বিলুপ্ত ছিটমহলবাসীদের বিশেষ পরিচয়পত্র দেওয়া হবে না

কলকাতার মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের সুপ্রিম কোট গতকাল শুক্রবার বিলুপ্ত ছিটমহলবাসীদের পক্ষে দায়ের করা মামলার শুনানি শেষে জানিয়ে দিয়েছে, ওই বাসিন্দাদের জন্য বিশেষ কোনো পরিচয়পত্র দেওয়া হবে না। যেহেতু ছিটমহল বিনিময়ের পর বিলুপ্ত ছিটমহলবাসীরা ভারতের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছে।

২০১৫ সালের ৩১ জুলাই ভারত ও বাংলাদেশের অভ্যন্তরে থাকা ১৬২টি ছিটমহল বিনিময় হয়। এর মধ্যে ভারতের ভূখণ্ডে থাকা বাংলাদেশের ৫১টি এবং বাংলাদেশের ভূখণ্ডে থাকা ভারতের ১১১টি ছিটমহল বিনিময় হয়। বাংলাদেশের ভারতীয় ছিটমহল থেকে ৯২১ জন ছিটমহলবাসী ভারতে ফিরে গেলেও ভারত থেকে কোনো বাংলাদেশি ছিটমহলবাসী বাংলাদেশে ফিরে যাননি। ভারত সরকার ইতিমধ্যে ছিটমহলবাসীদের ভোটার পরিচয়পত্র, আঁধার কার্ড ও রেশন কার্ড প্রদান করেছে। তারা সবাই ভারতীয় নাগরিকত্ব পেয়েছে। তারা সংবিধানের মৌলিক অধিকার ভোগ করছে।

কিন্তু মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চ দাবি করে, বিলুপ্ত ছিটমহলবাসীরা নাগরিক সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে না। তাদের আইনজীবী বিজন কুমার ঘোষ আবেদনে বলেন, বিলুপ্ত ছিটমহলবাসীরা এখনো বাংলাদেশি বলে পুলিশের হাতে হেনস্তার শিকার হয়। তারা এলাকার বাইরে বের হতে পারছে না। অনেকের ভোটার কার্ড নেই, আঁধার কার্ড নেই। তাই সংগঠনটি এই বিলুপ্ত ছিটমহলবাসীর জন্য একটি বিশেষ পরিচয়পত্র প্রদানের আবেদন জানান সুপ্রিম কোর্টে।

গতকাল সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি জে এস খেহর ও বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ মামলাটির নিষ্পত্তি করে জানিয়ে দেন, ছিটমহলের বাসিন্দাদের জন্য আলাদা কোনো বিশেষ পরিচয়পত্র নয়। আবেদনকারীরা এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট জায়গায় আবেদন করতে পারবে। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের পক্ষে আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ও এদিন জানিয়ে দেন, আর পাঁচজন ভারতীয়র মতো ছিটমহলবাসীরাও সমান সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন। সুতরাং, তাদের জন্য কোনো বিশেষ পরিচয়পত্র নয়। কেন্দ্রীয় সরকারের আইনজীবী তথা অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেনু গোপালও রাজ্যের দাবিকে সমর্থন করেন।

১০০তম সংবিধান সংশোধন বিল পাস করে বাংলাদেশের সঙ্গে স্থল সীমান্ত চুক্তির মাধ্যমে ছিটমহল হস্তান্তর করে ভারত সরকার।