বলিউড বাদশা শাহরুখ খানের সিনেমার সংলাপ ধার করে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল আজ মঙ্গলবার কারাগার থেকে বার্তা দিলেন। বললেন, ‘আমার নাম অরবিন্দ কেজরিওয়াল, আমি সন্ত্রাসী (টেররিস্ট) নই।’
শাহরুখ খানের সিনেমাটির নাম ছিল ‘মাই নেম ইজ খান’। ২০১০ সালের সেই ব্লকবাস্টার সিনেমার সংলাপ ছিল এমন—‘মাই নেম ইজ খান, অ্যান্ড আই অ্যাম নট আ টেররিস্ট’। ১৪ বছর পর সেই সংলাপ ধার করে তিহার কারাগার থেকে হিন্দিতে বার্তা দিলেন আবগারি মামলায় গ্রেপ্তার মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বললেন, ‘মেরা নাম অরবিন্দ কেজরিওয়াল হ্যায়, ঔর ম্যায় আতঙ্কবাদী নহি হুঁ।’
কেজরিওয়ালের দিক থেকে হঠাৎ এই ‘সন্ত্রাসী নই’ বিষয়টি টেনে আনার এক পটভূমি রয়েছে। আম আদমি পার্টির (আপ) নেতা সঞ্জয় সিং আজ মঙ্গলবার তা বিস্তারিত জানিয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, তিহারে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এমন ব্যবহার করা হচ্ছে, যেন তিনি সন্ত্রাসবাদী। সন্ত্রাসবাদীদের সঙ্গে শোনা যায় এমনই আচরণ নাকি করা হয়। কী রকম সেই আচরণ, গত সোমবার কেজরিওয়ালের সঙ্গে দেখা করে এসে তা জানিয়েছিলেন পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত সিং মান। তিনি বলেন, দুই নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রীকে কথা বলতে হচ্ছে প্রায় অস্বচ্ছ কাচের দেয়ালের দুই পাশ থেকে। মুখ বোঝা যায় না। কথা বলতে হয় ফোন মারফত।
আজ সঞ্জয় সিং সেই আচরণের বর্ণনা জানিয়ে বলেন, স্ত্রীর সঙ্গেও কেজরিওয়ালকে মুখোমুখি বসে কথা বলতে দেওয়া হচ্ছে না। একজন দাগি আসামিকেও যেসব সুবিধা দেওয়া হয় মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়ালকে, তা-ও দেওয়া হচ্ছে না। সারাক্ষণ সিসিটিভির আওতায় তাঁকে রাখা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভাবছেন, এভাবে কেজরিওয়ালকে ভেঙে দেওয়া যাবে, ভাঙা যাবে দলের মনোবল। কিন্তু তিনি জানেন না, কেজরিওয়াল ভাঙার মানুষ নন। যত দিন যাবে, তিনি ততই দৃঢ় হবেন। এভাবে তাঁকে আটকে রাখা যাবে না। তিনি আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরে আসবেন।
সঞ্জয় সিং বলেন, প্রধানমন্ত্রী মোদি দিন দিন আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ছেন। তিনি কতটা প্রতিহিংসাপরায়ণ, তা বুঝিয়ে দিচ্ছেন। তাঁর লজ্জা হওয়া উচিত যে একজন নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তিনি এই ব্যবহার করছেন। তাঁর মনে কতটা ঘৃণা, এর মধ্য দিয়েই বোঝা যাচ্ছে।
বিজেপি চাইছে, কেজরিওয়াল মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দিন। কিন্তু কেজরিওয়াল তা চাইছেন না। জেল থেকেই তিনি প্রশাসন চালাবেন বলছেন। কিন্তু তা যাতে না করতে পারেন, সে জন্য সরকার ও জেল কর্তৃপক্ষও সচেষ্ট। ফলে দিল্লিতে কোনো কোনো ক্ষেত্রে কাজে অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে পানি সরবরাহের ক্ষেত্রে। গ্রীষ্মের তাপ যত বাড়ছে, কোনো কোনো এলাকায় পানির হাহাকার শুরু হয়েছে। অসন্তোষ দেখা দিচ্ছে।