পূজামণ্ডপের কাছে সিপিএমের বইয়ের স্টল নিয়ে কলকাতায় তুলকালাম
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের কলকাতায় পূজামণ্ডপের কাছে কমিউনিস্ট পার্টি (মার্ক্সবাদী) তথা সিপিএমের বইয়ের স্টল নিয়ে তুলকালাম কাণ্ড ঘটেছে। গত রোববার পূজার মহাসপ্তমীতে বইয়ের স্টল ভেঙে দেওয়া হয়। প্রতিবাদে গতকাল সোমবার ডাকা সমাবেশেও চড়াও হয় পুলিশ। আটক করা হয় সিপিএম নেতাদের।
দক্ষিণ কলকাতার রাসবিহারী অ্যাভিনিউ ও প্রতাপাদিত্য সড়কের সংযোগ স্থলে বসানো সিপিএমের বইয়ের স্টল ঘিরে এ ঘটনা ঘটে। তৃণমূলের কর্মীরা পুলিশের সহযোগিতা নিয়ে স্টল ভেঙে দেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার নিন্দায় সরব হয়েছে সুশীল সমাজ।
জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরেই পূজার সময় কলকাতায় পূজামণ্ডপের কাছে বইয়ের স্টল বসিয়ে আসছে সিপিএম। এবারও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। তবে এবার তৃণমূলের নামধারী একটি গোষ্ঠী পুলিশের সহায়তা নিয়ে হামলা চালিয়ে ওই স্টল ভেঙে দেয়। পুলিশ বলছে, অনুমতি ছাড়াই স্টল খুলে বসেছিল সিপিএম।
ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল ওই স্টলের সামনে সমাবেশের ডাক দেয় সিপিএম। বিকেলে সেই সমাবেশও ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। সমাবেশে যোগ দেওয়া প্রখ্যাত আইনজীবী ও সিপিএম সংসদ সদস্য বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য, চলচ্চিত্র পরিচালক কমলেশ্বর ভট্টাচার্যসহ ৯ সিপিএম নেতা-কর্মীকে আটক করে পুলিশ।
পুলিশ সিপিএম নেতা-কর্মীদের আটক করে কলকাতার লালবাজার পুলিশ সদর দপ্তরে নিয়ে যায়। জানা গেছে, পরে গভীর রাতে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
পুলিশ বলছে, এই সমাবেশের কোনো অনুমতি ছিল না। তাই ঝামেলা এড়াতে প্রতিবাদ সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করে দেয় তারা।
এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন কলকাতার চলচ্চিত্র পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায় ও অভিনেতা অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়। সৃজিত বলেছেন, ‘বইকেও ওরা এখন ভয় পায়। এই ঘটনার নিন্দা জানাই।’
এ ছাড়া ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে কলকাতার মানবাধিকার সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন ফর প্রোটেকশন অব ডেমোক্রেটিক রাইটস (এপিডিআর)। তারা বলেছে, ‘বইয়ের স্টলে হামলা এক অশনিসংকেত। আমরা এর প্রতিবাদ জানাই। পুলিশ যেভাবে প্রতিবাদ সমাবেশ ভেঙে দিয়ে নেতাদের আটক করেছে, তার নিন্দা জানাই।
তবে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সম্পাদক ও মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেছেন, এ ধরনের স্টল করলে পূজা কমিটির অসুবিধা হতে পারে। পূজার ভিড়ে এ ধরনের স্টল করতে যাবে কেন? গন্ডগোল রুখতে পুলিশ যথার্থ ব্যবস্থা নিয়েছে।
এদিকে গতকাল ছিল দুর্গাপূজার মহা অষ্টমীর দিন। এদিন কলকাতার বিভিন্ন এলাকায় সামান্য বৃষ্টিপাত হলেও তা প্রতিমা ও মণ্ডপ দেখার স্রোতকে আটকাতে পারেনি। মানুষ বৃষ্টি উপেক্ষা করে সপ্তমীর ন্যায় অষ্টমীর দিনও মণ্ডপে ভিড় জমায়।