সাল মিলিয়ে ভারতের ২৮টি রাজ্যের মধ্যে ২১টিতে নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচনে সম্ভাব্য জোটের দলগুলো পরস্পরের বিরুদ্ধে যদি প্রার্থী দেয়, তবে একটি বন্ধুত্বপূর্ণ জাতীয় জোট গড়ে ওঠা কীভাবে সম্ভব?

সুধীন্দ্র কুলকার্নি: ভারতের রাজনৈতিক মানচিত্রটা বুঝতে হবে। ভারতে অনেক রাজ্য রয়েছে, যেখানে লড়াইটা কংগ্রেসের সঙ্গে বিজেপির সরাসরি, কোনো তৃতীয় আঞ্চলিক দল সেখানে নেই। যেমন রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড় বা কর্ণাটকে। দ্বিতীয় ধরনের কিছু রাজ্য রয়েছে, যেমন পশ্চিমবঙ্গ, অন্ধ্র প্রদেশ বা তেলেঙ্গানায় স্থানীয় দল শক্তিশালী। কিন্তু কংগ্রেসের প্রায় কোনো ভূমিকাই নেই। এর বাইরে, তৃতীয় ধরনের কিছু রাজ্য রয়েছে, যেখানে বৃহৎ আঞ্চলিক দলের শরিক হিসেবে কংগ্রেস মাঠে রয়েছে। যেমন মহারাষ্ট্র বা তামিলনাড়ু। এসব রাজ্যে কংগ্রেসের সঙ্গে সম্ভাব্য জোটের ভবিষ্যৎ শরিকদের লড়াইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু মনে রাখা প্রয়োজন, বিজেপির বিরুদ্ধে লড়তে গেলে সব দলকেই কিছু না কিছু স্বার্থ ত্যাগ করতে হবে। আমার মনে হয়, সেটা সম্ভব।

তবে ভারতের রাজনীতি অত্যন্ত জটিল। ফলে সবাই হয়তো একসঙ্গে জোটে যুক্ত হবেন না। কেউ হয়তো গোড়াতেই জোটের শরিক হবেন, কেউ হয়তো পরে হবেন। কেউ-বা হয়তো নির্বাচনের পর জোটে আসবেন। কিন্তু জোট যে হবে, সে ব্যাপারে আমি নিশ্চিত।

অটল বিহারি বাজপেয়ী
ফাইল ছবি

প্রশ্ন :

প্রথম আলো: আপনি ঘনিষ্ঠভাবে বিজেপিকে দেখেছেন। দলটির সঙ্গে একসময় যুক্ত ছিলেন, প্রধানমন্ত্রী বাজপেয়ীর সঙ্গে কাজ করেছেন। অতীতের বিজেপির সঙ্গে বর্তমানের বিজেপির কতটা মিল এবং কতটা ফারাক?

সুধীন্দ্র কুলকার্নি: ১৯৯৬ থেকে ২০০৪ সালে বাজপেয়ী দলের শীর্ষ নেতা ছিলেন। সে সময়েও দলটিকে ভারতীয় জনতা পার্টি বলা হতো, এখনো তা-ই বলা হয়। কিন্তু এটা ছাড়া সেই সময়ের বিজেপির সঙ্গে আজকের বিজেপির কোনো মিল নেই। কয়েকটি ফারাকের কথা বলতে পারি।

প্রথমত, এখন বিজেপিতে কোনো যৌথ নেতৃত্ব নেই। অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র বলেও কিছু নেই। বাজপেয়ী অত্যন্ত আকর্ষণীয় নেতা ছিলেন। কিন্তু তিনি একজন গণতান্ত্রিক মূল্যবোধসম্পন্ন মানুষও ছিলেন, ফলে দলটাও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় চলত। সেই সংস্কৃতি সম্পূর্ণ মুছে গেছে। আজকের বিজেপিতে কোনো অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র নেই। এই দল চালাচ্ছেন দুই ব্যক্তি (নরেন্দ্র মোদি ও অমিত শাহ) এবং মানুষকে দেখানোর জন্য একজন দলীয় সভাপতি (জে পি নাড্ডা) আছেন। কোনো বড় ইস্যু নিয়ে দলের মধ্যে আলাপ-আলোচনা হয় না। নেতৃত্ব যা বলে, বাকিরা তা শুনতে বাধ্য। দ্বিতীয়ত, বাজপেয়ী একজন জনপ্রিয় নেতা হলেও তাঁকে ঈশ্বরে পরিণত করেনি বিজেপি। নরেন্দ্র মোদিকে একজন অবতার হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে কোষাগারের অর্থ খরচ করে। তৃতীয়ত, এবং সম্ভবত সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হলো, বাজপেয়ী ও লালকৃষ্ণ আদভানি তাঁদের পরের প্রজন্মের নেতাদের তৈরি করেছিলেন। সেই কারণেই তাঁরা অবসর নেওয়ার পর সুষমা স্বরাজ, অরুণ জেটলি, গোবিন্দচার্য, প্রমোদ মহাজন, এমনকি নরেন্দ্র মোদির মতো নেতা উঠে এসেছেন। এখন আর সে রকমটা হচ্ছে না। বর্তমান নেতৃত্ব ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে তৈরি করেনি। নরেন্দ্র মোদির পর এক বিরাট শূন্যতা বিজেপির জন্য অপেক্ষা করছে।

প্রশ্ন :

প্রথম আলো: কিন্তু ভারতে বিজেপি একটা হিন্দু রাষ্ট্রের স্বপ্ন মানুষকে দেখাতে পেরেছে। সে ক্ষেত্রে উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে কেন আপনি পরের প্রজন্মের নেতা বলবেন না? কারণ, তিনি প্রবল হিন্দুত্ববাদী এক জননেতা।

সুধীন্দ্র কুলকার্নি: মানুষ তাঁকে মানবে না। রাজনীতিতে অবশ্যই মেরুকরণের একটা জায়গা রয়েছে। সেটাকে একটা সময় পর্যন্ত কাজেও লাগানো যায়, কিন্তু তারপর মেরুকরণের রাজনীতি আর কাজ করে না। এর কারণ, একটা সময়ের পর মেরুকরণের রাজনীতি সমাজ ও রাজনীতি দুয়েরই অপরিসীম ক্ষতি করে। এটা অবশ্যই বাস্তব, মেরুকরণের রাজনীতিকে হাতিয়ার করেই নরেন্দ্র মোদি সফল হয়েছেন। কিন্তু একটা বড় তফাত আছে। তিনি একজন অত্যন্ত কৌশলী রাজনীতিবিদ, যেটা আদিত্যনাথ নন। ধর্মীয় মেরুকরণের রাজনীতি একটা সময়ের পর আর কাজ করবে না।

প্রশ্ন :

প্রথম আলো: ভারতে একটা নতুন হিন্দুত্ববাদ তৈরি হচ্ছে, যার নেতৃত্ব দিচ্ছেন ইয়েতি নরসিংহানন্দের মতো সাধুরা। তাঁরা খোলাখুলি সংখ্যালঘু বা সাবেক প্রধানমন্ত্রীদের হত্যার হুমকি দিচ্ছেন। এই নতুন হিন্দুত্ববাদ বিজেপিকে শক্তিশালীই করছে। তাই নয় কি?

সুধীন্দ্র কুলকার্নি: এসবের কোনো সামাজিক স্বীকৃতি নেই। রাজনৈতিক অনুমোদন আছে।

প্রশ্ন :

প্রথম আলো: এই দুই অনুমোদন (সামাজিক ও রাজনৈতিক) কি পরস্পরের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়?

সুধীন্দ্র কুলকার্নি: সম্পৃক্ত, কিন্তু আবার পার্থক্যও আছে। সাধুরা এসব কথা বলছেন, কারণ, এর একটা রাজনৈতিক স্বীকৃতি রয়েছে। কিন্তু তা দিয়ে প্রমাণিত হয় না যে সামাজিক স্তরে মানুষ এই ধর্মান্ধতা মানছেন। আমার ধারণা, ভারতবর্ষের বড় অংশের হিন্দুরা এই ধরনের কথাবার্তা সমর্থন করেন না। আবার অন্যদিকে এটা করা হচ্ছে মুসলমান সম্প্রদায়কে প্ররোচিত করতে। সেখানেও এটা লক্ষণীয় যে মুসলমান সম্প্রদায় কিন্তু প্ররোচিত হচ্ছে না। এটা তাদের বিরাট কৃতিত্ব।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি
রয়টার্স ফাইল ছবি

প্রশ্ন :

প্রথম আলো: কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জনপ্রিয়তা কমছে না।

সুধীন্দ্র কুলকার্নি: তার কারণ, বিশ্বাসযোগ্য বিকল্প শক্তির অভাব। তবে মোদির সমর্থকদের একটা বড় অংশ এখন অর্থনৈতিক বিপর্যয়, মূল্যবৃদ্ধি, কর্মহীনতা এবং কোভিড নিয়ন্ত্রণে সরকারের ব্যর্থতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। তারা এটা প্রকাশ্যে বলছে না, কারণ, একটা বিরাট ভয় রয়েছে, যেটা ভারতে অতীতে ছিল না। মানুষ প্রকাশ্যে সরকারের সমালোচনা অতীতে করতে পারত, আজ পারে না। কিন্তু ব্যক্তিগত স্তরে মোদির সমর্থকেরা তাঁর সমালোচনা করছেন।

প্রশ্ন :

প্রথম আলো: কিন্তু নির্বাচনের সময়ে দেখা যাবে এই সমর্থকেরাই আবার বিজেপিতে ভোট দিচ্ছেন।

সুধীন্দ্র কুলকার্নি: দেখুন, যাঁরা অন্ধ সমর্থক, তাঁরা সব সময়ই বিজেপিকে ভোট দেবেন। কিন্তু আমরা কথা বলছি এমন একটা অংশকে নিয়ে, যারা অন্ধ সমর্থক নয়। তারা বিজেপিকে ভোট দেয় কিন্তু অন্ধ নয়। এই অংশটা ভারতে কিন্তু বিরাট। এই অংশটা আর বিজেপিকে বিশ্বাস করছে না।

প্রশ্ন :

প্রথম আলো: পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে আপনার নানান পর্যবেক্ষণ রয়েছে। পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে দেখছি, অন্য দেশের সঙ্গে, বিশেষত প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে, ভারতের সৌহার্দ্যের সম্পর্ক গত কয়েক বছরে বেশ ধাক্কা খেয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ায় ভারত কোনো দিনই খুব জনপ্রিয় ছিল না। এখন দেখা যাচ্ছে, যে দেশগুলোর সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিল, যেমন বাংলাদেশ, সেখানেও ভারতের বিরুদ্ধে অসহিষ্ণুতা তৈরি হয়েছে। আপনার কী মনে হয়?

সুধীন্দ্র কুলকার্নি: বিজেপির মেরুকরণের রাজনীতির কারণেই ভারতের সঙ্গে তার প্রতিবেশীদের সম্পর্কের যথেষ্ট অবনতি হয়েছে। সহজ উদাহরণ, নাগরিকত্ব সংশোধন আইনের মতো বিধির কারণে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। মোদি সরকার বলছে, প্রতিবেশী রাষ্ট্রের নির্দিষ্ট কিছু সম্প্রদায় ভারতে বসবাসের অনুমতি পাবে কিন্তু মুসলমান সম্প্রদায় পাবে না। ধর্মের ভিত্তিতে যদি নাগরিক চিহ্নিত করা বা নাগরিকত্ব দেওয়া হয়, তবে তার প্রতিক্রিয়া হবেই। এটা ভারতে আগে হয়নি। এটা সম্পর্ক খারাপ হওয়ার একটা কারণ।

দ্বিতীয়ত, গত সাড়ে সাত বছরে সার্ক সম্মেলন হয়নি। কারণ, ভারত চায় না। এরও কারণ আছে। ভারত চায় পাকিস্তানের সঙ্গে বৈরিতা বজায় রাখতে, যাতে একটা মুসলমান ও পাকিস্তানবিরোধী বাতাবরণ সৃষ্টি করে দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে সুবিধা পাওয়া যায়।

আরও একটি বিষয় বলা জরুরি। পাকিস্তান ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের ওপর ভয়ঙ্কর অত্যাচার করেছিল, এ কথা কারও অজানা নয়। কিন্তু বর্তমানে দুই দেশ পরস্পরের সঙ্গে কথাবার্তা বলতে চায়। কিন্তু এটা সম্ভব নয়। কেন? কারণ, ভারত চায় না। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোকে কাছাকাছি আনতে ভারতের নেতৃত্ব দেওয়ার বা একটা ইতিবাচক ভূমিকা নেওয়ার প্রয়োজন ছিল, যেটা সে নিল না। এই সুযোগটা নিল চীন। তারা আজ দক্ষিণ এশিয়ায় সব দেশের সঙ্গে কথাবার্তা বলছে।

প্রশ্ন :

প্রথম আলো: দক্ষিণ এশিয়ায় সব দেশের মধ্যে যোগাযোগব্যবস্থার উন্নতিও বিশেষ হলো না।

সুধীন্দ্র কুলকার্নি: ঠিকই। আমি গত বছর পশ্চিমবঙ্গে ভারত-বাংলাদেশের সীমান্ত বাণিজ্য বন্দর পেট্রাপোলে গিয়েছিলাম। সেখানে দেখলাম, রুগ্ণ পরিকাঠামো, আশপাশে চরম দারিদ্র্য। এটা পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের মধ্যে একটা গুরুত্বপূর্ণ স্থল বাণিজ্য বন্দর। আমি চীন-মিয়ানমার এবং চীন-ভিয়েতনামের বাণিজ্য বন্দরে গিয়েছি। তারা পরিকাঠামোর অবিশ্বাস্য উন্নতি করেছে। এতে দুই দেশই উপকৃত হয়েছে। গত মাসেই চীন থেকে লাওস পর্যন্ত ট্রেন যোগাযোগব্যবস্থা শুরু হয়েছে। এই ব্যবস্থা গোটা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ছড়িয়ে পড়বে।

ভারত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া বা দক্ষিণ এশিয়ায় বাণিজ্য সম্প্রসারণের কথা বলে কিন্তু কার্যত কিছুই করে না। একটা সুযোগ হয়তো তৈরি হয়েছিল, সেটা হাতছাড়া হয়ে গেছে।