দুই নারীকে নিগ্রহের প্রতিবাদে কলকাতার সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউয়ে বিজেপির বিক্ষোভ। রোববার, ২৩ জুলাই
ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

ভারতের উত্তর–পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুরের ছায়া এবার পড়েছে পশ্চিমবঙ্গের মালদহে। দুই নারীকে ধর্ষণের পর বিবস্ত্র করে রাস্তায় ঘোরানোর মতো ঘটনা ঘটেছিল মণিপুর রাজ্যে। এবার পশ্চিমবঙ্গের মালদহ জেলার বামনগোলার পাকুয়াহাটে দুই নারীকে চুরির অপবাদ দিয়ে বিবস্ত্র করে বেদম মারপিট করা হলো জনতার সামনে। গত মঙ্গলবার এ ঘটনা ঘটে। তবে গতকাল শনিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওই ঘটনার ভিডিও চিত্র উঠে আসে। তারপর তা নিয়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়।

স্থানীয় পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ওই দুই নারী গ্রাম থেকে পাইকারি দরে লেবু কিনে এনে বিক্রি করছিলেন ওই হাটে। এক ক্রেতার সঙ্গে দরদাম নিয়ে বিবাদ বেধে গেলে হাটের মানুষজন জড়ো হন। এ সময় ওই ক্রেতা হাটের মধ্যে ‘চোর, চোর’ বলে চিৎকার শুরু করলে হাটের মানুষজন এসে নারীদের পেটাতে থাকেন। একপর্যায়ে ওই দুই নারীকে প্রকাশ্যে বিবস্ত্র করে মারধর শুরু করা হয়। হাটের মানুষজন ওই দুই নারীকে বিবস্ত্র অবস্থায় কাছের পুলিশ ফাঁড়িতে নিলে পুলিশ কাছের এক বাড়ি থেকে একটি শাড়ি এনে তা ছিঁড়ে দুভাগ করে তুলে দেয় ওই দুই নারীর হাতে। যদিও ওই নারীরা লেবু চুরির কথা অস্বীকার করেছেন।

এদিকে এই ঘটনার কথা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষোভ শুরু হয় রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে। মালদহের পুলিশ সুপারকে অবিলম্বে পদত্যাগ করার দাবি ওঠে। যদিও পুলিশ ইতিমধ্যে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সাতজন নারী-পুরুষকে গ্রেপ্তার করেছে। ওই দুই নারীকেও গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

এ ঘটনা শোনার পর পশ্চিমবঙ্গের নারী ও শিশুকল্যাণমন্ত্রী শশী পাঁজা বলেছেন, এ ঘটনার সঙ্গে কোনো রাজনীতির সম্পর্ক নেই। ঘটনার তদন্ত করছে পুলিশ। কিন্তু এ ঘটনাকে রাজনীতির চশমা দিয়ে দেখা ঠিক হবে না।

এ ঘটনার প্রতিবাদে আজ রোববার পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিধানসভা ভবনের কাছে বিক্ষোভ দেখান বিজেপির বিধায়কেরা। তাঁরা ওই দুই নারীর নির্যাতন করা দোষীদের অবিলম্বে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার দাবি জানান।

মালদহের পুলিশ সুপারের দপ্তরের সামনে গতকাল বেলা ২টা থেকে ২৪ ঘণ্টার অবস্থানে বসেন বিজেপি সংসদ সদস্য খগেন মুর্মু। তিনি পুলিশ সুপারের ইস্তফা দাবি করেছেন।