রাঁচিতে একই পরিবারের ৭ জনের লাশ উদ্ধার
![](https://images.prothomalo.com/prothomalo%2Fimport%2Fmedia%2F2018%2F05%2F17%2F4fb23df05a789fa639db957342360b12-5afd1028a5bc5.jpg?auto=format%2Ccompress)
ভারতের ঝাড়খন্ড রাজ্যের রাজধানী রাঁচির একটি ভাড়া বাড়ি থেকে একই পরিবারের সাতজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল সোমবার সকালে কাংকে থানার আরসান্দ এলাকায় এ লাশ উদ্ধারের ঘটনা ঘটে। রাজধানী নয়াদিল্লি ও ঝাড়খন্ডের হাজারিবাগ জেলার পর এটি এ ধরনের আরেকটি ঘটনা।
সাত লাশের মধ্যে দুজনকে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় ঝুলতে দেখা যায়। অন্য পাঁচজনের লাশ মেঝেতে কাপড় দিয়ে ঢাকা ছিল। এর মধ্যে দুটি শিশুও রয়েছে।
স্থানীয় লোকজনের ভাষ্য, দীপক কুমার ঝাঁ (৪০) নামের এক ব্যক্তি পরিবারের সাত সদস্যকে নিয়ে ভাড়া বাড়িতে ছিলেন। তিনি একটি বেসরকারি সংস্থায় বিক্রয়কর্মীর কাজ করতেন। পরিবারে তিনিই ছিলেন একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। বাড়িতে ছিলেন তাঁর ছোট ভাই রূপেশ (৩৮), বৃদ্ধ মা-বাবা, স্ত্রী ও দুই সন্তান। বড়টি মেয়ে, ছোটটি ছেলে।
গতকাল সকালে দীপক ঝাঁর মেয়েকে স্কুলভ্যান স্কুলে নিতে আসে। বাড়িতে কোনো সাড়া না পেয়ে স্থানীয় লোকজনকে এ কথা জানান স্কুলভ্যানের চালক। আশপাশের লোকজন বাড়িতে গিয়ে দরজায় আঘাত করলে দরজাটি খুলে যায়। তখন দুজনকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখা যায়। অন্যদের মেঝেতে কাপড় দিয়ে ঢাকা অবস্থায় পাওয়া যায়। কাংকে থানায় খবর দিলে পুলিশ গিয়ে সাতজনের লাশ উদ্ধার করে।
মৃত ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন দীপক ঝাঁ, তাঁর বাবা, মা, ভাই, স্ত্রী ও দুই সন্তান। বোনের বিয়ে আগেই হয়ে গেছে। দীপক ঝাঁর বাবা ছিলেন রেলের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী।
রাঁচি রেঞ্জের পুলিশের ডিআইজি অমোল বি হোলকার সাংবাদিকদের জানান, পুলিশ খোঁজ নিয়ে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছে, অর্থকষ্টে ছিল দীপক ঝাঁর পরিবার। শারীরিক প্রতিবন্ধী ছেলের চিকিৎসার জন্য তিনি ২০ লাখ রুপি খরচ করে নিঃস্ব হয়ে যান। এ টাকা তিনি ধার করে এনেছিলেন। তাঁর ভাই রূপেশেরও কোনো আয় ছিল না। ধারের টাকা শোধ করার জন্য তাঁর ওপর চাপ ছিল। এতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন দীপক। হতাশ হয়ে সপরিবারে তাঁরা আত্মহত্যা করতে পারেন।
পুলিশের ধারণা, পরিবারের পাঁচজনকে হত্যার পর দীপক ও রূপেশ শেষ পর্যায়ে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেন। মৃত্যুর আগে এক বিশাল সুইসাইড নোটও রেখে যান দীপক। এখন পুলিশ আত্মহত্যার কারণ তদন্ত করে দেখা শুরু করেছে।
এর আগে এই মাসের প্রথম দিকে রাজধানী দিল্লির বুরারিতে একই পরিবারের ১১ সদস্য আত্মহত্যা করেন। এরপর হাজারিবাগে এক অবস্থাসম্পন্ন পরিবারের ৬ জনের আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে।