মণিপুরে বিএসএফের ওপর হামলা, একজন নিহত

গত ৩ মে ভারতের উত্তর–পূর্বাঞ্চলের রাজ্য মণিপুরে সংঘাত শুরু হয়
ফাইল ছবি: এএনআই

ভারতের মণিপুরে এবার নিরাপত্তারক্ষী বাহিনীর ওপর সরাসরি হামলা হলো। বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হামলায় দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের অন্তত এক সদস্য নিহত হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার বিএসএফের এক মুখপাত্র আনুষ্ঠানিকভাবে এ তথ্য জানিয়েছেন।

নিহত ওই বিএসএফ সদস্যের নাম রঞ্জিত যাদব। তাঁকে মণিপুরের কাকচিং জেলার সুগনু এলাকার সেরো গ্রামে একটি বিদ্যালয়ে মোতায়েন করা হয়েছিল। রঞ্জিত যাদব দ্বিতীয় বিএসএফ কর্মী, যিনি মণিপুরে সহিংসতা দমন করতে গিয়ে নিহত হলেন।

বিএসএফের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, গতকাল সোমবার ভোর চারটার দিকে সন্দেহভাজন কুকি বিচ্ছিন্নতাবাদীরা সেরোর ওই বিদ্যালয়ে বিএসএফ কর্মীদের ওপর গুলি চালান। এ সময় রঞ্জিত যাদব আহত হন। পরে তাঁকে কাকচিংয়ের জিতান হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন।

এদিকে সেরোয় গুলি চালানোর অপর একটি ঘটনায় আধা সামরিক বাহিনী আসাম রাইফেলসের দুই সদস্য আহত হয়েছেন। এমন সময় এসব ঘটনা ঘটল, যখন আসাম রাইফেলস, বিএসএফ ও মণিপুর পুলিশ সুগনু-সেরো এলাকায় যৌথ অভিযান (এরিয়া ডমিনেশন এক্সারসাইজ) পরিচালনা করছে।

ভারতের সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নিরাপত্তা বাহিনী ও বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মধ্যে সোমবার সারা রাত গোলাগুলি হয়। মঙ্গলবার বিকেল থেকে সেখানে তল্লাশি অভিযান চলছে।

এর আগে রোববার সেরো গ্রামে অন্তত ১০০ বাড়িতে সন্দেহভাজন বিচ্ছিন্নতাবাদীরা আগুন দেন। এরপর সেখানে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযান জোরদার করা হয়। জেলার অন্যান্য অংশেও বিচ্ছিন্নতাবাদী ও নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে বন্দুকযুদ্ধের খবর পাওয়া গেছে।

এদিকে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেছেন, বিক্ষুব্ধ জনতা সেরোতে কংগ্রেস বিধায়ক রঞ্জিত সিংয়ের বাড়িতেও ভাঙচুর করেছেন। তবে বিধায়ক ও তাঁর পরিবার অক্ষত রয়েছে।

মণিপুরে সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেই সম্প্রদায়কে তফসিলি উপজাতির মর্যাদা দিতে মণিপুর হাইকোর্ট সুপারিশের পর ৩ মে থেকে সহিংসতা চলছে। এতে এখন পর্যন্ত শতাধিক নিহত হয়েছেন। অন্তত চার হাজার অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। ৩৬ হাজারের বেশি মানুষ সরকারিভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে সামরিক ও আধা সামরিক বাহিনীর ৩০ হাজারের বেশি সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।