হাতির ‘মানবিকতা’

প্রতীকী ছবি। রয়টার্স

উন্মত্ত হাতিকে ভয় পায় না, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। শুধু কি মানুষ? বুনো হাতির পালের সামনে বনের অন্য পশু–পাখিরাও অসহায়। বিশাল শরীর নিয়ে যখন হাতির পাল কোনো ফল কিংবা ফসলের খেতে ঢুকে পড়ে, তখন চারপাশে ধ্বংসলীলা বয়ে যায়। দুমড়ে–মুচড়ে, পুরো খেত সাফ করে একাকার। এ সময় কেউ সামনে পড়লে কারও রেহাই নেই। তবে দয়ালু হাতিও রয়েছে। সেসব হাতি পাখিদের প্রতি সহানুভূতিশীল।

ঘটনাটি ভারতের তামিলনাড়ুর একটি গ্রামের। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হঠাৎই উন্মত্ত হাতির একটি পাল হামলে পড়ে ওই গ্রামের একটি কলাবাগানে। কে না জানে, হাতির খুব পছন্দের খাবার কলাগাছ। সামনে পেলে মুহূর্তেই সাবাড় করে দেয় আস্ত কলাগাছ। সেখানে পুরো একটি বাগান পেলে তো কথাই নেই। চোখের পলকে ওই বাগানের সব কলাগাছ সাবাড় করে দেয় ক্ষুধার্ত হাতির দল।

তবে বিস্ময়করভাবে হাতির পালের আকস্মিক আক্রমণ থেকে রক্ষা পায় বাগানের একটি মাত্র কলাগাছ। বাগানের সব গাছ খেয়ে সাবাড় করলেও ওই একটি গাছে শুঁড় ছোঁয়ায়নি হাতিরা। এর কারণ, ওই গাছটিতে ছিল পাখির বাসা। পাখির ছানাদের দেখে হয়তো হাতিদের মনে মায়া জন্মেছিল। উন্মত্ত হাতির পাল শুধু ওই গাছটি রেখে বাগানের বাকি সব কলাগাছ সাবাড় করেছে।

ক্ষুধার্ত হাতির পালের জীবে দয়ার এ ঘটনার ছোট্ট একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছেড়েছেন ইন্ডিয়ান ফরেস্ট সার্ভিসের (আইএফএস) কর্মকর্তা সুশান্ত নন্দা। মুহূর্তেই ভাইরাল হয়েছে ভিডিওটি। এতে দেখা যায়, উন্মত্ত বুনো হাতি চলে যাওয়ার পর গ্রামবাসী ক্ষতি পর্যবেক্ষণ করছেন। তখনই তাঁরা দেখতে পান ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালালেও বাগানে একটি কলাগাছ ঠায় দাঁড়িয়ে আছে। পাখির বাসা থাকায় ওই কলাগাছ ছুঁয়েও দেখেনি দয়ালু হাতির পাল।

সুশান্ত নন্দা লিখেছেন, ‘এ কারণেই হাতিদের অমায়িক প্রাণী বলা হয়। উন্মত্ত বুনো হাতিরা ওই গ্রামের পুরো কলাবাগান ধ্বংস করে রেখে গেছে ঠিকই। শুধু একটি গাছ ছুঁয়েও দেখেনি। ওই গাছে পাখির বাসা থাকায় হাতির পালের এ ভালোবাসার আচরণ। এটাই সৃষ্টিকর্তার আশ্চর্য প্রকৃতি।’

এদিকে সামাজিক মাধ্যমেও অনেকে হাতিদের এমন প্রাণীর প্রতি সংবেদনশীল আচরণের প্রশংসা করেছেন।