বিড়ালের জন্য ‘আশ্রম’

ক্যাট গার্ডেনের বাসিন্দারা
ছবি: এএনআই

দেশে-বিদেশে পোষা প্রাণীর প্রতি মানুষের ভালোবাসার অসংখ্য উদাহরণ রয়েছে। তবে ভারতের গুজরাট রাজ্যের এক ব্যক্তি যা করেছেন, তা অনন্যই বলা চলে। তিনি বিড়ালের জন্য গড়ে তুলেছেন একটি ‘আশ্রম’। নাম দিয়েছেন ‘ক্যাট গার্ডেন’। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত সে আশ্রমে দুই শতাধিক বিড়াল রয়েছে। অভিভাবকহীন বিড়ালের স্থায়ী আবাসস্থল এই ক্যাট গার্ডেন।

বিড়ালের জন্য আশ্রম গড়ে তোলা এই ব্যক্তির নাম উপেন্দ্র গোস্বামী। তিনি গুজরাটের কুচ জেলার বাসিন্দা। শুল্ক বিভাগে কাজ করেন তিনি। ২০১৭ সালে তিনি ক্যাট গার্ডেন গড়ে তোলেন। এই আশ্রম তিনি উৎসর্গ করেছেন তাঁর প্রয়াত বোনকে। তাঁর ওই বোন ১৯৯৪ সালে মারা গেছেন।

উপেন্দ্র গোস্বামীর ক্যাট গার্ডেনের আয়তন প্রায় ৫০০ বর্গফুট। তিনি বলেন, ‘প্রতিবছরই বোনের জন্মদিন উদ্‌যাপন করি আমরা। বোনের মৃত্যুর পরে একবার তাঁর জন্মদিন পালনের সময় একটি বিড়াল এসে জন্মদিনের কেকটি খেয়ে নেয়। এরপর থেকে বিড়ালটি আমাদের সঙ্গেই থেকে যায়। আমাদের বিশ্বাস, বিড়ালের রূপ নিয়ে আমার বোন আবার ফিরে এসেছেন।’

উপেন্দ্র জানান, বিড়ালটির ওই কেক খেয়ে নেওয়ার ঘটনার পর থেকে তিনি আরও বিড়াল পুষতে শুরু করেন। একপর্যায়ে বিড়ালের দেখাশোনার জন্য একটি আশ্রম গড়ে তোলার পরিকল্পনা মাথায় আসে। সেই পরিকল্পনা থেকেই ২০১৭ সালে ক্যাট গার্ডেনের যাত্রা শুরু। তিনি আরও জানান, এই আশ্রমে চারটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষ, ১৬টি কটেজ ও ১২টি বিছানা রয়েছে। সন্ধ্যাবেলায় বিড়ালগুলোর বিনোদনের জন্য থিয়েটারের ব্যবস্থাও করা হয়েছে।

পশুচিকিৎসক নিয়মিত প্রাণীগুলোর পরীক্ষা–নিরীক্ষা করেন। ক্যাট গার্ডেন পরিচালনায় সহযোগিতা করছে আহমেদাবাদ জীবদয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট।

উপেন্দ্র গোস্বামীকে বিড়াল দেখাশোনায় সহযোগিতা করেন তাঁর স্ত্রীও। তিনি একটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। তাঁরা জানান, ক্যাট গার্ডেন রক্ষণাবেক্ষণ ও বিড়ালগুলোর দেখাশোনায় প্রতি মাসে প্রায় দেড় লাখ রুপি খরচ হয়। এই অর্থের ৯০ শতাংশই বহন করেন এই দম্পতি। ন্যূনতম ফি দিয়ে প্রতি রোববার দর্শনার্থীরা ‘ক্যাট গার্ডেন’–এ প্রবেশ করতে পারেন।