বীরভূম হত্যাকাণ্ড তদন্ত করবে সিবিআই

আদালতের রায়ের পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সিবিআইয়ের ফরেনসিক দল
ছবি: এএনআই

পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করবে ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা সিবিআই। এ জন্য সিবিআই তাদের অভিজ্ঞ কর্মকর্তাদের নিয়ে টিম গঠন করবে এবং আগামীকাল শনিবার তদন্ত শুরু করবে। এই মামলায় গ্রেপ্তার ২১ জনকে তুলে দিতে হবে সিবিআইর হাতে।

গতকাল বৃহস্পতিবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হতাহত ব্যক্তিদের পরিবারের মাঝে আর্থিক সহায়তা হিসেবে চেক তুলে দেন
ছবি: এএনআই

আজ শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের সমন্বয়ে গঠিত ডিভিশন বেঞ্চ এ রায় দেন।

গত সোমবার পশ্চিমবঙ্গের বীরভূমে রামপুরহাট মহকুমার বগটুই পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ও তৃণমূল নেতা ভাদু শেখ নিহত হওয়ার জেরে সহিংসতায় অন্তত ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যায় বহু মানুষ।

ঘটনার এক দিন পর গত বুধবার বীরভূম হত্যাকাণ্ড নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে একটি স্বতঃপ্রণোদিত মামলা হয়।

আজ রায় ঘোষণার সময় ডিভিশন বেঞ্চ বলেন, বিচারব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে এই মামলার তদন্তের ভার দেওয়া হলো সিবিআইর হাতে। রাজ্য পুলিশ এই হত্যা মামলার তদন্ত করবে না। সেই লক্ষ্যে হত্যা মামলার সব কাগজপত্র তুলে দিতে হবে সিবিআইর হাতে। কাল শনিবার থেকে সিবিআই শুরু করবে বীরভূম গণহত্যা মামলার তদন্ত। এই মামলায় গ্রেপ্তার ২১ জনকেও তুলে দিতে হবে সিবিআইর হাতে।

এদিকে এই গণহত্যা মামলার তদন্তের ভার সিবিআইর হাতে তুলে দেওয়ায় স্বস্তি ফিরে এসেছে হত্যাকাণ্ডে নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের মধ্যে। তাঁদের ভাষ্য, এই রাজ্যের পুলিশ দিয়ে ন্যায়বিচার পাওয়া যায় না। এবার ন্যায়বিচার পাওয়ার আশা করা যায়।

নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের আহাজারি
ছবি: এএনআই

হাইকোর্ট মামলার তদন্তভার সিবিআইর হাতে তুলে দেওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছে কংগ্রেস ও সিপিএম। যদিও হাইকোর্টের এই নির্দেশের পর তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক ও মুখপাত্র কুনাল ঘোষ বলেছেন, আমরা সিবিআই তদন্তে সব সময় সহযোগিতা করব। তবে তদন্তে সিবিআই যদি বিজেপিকে বাঁচানোর চেষ্টা করে, প্রতিহিংসার রাজনীতি করে তবে তৃণমূল এর প্রতিবাদ করবে। প্রয়োজনে গণ-আন্দোলন হবে।

গতকাল রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘটনাস্থলে গিয়ে হতাহত ব্যক্তিদের পরিবারকে সান্ত্বনা দেন। পাশাপাশি অপরাধীদের উপযুক্ত শাস্তি দেওয়ার আশ্বাস দেন। শুধু তা–ই নয়, যেসব পুলিশ কর্মকর্তার কর্তব্যে গাফিলতি রয়েছে, তাঁদেরও বিচারের সম্মুখীন করার আশ্বাস দেন। হতাহত ব্যক্তিদের আর্থিক সহযোগিতা দেন। ইতিমধ্যে রামপুরহাট মহকুমা পুলিশ কর্মকর্তা, রামপুরহাট থানার আইসি এবং ওসিকে বরখাস্ত করা হয়েছে।

এ ঘটনার সঙ্গে যুক্ত রামপুরহাট ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি আনোয়ারুল হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে। এ নিয়ে এই গণহত্যা মামলায় ২১ জনকে গ্রেপ্তার করা হলো। আজ আনোয়ারুলকে রামপুরহাট মহকুমা বিচার বিভাগীয় আদালতে তোলা হলে আদালত তাঁকে ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজত দিয়েছেন।