ভবানীপুরে মমতার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রিয়াংকা

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও প্রিয়াংকা টিবরিওয়াল

পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার দক্ষিণ কলকাতার ভবানীপুর আসনে উপনির্বাচনে অংশ নিতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ আসনে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপির প্রার্থী হচ্ছেন খ্যাতিমান আইনজীবী প্রিয়াংকা টিবরিওয়াল।

গণেশ চতুর্থীর শুভদিন আজ শুক্রবার দুপুরে আলীপুরের সার্ভে ভবনে গিয়ে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সাংসদ সুব্রত বক্সীসহ বেশ কয়েকজন নেতা তাঁর সঙ্গে ছিলেন।

এদিনই বিজেপি এই আসনে তাদের প্রার্থী হিসেবে আইনজীবী প্রিয়াংকা টিবরিওয়ালের নাম ঘোষণা করে। কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী প্রিয়াংকা টিবরিওয়াল বিজেপির দলীয় আইনজীবীও। তিনিই এই রাজ্যে নির্বাচনোত্তর সহিংসতার বিভিন্ন মামলায় বিজেপির পক্ষে সওয়াল করছেন। প্রিয়াংকা টিবরিওয়াল আবার বিজেপির জাতীয় জনতা যুবমোর্চার রাজ্য শাখার সহসভাপতি। এবারের বিধানসভা নির্বাচনে তিনি কলকাতার এন্টালি কেন্দ্র থেকে বিজেপির টিকিটে লড়ে হেরে গিয়েছিলেন।

আর বামদল প্রার্থী করেছে তরুণ আইনজীবী শ্রীজীব বিশ্বাসকে। তিনি সোমবার মনোনয়নপত্র জমা দেবেন। এই উপনির্বাচনে প্রার্থী না দিয়ে মমতাকে সমর্থন দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধী। যদিও রাজ্য কংগ্রেস চেয়েছিল প্রার্থী দিতে।

এবারের বিধানসভা নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রাম আসনে। সেই আসনে তিনি ১ হাজার ৯৫৬ ভোটে পরাজিত হন তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগ দেওয়া শুভেন্দু অধিকারীর কাছে। কিন্তু ভারতের সংবিধান মেনে তৃণমূল কংগ্রেস মমতাকে মুখ্যমন্ত্রীর পদে বসায়। সাংবিধানিক বিধি অনুযায়ী, আগামী ৫ নভেম্বরের মধ্যে মমতাকে রাজ্যের যেকোনো একটি বিধানসভা আসন থেকে জিতে আসতে হবে। এ লক্ষ্যে এই ভবানীপুর আসনের এবারের তৃণমূলের জয়ী বিধায়ক শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় ওই আসনের বিধায়ক পদ থেকে পদত্যাগ করলে আসনটি শূন্য হয়। সেই শূন্য আসনে উপনির্বাচন হবে ৩০ সেপ্টেম্বর। এই আসনেই ২০১১ ও ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

জনস্বার্থ মামলা

এদিকে গতকাল কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল-এর ডিভিশন বেঞ্চে ভবানীপুরের উপনির্বাচন নিয়ে একটি জনস্বার্থ মামলা করেছেন আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায়। তিনি তাঁর মামলার আবেদনে বলেছেন, চারটি বিধানসভা আসনের উপনির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও কেন মাত্র একটি আসন ভবানীপুরে নির্বাচনে হবে? ওই আসনের প্রার্থী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর আগেও এই ভবানীপুর আসনে উপনির্বাচন নিয়ে আরও একটি জনস্বার্থ মামলা হয়েছে।

এই দুটি মামলাই গ্রহণ করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। সোমবার এই দুটি মামলার শুনানি হওয়ার কথা।

গতকাল বৃহস্পতিবার করা মামলার আবেদনকারী আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, শুধু রাজ্যের মুখ্যসচিব ভবানীপুর আসনের উপনির্বাচন চেয়ে একটি চিঠি লিখেছিলেন নির্বাচন কমিশনে। সেই চিঠির জন্যই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এই ভবানীপুর আসনের উপনির্বাচন। যদিও এখন আরও চারটি বিধানসভার আসনে উপনির্বাচনের ঘোষণা দেয়নি নির্বাচন কমিশন।