মুম্বাইতে মাস্ক না পরায় ৫৫ কোটি রুপি জরিমানা আদায়

করোনাভাইরাস রোধে ভারতে অনেক রাজ্যে মাস্ক ছাড়া বাইরে বের হলে দিতে হচ্ছে জরিমানা
ফাইল ছবি: এএফপি

ভারতে মহারাষ্ট্রের রাজধানী মুম্বাইয়ে মাস্ক না পরলেই জরিমানা করছে পুলিশ। গত বছর থেকে এ পর্যন্ত ২৭ লাখের বেশি মানুষকে জরিমানা করা হয়েছে। তাঁদের কাছ থেকে আদায় করা হয়েছে মোট ৫৫ কোটি রুপি।  

করোনাভাইরাসে ভারতে সংক্রমিত রাজ্যগুলোর মধ্যে অন্যতম মহারাষ্ট্র। করোনা রোধে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে স্থানীয় প্রশাসন। কেউ বিধিনিষেধ লঙ্ঘন করছেন কি না, তদারকি করছে বোম্বে মিউনিসিপ্যাল করপোরেশন, মুম্বাই পুলিশ, আর রেল বিভাগ। মাস্ক ছাড়া কোনো ব্যক্তিকে বাইরে পেলেই জরিমানা আদায় করছে তারা।

বোম্বে মিউনিসিপ্যাল করপোরেশন জানিয়েছে, মাস্কবিহীন ঘুরলে আগে ২০০ রুপি জরিমানা আদায় করা হতো। গত জানুয়ারি থেকে এই অঙ্ক বেড়ে হয়েছে ৫০০ রুপি। রোজ গড়ে প্রায় আড়াই শ মানুষ জরিমানার মুখে পড়ে। প্রতিদিন জরিমানা থেকে গড়ে ৪৮ হাজার ১৩৪ রুপি আয় হয়। গতকাল রোববার মুম্বাইয়ের ২৪টি ওয়ার্ডে ১ হাজার ৮২৮ জনকে বিনা মাস্কে ঘোরার জন্য জরিমানা করা হয়। তাঁদের থেকে জরিমানা হিসেবে মোট ৩ লাখ হাজার রুপি আদায় করা হয়েছে।

গত বছর এপ্রিল থেকে এখন পর্যন্ত গত ৪১৮ দিনে শুধু মুম্বাইতে ২৭ লাখ ৫৯ হাজার মানুষকে মাস্ক ছাড়া ঘোরার জন্য জরিমানা করা হয়েছে। সবচেয়ে বেশি জরিমানা আদায় করেছেন বোম্বে মিউনিসিপ্যাল করপোরেশনের কর্মীরা। তাঁরা ২৩ লাখ ৯৬ হাজার মানুষের কাছ থেকে ৪৮ কোটি ২৯ লাখ রুপি জরিমানা আদায় করেছেন।
মুম্বাই পুলিশ জরিমানা করেছে ৩ লাখ ৩৯ হাজার জনকে। তাঁদের কাছ থেকে ৬ কোটি ৭৭ লাখ রুপি জরিমানা আদায় করা হয়েছে। মুম্বাইয়ের সেন্ট্রাল, ওয়েস্টার্ন, হার্বার লাইনেও অনেক লোককে জরিমানা করা হয় মাস্কবিহীন ঘোরার জন্য। এই তিনটি লাইনের বিভিন্ন স্টেশন থেকে ২৩ হাজার ৮৯১ জন যাত্রীকে রেলের পক্ষ থেকে ধরা হয়েছে। এদের থেকে রেল কর্তৃপক্ষ ৫০ লাখ ৩৯ হাজার রুপি আদায় করেছে। সব মিলিয়ে জরিমানা স্বরূপ ৫৫ কোটি রুপি আয় করেছে মুম্বাই পুলিশ ও প্রশাসন।

এদিকে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে মহারাষ্ট্রে সংক্রমণের মাত্রা কিছুটা কমেছে। তবে কমছে না মৃত্যুর হার। রাজ্যটিতে গত ২৪ ঘণ্টায় ২৬ হাজার ৬৭২ নতুন শনাক্ত হয়েছেন। ৫৯৪ জন সংক্রমিত রোগীর মৃত্যু হয়েছে। আর এই হার দুশ্চিন্তায় ফেলেছে মহারাষ্ট্র সরকারকে। গত দশ দিনে ৭ হাজার মানুষ করোনায় মারা গেছেন। মহারাষ্ট্র সরকার ১৮ থেকে ৪৪ বয়সীদের জন্য টিকাদান কর্মসূচি বন্ধ রেখেছে। মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে বলেন, টিকার সরবরাহ কম হওয়ায় এই বয়সসীমার মানুষকে টিকা দেওয়া আপাতত বন্ধ থাকবে। আগামী মাস থেকে টিকাদান কর্মসূচির গতি বাড়ানো হবে বলে তিনি জানান। করোনার সম্ভাব্য তৃতীয় ঢেউ শিশুদের জন্য মারাত্মক হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব। তাই শিশুদের খুবই সাবধানে রাখতে সতর্ক করেন তিনি।