বিজেপি বিধায়কের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ভুয়া অ্যাকাউন্ট বন্ধ করেনি ফেসবুক: সাবেক কর্মী

ফেসবুক
ফাইল ছবি: রয়টার্স

ভারতে গত বছরের দিল্লি নির্বাচনে প্রভাব সৃষ্টি করতে ফেসবুকে ভুয়া অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে প্রচারণা চালানো হয়েছিল। অ্যাকাউন্টগুলোর পেছনে ছিল কংগ্রেস, আম আদমি পার্টি ও বিজেপির মতো রাজনৈতিক দলগুলো। এসব অ্যাকাউন্টের অনেকগুলো ফেসবুক বন্ধ করলেও, ছাড় পান বিজেপির এক আইনপ্রণেতা। তাঁর সঙ্গে সরাসরি সংযোগ থাকা একাধিক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করেনি ফেসবুক। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির কাছে এসব দাবি করেছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমটির সাবেক কর্মী সোফি ঝ্যাং।

ফেসবুকের হয়ে তিন বছর কাজ করেছেন সোফি ঝ্যাং। গত বছর চাকরি ছাড়েন তিনি। সাবেক এই কর্মী বলেন, ২০১৯ সালের শেষের দিকে এসে ভুয়া অ্যাকাউন্টের চারটি নেটওয়ার্কের সন্ধান পান তাঁরা। এগুলোর মধ্যে দুটি বিজেপি ও বাকি দুটি কংগ্রেস–সমর্থিত। পরে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে এসে আরেকটি ভুয়া নেটওয়ার্কের সন্ধান মেলে, ওই নেটওয়ার্কটির সঙ্গে আম আদমি পার্টির সংযোগ পাওয়া গিয়েছিল।

ঝ্যাং এনডিটিভিকে বলেন, ভুয়া অ্যাকাউন্টগুলোর পাঁচটি নেটওয়ার্কের মধ্যে চারটি বন্ধ করা হয়েছিল। বাকি নেটওয়ার্কটির খবর শেষ মুহূর্তে মেলে। জানা যায়, লোকসভার এক বিজেপি বিধায়কের সঙ্গে সেটির সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। বিষয়টি জানার পর নেটওয়ার্কটির বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে, তা নিয়ে ফেসবুকের সংশ্লিষ্ট কোনো কর্মকর্তার কাছ থেকে কোনো নির্দেশনা আসেনি। ফলে নেটওয়ার্কটি বন্ধ করার প্রক্রিয়া সেখানেই থেমে যায়।

ঝ্যাং বলেন, ভুয়া অ্যাকাউন্টের নেটওয়ার্কটির জন্য বিজেপি রাজনীতিক দায়ী, এমনটি জানার পরও তিনি কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেননি। এ নিয়ে ফেসবুককে একাধিকবার জানানো হয়েছিল। তবে প্রতিষ্ঠানটি এমন কোনো সমস্যার কথা স্বীকার করতেও নারাজ ছিল।

ভুয়া অ্যাকাউন্ট বন্ধে ফেসবুকের এমন বৈষম্যমূলক আচরণের কারণে প্রতিষ্ঠানটিকে দায়ী করা হবে কি না, তা ভারতের ওপরই নির্ভর করছে বলে মন্তব্য করেন ঝ্যাং। তিনি বলেন, যদি কোথাও ক্ষমতাশালী ও উচ্চ শ্রেণির জন্য এক ধরনের আইন এবং বাকি সবার জন্য আরেক ধরনের আইন থাকে, তাহলে গণতন্ত্র সেখানে টিকে থাকতে পারে না।

এদিকে সোফি ঝ্যাংয়ের এসব দাবি নাকচ করে দিয়েছে ফেসবুক। প্রতিষ্ঠানটির এক মুখপাত্র বলেন, এর মধ্যে সারা বিশ্বে ভুয়া কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত ১৫০টির বেশি নেটওয়ার্ক বন্ধ করা হয়েছে। এর মধ্যে সমালোচনার কেন্দ্রে আসা ভারতের অ্যাকাউন্টগুলোও রয়েছে। এ ছাড়া স্প্যাম ও ভুয়া এনগেজমেন্টের মতো সমস্যাগুলো নিয়েও কাজ করা হচ্ছে। যদিও কোনো কিছুর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার আগে সেগুলো তদন্ত করে দেখা হয়। তবে ফেসবুকের এ বিবৃতিতে বিজেপি আইনপ্রণেতার ভুয়া নেটওয়ার্ক বন্ধ নিয়ে স্পষ্টভাবে কিছু বলা হয়নি।